অর্থনীতি

লকডাউনে ফুল ব্যবসায়ীদের মাথায় হাত

করোনা পরিস্থিতিতে এমনিতেই ব্যাপক ক্ষতির মুখে পড়েছে দেশের ফুলের বাজার। ভাইরাসটি নিয়ন্ত্রণে নতুন করে দেওয়া লকডাউনে বন্ধ হয়ে গেছে শাহবাগের ফুলের সব দোকান।

দোকানিরা বলছেন, আমাদের এটি কাঁচামাল। দুই একদিন বন্ধ থাকলে নষ্ট হয়ে যায়। একদিকে পুলিশ দোকান খুলতে দিচ্ছে না। অন্যদিকে ক্রেতাও আগের মতো মিলছে না। যার কারণে অসংখ্য ফুল ফেলে দিতে হচ্ছে প্রতিদিন।

ফুল বিক্রেতা আরিফ দোকান বন্ধ রেখে বাইরে বসে আছেন। কেউ একজন আসলে হয়তো খুচরা বা পাইকারি বিক্রি করতে পারবে এই আশায়।

আলাপকালে আরিফ বললেন, আমরা গরীব মানুষ। ফুল দোকানে কর্মচারী হিসেবে কাজ করি। দৈনিক ৫০০ থেকে ৬০০ টাকা আয় করি। মূল মালিকের যদি বিক্রিই না হয় তাহলে আমাদেরকে দিবেন কিভাবে। অথচ আমাদের এই আয়ের উপর নির্ভর করছে সংসার। আমার মা, স্ত্রী এবং এক সন্তান নিয়ে আমাকে চলতে হয়। এভাবে চলতে থাকলে কিভাবে সংসার চালাবো বুঝতে পারছি না।

আর এক ফুল বিক্রেতা জোনায়েদ বললেন, পুলিশ দোকান খুলতে দিচ্ছে না। লুকোচুরি করে কিছু বিক্রি করছি। তাতে নিজের পেট চালাতে কষ্ট হচ্ছে। লাভ তোলা তো দূরের কথা। অনেক ফুল নষ্ট হয়ে যাচ্ছে। আমাদের এই কষ্টের কথা কাকে বলবো।

সজিব নামের এক ফুল ব্যবসায়ী বলেন, ফুল আনতে কোন সমস্যা নেই। কিন্তু আনার পরে এখানে যে স্টকে রেখে বিক্রি করব সে সুযোগ নাই। যার কারণে রিক্স নিতে পারছিনা। পুরনো যে ফুলগুলো আছে সেগুলোই বিক্রি করতেছি। তাও অনেক লুকোচুরি করে। বড় কোন কাস্টমার আসলে সেগুলো বিক্রি করতে হচ্ছে। অনেক ফুল পচে যাচ্ছে সেগুলো ফেলে দিতে হচ্ছে। এভাবে চলতে থাকলে এ ব্যবসায় টিকে থাকা যাবে না।

আরেক ব্যবসায়ী রিয়াদ হোসেন বলেন, ফুল পচনশীল জিনিস। বেশিদিন টিকিয়ে রাখা যায় না। দোকানের সামনে অনেকগুলো পচা ফুল পরে আছে। রমজানের আগে একটা ভালো সিজন যায় বিক্রির। কারণ রমজানে বিয়ে-শাদী কম হয়। তার আগেই ফুল একটু বেশি বিক্রি হয়। কিন্তু এ সময়টাতেই সরকার লকডাউন দিয়ে দিয়েছে। এই অবস্থায় দোকান কর্মচারী ভাড়া দিয়ে লভ্যাংশ তোলা তো দূরের কথা। জীবন চলাই দায় হয়ে পড়েছে।