অর্থনীতি

স্টক এক্সচেঞ্জকে অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধি তদন্তের ক্ষমতা দিলো বিএসইসি

দেশের উভয় স্টক এক্সচেঞ্জকে তালিকাভুক্ত কোম্পানির শেয়ারের অস্বাভাবিক উত্থান-পতন নিজ উদ‌্যোগে তদন্তের জন্য দিকনির্দেশনা দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার জন্য চারটি বিষয়ের ওপর গুরুত্ব আরোপ করা হয়েছে।

মঙ্গলবার (১২ জানুয়ারি) বিএসইসি এ সংক্রান্ত একটি নির্দেশনা জারি করে। সংস্থাটির উপ-পরিচালক মোহাম্মদ শামসুর রহমান স্বাক্ষরিত এ নির্দেশনা উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (এমডি) ও প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তা (সিআরও) বরাবর পাঠানো হয়েছে।

জানা গেছে, এতদিন স্টক এক্সচেঞ্জেকে কোনো কোম্পানির শেয়ারের অস্বাভাবিক দর বৃদ্ধির কারণ তদন্তের জন্য বিএসইসির অনুমতি নিতে হতো। স্টক এক্সঞ্জের দীর্ঘদিনের এ প্রতিবন্ধকতা দূর করতেই এ উদোগ নিয়েছে কমিশন। ফলে ভবিষ্যতে তদন্তের ক্ষেত্রে বিএসইসির অনুমতি আর নেওয়ার প্রয়োজন হচ্ছে না উভয় স্টক এক্সচেঞ্জের।

কমিশনের মতে, এ নির্দেশনা জারি করার ফলে স্টক এক্সচেঞ্জের সক্ষমতা বাড়বে। পাশাপাশি কোম্পানিগুলোও বুঝতে পারবে, তাদের শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক অবস্থায় যাচ্ছে কি না। পাশাপাশি শেয়ারের দাম অস্বাভাবিক অবস্থায় চলে গেলে করণীয় নির্ধারণে স্টক এক্সচেঞ্জ নিজ উদ‌্যোগে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে। এতে কোম্পোনিগুলো আরও সচেতন হবে। এর ইতিবাচক প্রভাব পড়বে শেয়ারবাজারের ওপর।

বিএসইসির জারি করা নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়, বিগত ৩০ কার্যদিবসের মধ্যে যদি কোনো কোম্পানির শেয়ারের দাম ৫০ শতাংশ বাড়ে বা কমে, তার কারণ খতিয়ে দেখবে উভয় স্টক এক্সচেঞ্জ। এক্ষেত্রে বিএসইসির অনুমোদন লাগবে না। যখনই কোনো কোম্পানির ক্ষেত্রে এমনটি হবে, তখনই তদন্ত করবে দুই স্টক এক্সচেঞ্জ।

এছাড়া, কোনো কোম্পানির গড় লেনদেনের পরিমাণ আগের ৬ মাসের গড় লেনদেনের চেয়ে ৫ গুণের বেশি বাড়লে তদন্তের আওতায় আসবে। একই সঙ্গে কোনো কোম্পানির বার্ষিক বা প্রান্তিক শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) আগের বছরের একই সময়ের চেয়ে ৫০ শতাংশের বেশি উত্থান-পতন হলেও তা খতিয়ে দেখা হবে। পাশাপাশি মূল্য সংবেদনশীল তথ্য (পিএসআই) প্রকাশের আগের ১০ কার্যদিবসে কোনো কোম্পানির দাম ও লেনদেন ৩০ শতাংশের কম-বেশি হলে স্টক এক্সচেঞ্জ সে বিষয়েও তদন্ত করবে।

এছাড়া, স্টক এক্সচেঞ্জ তদন্ত কার্যক্রম ৪৫ কার্যদিবসের মধ্যে সম্পন্ন করে এ সংক্রান্ত প্রতিবেদন বিএসইসিতে দাখিল করতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

এ বিষয়ে বিএসইসির কমিশনার ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এই নির্দেশনা তদন্তের স্বচ্ছতা, তদন্তের প্রস্তুতি, সব প্রতিষ্ঠানের জন্য সমান আচরণ, প্রতিষ্ঠানসমূহের সচেতনতা এবং সর্বাপরি বিনিয়োগকারীদের আস্থা বাড়াবে। পাশাপাশি এক্স‌চেঞ্জগুলোকে আরও স্বক্রিয়  করতে সহায়ক হবে। নির্দেশনাটি সুনির্দিষ্ট ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয়তা সৃ‌ষ্টি হলে প্রযোজ্য হবে। নির্দেশনাটি আগামীতে প্রযোজ্য হবে এবং ইতিপূর্বের জন্য প্রযোজ্য নয়।’