অর্থনীতি

বাড়ছে গাড়ি রেজিস্ট্রেশন ফি ও করমুক্ত আয়সীমা

আসন্ন ২০২০-২১ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তিগত গাড়ি রেজিস্ট্রেশনে অগ্রিম আয়কর বাড়ছে। ফলে প্রাইভেট গাড়ি রেজিস্ট্রেশন ফি বাড়ছে।

অন্যদিকে, বাজেটে বৃদ্ধি পেতে পারে ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়ের সীমা। করমুক্ত আয়ের সীমা ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করা হতে পারে। একই সঙ্গে কর হারও কমে যাচ্ছে।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) ঊর্ধ্বতন একটি সূত্র রাইজিংবিডিকে এসব তথ্য জানিয়েছেন।

নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআর কর্মকর্তা বলেন, আগামী প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যক্তিগত গাড়ি রেজিস্ট্রেশনে অগ্রিম আয়কর বাড়ানো হচ্ছে। সি সি ভেদে ১০ হাজার থেকে ৭৫ হাজার টাকা পর্যন্ত বাড়ানো হতে পারে। এতে গাড়ি রেজিস্ট্রেশনের খরচ বাড়বে। অন্যদিকে বাজেটে নিন্ম মধ্যবিত্তদের ছাড় দিতে বাড়ানো হচ্ছে ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়সীমা। এটা অনেক দিনের দাবি ছিল বিভিন্ন সংগঠনের। তবে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসবে জাতীয় সংসদ থেকে।

ব্যক্তিগত গাড়ি রেজিস্ট্রেশন ফি বৃদ্ধির বিষয়ে এনবিআর সূত্রে জানা যায়, বর্তমানে প্রাইভেটকার মালিকদের সিসি ভেদে গাড়ি রেজিস্ট্রেশন বা রি-রেজিস্ট্রেশনের সময় অগ্রিম আয়কর দিতে হয়। যেমন- বর্তমানে ১৫০০ সিসি কম ক্ষমতাসম্পন্ন গাড়ির অগ্রিম কর ১৫ হাজার টাকা ধার্য আছে। এছাড়া ১৫০০ থেকে ২০০০ সিসি পর্যন্ত গাড়ির ক্ষেত্রে ৩০ হাজার টাকা, ২০০০ থেকে ২৫০০ সিসি পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকা, ২৫০০ থেকে ৩০০০ সিসি পর্যন্ত ৭৫ হাজার টাকা, ৩০০০ থেকে ৩৫০০ সিসি পর্যন্ত ১ লাখ টাকা, ৩৫০০ সিসি বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন গাড়ির ক্ষেত্রে ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা এবং মাইক্রোবাসে ২০ হাজার টাকা কর দিতে হয়।

সেখানে প্রস্তাবিত বাজেটে সব ধরণের গাড়িরই অগ্রিম কর বাড়ানো হচ্ছে। এক্ষেত্রে ১৫০০ সিসির কম ক্ষমতাসম্পন্ন গাড়ির ২৫ হাজার, ১৫০০ থেকে ২০০০ সিসি পর্যন্ত ৫০ হাজার টাকা, ২০০০ থেকে ২৫০০ সিসি পর্যন্ত ৭৫ হাজার টাকা, ২৫০০ থেকে ৩০০০ সিসি পর্যন্ত ১ লাখ ২৫ হাজার টাকা, ৩০০০ থেকে ৩৫০০ সিসি পর্যন্ত ১ লাখ ৫০ হাজার টাকা, ৩৫০০ সিসি বেশি ক্ষমতাসম্পন্ন গাড়ির ক্ষেত্রে ২ লাখ টাকা এবং মাইক্রোবাসে ৩০ হাজার টাকা অগ্রিম আয়কর ধার্য করা হচ্ছে।

করমুক্ত আয়সীমা বৃদ্ধির বিষয়ে জানা গেছে, বর্তমানে ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়ের সীমা আড়াই লাখ টাকা। এর বেশি বার্ষিক আয় থাকলে এলাকাভেদে ন্যূনতম ৩-৫ হাজার টাকা আয়কর দেওয়ার বিধান প্রযোজ্য রয়েছে। মহিলা ও ৬৫ বছরের বেশি বয়সীদের ৩ লাখ টাকা, প্রতিবন্ধী করদাতারা ৪ লাখ টাকা ও গেজেটভুক্ত যুদ্ধাহত মুক্তিযোদ্ধা করদাতারা ৪ লাখ ২৫ হাজার টাকা পর্যন্ত আয় করমুক্ত। অর্থ্যাৎ কর দিতে হয় না।

বিগত পাঁচ বছর ধরে ব্যক্তিশ্রেণীর করমুক্ত আয়ের সীমা আড়াই লাখেই সীমাবদ্ধ রয়েছে। বিভিন্ন সময়ে ব্যবসায়ী ও করদাতারা দাবি করে আসলেও সরকার করমুক্ত আয়ের সীমা বাড়ায়নি।  অর্থনীতি সমিতির বিকল্প বাজেট প্রস্তাবেও  ড. আবুল বারকাতও নিম্ন ও মধ্যম আয়ের মানুষের জন্য কর ছাড় দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন।

এক্ষেত্রে আগামী বাজেটে করমুক্ত আয়ের সীমা ৫০ হাজার টাকা বাড়িয়ে ৩ লাখ টাকা করা হচ্ছে। একই সঙ্গে মহিলা, প্রতিবন্ধী ও গেজেটভুক্ত মুক্তিযোদ্ধাদেরও করমুক্ত সীমা বাড়ছে আনুপাতিক হারে। অন্যদিকে কমতে পারে কর হারও। যা স্তরভেদে কমানোর প্রস্তাব রাখা হয়েছে। এতে নিন্ম মধ্যবিত্ত ও চাকরিজীবীরা উপকৃত হওয়ার পাশাপাশি বিত্তবানরা কর ছাড় পাচ্ছে বলে বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে। ঢাকা/বকুল