অর্থনীতি

ক্রেস্টের বিনিয়োগকারীদের নিট পাওনার তথ্য চেয়েছে ডিএসই

ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারীদের আত্মসাৎ হওয়া নিট পাওনা অর্থের তথ্য জানাতে অনুরোধ জানিয়েছেন ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জের (ডিএসই) ব্যবস্থাপনা পরিচালক কাজী সানাউল হক।

তিনি বলেন, ‘বিনিয়োগকারীরা এ তথ্য যত দ্রুত জানাবেন, তত দ্রুত হাউজটির দায়-দেনা জানা যাবে। বিনিয়োগকারীরা মেইলে বা সরাসরি উপস্থিত হয়ে ডিএসইকে নিট পাওনার তথ্য জানাতে পারবেন।’

রোববার (২৮ জুন) বিকেল ৫টায় ডিজিটাল প্ল‌্যাটফর্মে ‘ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ’ বিষয়ে ডিএসইর সংবাদ সম্মেলনে তিনি এসব কথা বলেন।

পাওনা টাকা নিয়ে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের বিনিয়োগকারীদের হতাশ না হওয়ার জন্য অনুরোধ করেছেন কাজী সানাউল হক। তিনি বলেছেন, ‘ট্রেক ও সম্পদ বিক্রি করে পাওনা সমন্বয় করা হবে। এ লক্ষ্যে দ্রুত কাজ করা হচ্ছে।’

তিনি বলেন, ‘ক্রেস্টের বিনিয়োগকারীরা যখন চেক ডিজঅনার পাচ্ছিল, তখন আমাদেরকে জানালে দ্রুত ব্যবস্থা নিতে পারতাম। তাই ভবিষ্যতে যেকোনো হাউজের বিনিয়োগকারীদেরকে এ জাতীয় সমস্যার ক্ষেত্রে দ্রুত ডিএসইকে জানানোর অনুরোধ করছি।’

কাজী সানাউল হক বলেন, ‘ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের প্রায় ২১ হাজার বিনিয়োগকারীর ৮২ কোটি টাকার শেয়ার ও ইউনিট ফ্রিজ করা হয়েছে। পরবর্তীতে বিনিয়োগকারীরা লিঙ্ক অ্যাকাউন্টের মাধ্যমে অন্য যেকোনো ব্রোকারেজ হাউজে শেয়ার স্থানান্তর করে লেনদেন করতে পারবেন। তবে বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ও ইউনিট ফ্রিজ করা হলেও দেনা-পাওনার বিষয়টি এখনো পরিষ্কার না। ৮২ কোটি টাকার বাইরে ওই হাউজে বিনিয়োগকারীদের কত টাকার শেয়ার বিক্রি করা হয়েছে বা নগদ কত টাকা পাওনা রয়েছে, তা পরিষ্কার না। তবে ফ্রিজ করা শেয়ারের বাইরে যদি পাওনা থাকে, তাহলে ট্রেক বিক্রি করে তা মেটানো হবে।’

ডিএসইর এমডি আরো বলেন, ‘ক্রেস্ট সিকিউরিটিজ পুরনো প্রতিষ্ঠান। এ হাউজটির আর্থিক হিসাব খারাপ ছিল না। এমনকি মে মাসেও সমন্বিত আর্থিক হিসাবে ঘাটতি ছিল না। তারপরও অনাকাঙ্ক্ষিতভাবে একটি দুর্ঘটনা ঘটে গেছে, যা সমাধানে ডিএসই দ্রুত ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। হাউজটির মালিকরা যেন বিদেশে যেতে না পারে, সে লক্ষ‌্যে পল্টন থানায় অভিযোগ করা হয়েছে। তাদের ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করার জন্য পদক্ষেপ নিতে বাংলাদেশ ব্যাংকে অনুরোধ করা হয়েছে। এখন তাদের ১০টির বেশি ব্যাংক অ্যাকাউন্ট ফ্রিজ করা হয়েছে।’

এক প্রশ্নের জবাবে ডিএসইর এমডি বলেন, ‘আমার কাছে একটি মেইল এসেছে। তবে সেটা ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের কি না, তা নিশ্চিত না। মেইলে ডিএসইর কাছে আর্থিক এবং আইনগত সহযোগিতা চেয়েছে ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিকপক্ষ। একই সঙ্গে পাওনাদাররা বিভিন্ন হুমকি দিচ্ছে বলে জানিয়েছে। তবে এই মুহূর্তে ডিএসইর কিছু করার নেই। তাদেরকে পুলিশের কাছে আত্মসমর্পণ করতে হবে।’

প্রসঙ্গত, ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের ব্যবস্থাপনা পরিচালক শহীদ উল্লাহ বিনিয়োগকারীদের শেয়ার ও টাকা আত্মসাৎ করে গত ২৩ জুন থেকে লাপাত্তা রয়েছেন। তাকে খুঁজে না পেয়ে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছেন ওই হাউজের বিনিয়োগকারীরা। এতে পুরো শেয়ারবাজারে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে আতঙ্ক তৈরি হয়েছে। রোববার পর্যন্ত ক্রেস্ট সিকিউরিটিজের মালিকপক্ষের কারো সন্ধান পাওয়া যায়নি। হাউজটির চারটি শাখা অফিসে তালা ঝুলছে। ঢাকা/এনটি/রফিক