অর্থনীতি

চালের দাম বাড়তিই, সবজি ও নিত্যপণ্যেও উত্তাপ

নিত্যপণ্যের দামে আগুন যেন লেগেই আছে। কিছু পণ্যের দামে স্থিতি থাকলেও অনেক পণ্যের দামই উর্ধ্বমুখী। বেড়েই চলেছে চালের দাম। মাছ-মুরগীর দামও বেড়েছে। এ ছাড়া পেঁয়াজসহ প্রায় সব প্রকারের সবজির দামই বাড়তি।

গত সপ্তাহের তুলনায় রাজধানীর বাজারে বেড়েছে চাল, মাছ, মুরগী, পেঁয়াজসহ সব প্রকারের সবজির দাম। সয়াবিন তেলের দামও বেড়েছে।

শুক্রবার (৫ মার্চ) সকালে বাজারে গেলে দেখা যায়, প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজ ৫ টাকা বেড়ে ৩৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। টমেটো, লাউ, সিম এবং কপির দাম বেড়েছে ৫-১০ টাকা পর্যন্ত।

নিউ মা‌র্কে‌টের সবজি বি‌ক্রেতা শহীদ কাজী জানালেন, শীত শেষ, তাই বাজারে সবজির সরবরাহ কম।  তাই দাম কিছুটা বেড়েছে।

রাজধানীর হাতিরপুল, নিউমার্কেট ঘুরে দেখা গেছে, গত সপ্তাহে ৩০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হওয়া দেশি পেঁয়াজ আজ বিক্রি হচ্ছে ৩৫ টাকা করে। য‌দিও চায়না বড় পেঁয়াজের কেজি গত সপ্তাহের মতো আজও ২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। রসুনের কেজি ২০ টাকা কমে ১২০ টাকা, ফুলকপি ও বাঁধাকপি ৫ টাকা বে‌ড়ে ২৫ টাকা, নতুন আলু ১৬ টাকা, লাউ প্রতি পিসে ১০ টাকা বেড়ে ৫০টাকা, বেগুন (লম্বা) ৪০ টাকা আর গোল বেগুন ৫০ টাকা, গাজর ৩০ টাকা এবং সিম প্রতি কেজি ৩০-৪০ টাকা দামে বিক্রি হচ্ছে।

সাদা চি‌নি কেজিতে ৩ টাকা বেড়ে ৬৮ টাকা, লাল চিনি গত সপ্তাহের মতো ৭০ টাকা, মশুরি ডাল ১০০ টাকা। সব ধরনের মশলার দাম আ‌গের মতই র‌য়ে‌ছে। আদা আগের সপ্তা‌হের চে‌য়ে ২০ টাকা বেড়ে ১৪০টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

কাঁচা মরিচ কেজিতে ২০ টাকা কমে ৬০ টাকা, গত সপ্তাহে ছিল ৮০ টাকা। লেবুর দাম কমেছে। মধ্যম সাইজের লেবুর হালি বিক্রি হচ্ছে ৪০ টাকায়।

৫ থেকে ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে প্রায় সব কোম্পানির সয়াবিন তেলের দাম। গত সপ্তা‌হে কোম্পা‌নি ভে‌দে বি‌ক্রি হ‌য়ে‌ছে ১ লিটার ১২০-১৩০ টাকা, ২ লিটার ২৪০-২৫০ টাকা এবং ৫ লিটার ৬১৫-৬২০ টাকা। আজ সয়া‌বিন তেল প্রতি লিটার ১৩৫-১৪০, ২ লিটার ২৬০-২৭০ আর ৫ লিটার ৬২০-৬৪৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

চালের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ২ টাকা থেকে ৫ টাকা পর্যন্ত। নাজিরশাইল কেজি ৬৮-৭০, পাইজাম ৪৮-৫০, মিনিকেট ৬২-৬৪, আটাশ ৫৩-৫৫ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।

গত সপ্তাহের তুলনায় ব্রয়লার মুরগির দাম কমেছে ১৫ টাকা। আজকের বাজারে অন্যান্য সব মুরগির দাম বেড়ে‌ছে কে‌জি‌তে ২০-৫০ টাকা পর্যন্ত। ব্রয়লার মুরগি ১৫৫ টাকা, কক জাতের মুরগি ৩২০ টাকা থেকে বেড়ে ৩৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। দেশি জাতের মুরগি (১ কেজি) হালি বিক্রি হচ্ছে ১৮০০-২০০০ টাকা।  

মুরগীর দাম বেড়ে যাওয়া প্রসঙ্গে কিশোরগঞ্জ ট্রেডার্সের মালিক মুরগি ব্যবসায়ী মো. শাহজান জানান, চারিদিকে বিভিন্ন অনুষ্ঠান আর বিয়ে হচ্ছে। চাহিদা মতো মুরগি সাপ্লাই দিতে পারে না বলে দাম বেড়ে গেছে।

এদিকে ডিমের ডজন ৫ টাকা কমে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। আর গরুর মাংস গত সপ্তা‌হের ম‌তো ৫৮০-৬০০ টাকা আর খাশির মাংস ৯০০ টাকা কেজি বিক্রি হচ্ছে।

মাছের দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে।  নিউমার্কেটের মাছ ব্যবসায়ী তারেক মিয়া জানান- কিশোরগঞ্জ, সুনামগঞ্জ, ভৈরব আর সাতক্ষীরা এলাকা থেকে সাধারণত মাছ আসে ঢাকার বাজারে।  ইদানীং চাহিদার তুলনায় মাছের সরবরাহ কম হওয়ায় দাম গত সপ্তাহের তুলনায় বেড়েছে। আজ দেশি বড় রুইমাছ কেজি ৩৫০-৪০০ টাকা, ছোট রুই মাছ ২৫০-৩০০ টাকা, কাতল ৩৫০-৪০০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। শোল মাছের কেজি ৫০০ টাকা।  বড় গলদা চিংড়ি কেজি ১২০০টাকা আর ছোট গলদা বিক্রি হচ্ছে ৬০০ টাকা কেজিতে।

১ মার্চ থেকে ৩০ এপ্রিল পর্যন্ত সরকারিভাবে ইলিশ ধরা নিষিদ্ধ হবার কারণে ইলিশের কেজি বিক্রি হচ্ছে ১২০০-১৩০০ টাকায়।

এ সপ্তাহে সব ধরনের ডাল, চিনি, মশলাসহ অন্যান্য জিনিসের দাম আগের মতই রয়েছে বলে জানালেন নিউ মার্কেটের পাইকারি ব্যবসায়ী আব্দুর রহিম।