অর্থনীতি

যেভাবে পুরস্কার পাবেন ইএফডি ভ্যাটদাতারা

পণ্য ক্রয় করে ইলেকট্রনিক ফিসক্যাল ডিভাইস (ইএফডি)  মেশিনের চালান যেসব ক্রেতা গ্রহণ করবেন, তাদের প্রতি মাসে পুরস্কৃত করা হবে। ভ্যাটদাতাদের ইএফডি রসিদ নেওয়ায় উৎসাহিত করতেই এমন উদ্যোগ।

জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) প্রতি মাসে লটারির মাধ্যমে সারা দেশ থেকে ১০১ জন ভ্যাটদাতাকে পুরস্কৃত করবেন। লটারিতে একজন ভ্যাটদাতা সর্বোচ্চ এক লাখ টাকা পুরস্কার পাবেন।

কি প্রক্রিয়া ভ্যাটদাতারা পুরস্কার পাচ্ছেন সে বিষয়ে নীতিমালা চূড়ান্ত করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়। এনবিআর চেয়ারম্যান আবু হেনা মো. রহমাতুল মুনিম সই করা আদেশ গত ৬ ডিসেম্বর ইস্যু করা হয়।

‘ইএফডিএমএস হতে ইস্যুকৃত চালানের ভিত্তিতে লাটারির মাধ্যমে আর্থিক পুরস্কার প্রদান নীতিমালা, ২০২০’ শীর্ষক নীতিমালায় ১০টি ধাপ রয়েছে।

নীতিমালায় বলা হয়েছে, ইএফডি থেকে ইস্যুকৃত চালানকে লাটারির কুপন হিসাবে বিবেচনা করা হবে। যে মাসে লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হবে তার আগের মাসের প্রথম দিবস হতে শেষ দিবস পর্যন্ত ইস্যুকৃত ভ্যাট চালানসমূহ লটারির নির্বাচিত করা হবে। এনবিআরের ভ্যাট বিভাগ প্রতি মাসে এই লটারির আয়োজন করবে।

নীতিমালায় আরও বলা হয়েছে, পণ্য বা সেবা কেনার সময় যে রসিদ দেওয়া হয়, সেটিই লটারির কুপন হিসেবে বিবেচিত হবে।  প্রতি ইংরেজি মাসের ৫ তারিখে লটারির ড্র অনুষ্ঠিত হবে। ওইদিন সরকারি ছুটি থাকলে পরবর্তী কার্যদিবসে ড্র হবে।  লটারির ড্র অনুষ্ঠানের তিন কার্যদিবসের মধ্যে বিজয়ীদের কুপন নম্বর প্রচার মাধ্যমে প্রকাশ করা হবে। তারপর বিজয়ীদের ওই মাসের শেষ কার্যদিবসের মধ্যে পুরস্কারের জন্য আবেদন করতে হবে। এরপর কুপন নম্বর মিলিয়ে দেখাসহ প্রয়োজনীয় তথ্য যাচাই–বাছাই করা হবে। আবেদনপত্রে আবেদনকারীর নাম, সই, ঠিকানা, মোবাইল নম্বর, জাতীয় পরিচয়পত্রের নম্বর (প্রযোজ্য ক্ষেত্রে), চালান নম্বর, ইস্যুর তারিখ থাকতে হবে।

এনবিআরের মূসক বাস্তবায়ন ও আইট বিষয়ক সদস্যকে আহ্বায়ক করে ৬ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি লটারির ড্র অনুষ্ঠান পর‌্যবেক্ষণ ও সার্বিক ব্যবস্থাপনার দায়িত্বে থাকবেন।  কমিটির অন্যান্য সদস্যরা হলেন- এনবিআরের সিস্টেম ম্যানেজার, আইআরডি, অর্থবিভাগ ও কমিশনারেট থেকে মনোনীত একজন প্রতিনিধি এবং মূসকের তথ্য প্রযুক্তি ও প্রকল্প ব্যবস্থাপনা বিভাগের দ্বিতীয় সচিব।

এনবিআর থেকে প্রথম তিনটি পুরস্কার দেওয়া হবে।  চতুর্থ পুরস্কার দিবে ক্রেতা যে কমিশনারেট বা বিভাগ বা সার্কেলে আবেদন করবেন সে দপ্তর। পুরস্কারের টাকা চেকের মাধ্যমে দেওয়া হবে।

পণ্য কেনার সময় ভ্যাটের ইএফডি মেশিনের চালান নম্বর দিয়ে প্রতি মাসে লটারি অনুষ্ঠিত হবে। প্রথম পুরস্কার বিজয়ী পাবেন ১ লাখ টাকা।  দ্বিতীয় পুরস্কার ৫০ হাজার, তৃতীয় পুরস্কার ২৫ হাজার টাকা।  ৯৪ জন পাবেন ১০ হাজার টাকা করে।  প্রতি মাসে লটারি বিজয়ীদের জন্য মোট ১২ লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ হবে। এনবিআরের কেন্দ্রীয় অনলাইন সিস্টেমের মাধ্যমে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লটারির আয়োজন করা হবে।  প্রতি মাসে লটারি বিজয়ীদের জন্য মোট ১২ লাখ ১৫ হাজার টাকা খরচ হবে।

ইএফডি মেশিন বা ভ্যাটের মেশিন আছে, এমন দোকান থেকে পণ্য বা সেবা কিনলেই শুধু লটারির জন্য বিবেচনা করা হবে।  পাকা রসিদ হতে হবে, কাঁচা বা দুই নম্বরি রসিদ হলে হবে না। ভ্যাট মেশিন স্বয়ংক্রিয়ভাবে যে রসিদ দেবে, সেই রসিদের নম্বর ধরেই লটারি হবে।

২০১৯ সালের জুন মাসে নতুন ভ্যাট আইন চালু হয়। এ আইনের আওতায় এনবিআর স্বয়ংক্রিয় ও অনলাইনভিত্তিক কর ব্যবস্থা প্রবর্তনের নানা উদ্যোগ গ্রহণ করেছে।  বর্তমানে দেশের সব সিটি করপোরেশন ও জেলা শহরে অবস্থিত বিভিন্ন পণ্য ও সেবা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠানে ইএফডি মেশিন বসানো বাধ্যতামূলক। মূলত হোটেল, রেস্তোরাঁ, ডিপার্টমেন্টাল স্টোরসহ সেবা খাতের লেনদেনের তথ্য সংরক্ষণের মাধ্যমে ভ্যাটের হালনাগাদ তথ্য পেতে ইএফডি মেশিন বসানো হচ্ছে।