অর্থনীতি

বছর শেষে দেশের প্রবৃদ্ধি হবে সাড়ে ৫ থেকে ৬ শতাংশ: এডিবি

করোনার সংক্রমণের মধ্যেও ২০২০-২১ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি (মোট দেশজ উৎপাদন) প্রবৃদ্ধির হার  সাড়ে ৫ থেকে ৬ শতাংশ হতে পারে বলে জানিয়েছে এশিয়া উন্নয়ন ব্যাংক (এডিবি)। বুধবার (২৮ এপ্রিল) এডিবি’র ‘এশিয়ান ডেভলপমেন্ট আউটলুক’ শীর্ষক প্রতিবেদনে এই পূর্বাভাস দিয়েছে এশিয়ান। 

তবে সব কিছুই নির্ভর করছে কোভিড-১৯ এর দ্বিতীয় ঢেউয়ের ওপর বলে জানিয়েছেন এডিবি। 

এতে আরও বলা হয়েছে, এ সময় বংলাদেশের জনগণের জন্য ভ্যাকসিন সংগ্রহে ঋণ ও অনুদান মিলে ৯৪ কোটি ডলার দেওয়ার কথাও বলা হয়েছে। সেই সঙ্গে কোভিড-১৯ পরিস্থিতি সামলাতে বিভিন্ন সহায়তার বিষয়ে তুলে ধরা হয়েছে। 

প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মহামারি সামাল দিতে দক্ষিণ এশিয়ার অনেক দেশের চেয়ে এগিয়ে থাকা বাংলাদেশে রপ্তানির গতি বাড়ায় প্রবৃদ্ধি বাড়বে। একইসঙ্গে সরকারের দেওয়া প্রণোদনার সুফল মেলার পাশাপাশি বিশ্ব বাণিজ্য এবং বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতির উন্নতি হওয়ায় জিডিপি প্রবৃদ্ধি অর্জনে সহায়ক হবে। আগামী অর্থবছরে  আরও বেড়ে প্রবৃদ্ধি হতে পারে ৭ দশমিক ২ শতাংশ।

আরও বলা হয়েছে, রেমিটেন্সের শক্তিশালী প্রবাহ অব্যাহত থাকায় ব্যক্তিখাতে ভোগব্যয় বাড়বে। বিশ্ব অর্থনৈতিক পরিস্থিতি এবং ব্যবসা-বাণিজ্যের পরিবেশের উন্নতি হলে বেসরকারি খাতের বিনিয়োগেও গতি আসবে। বাংলাদেশের পাশাপাশি দক্ষিণ এশিয়ার অন্যান্য দেশেও ধীরে ধীরে জিডিপি  প্রবৃদ্ধির শক্তিশালী ধারায় ফিরবে। অঞ্চল হিসেবে এ বছর দক্ষিণ এশিয়ার পুনরুদ্ধার প্রক্রিয়া সবচেয়ে দ্রুত হবে।  ২০২০ সালে যেখানে এ অঞ্চলের অর্থনীতি ৬ শতাংশ সংকুচিত হয়ে গিয়েছিল। এবার তা ৯ দশমিক ৫ শতাংশ হারে বাড়বে। এ অঞ্চলের সবচেয়ে বড় দেশ ভারত যদিও মহামারিতে নাজুক অবস্থার মধ্য দিয়ে যাচ্ছে, তবু এ বছর সেখানে ১১ শতাংশ জিডিপি প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনা রয়েছে।  প্রতিবেদনে চলতি অর্থবছর মূল্যস্ফীতি ৫ দশমিক ৮  শতাংশ হতে পাওে বলে ধারণা করা হয়েছে, যা গত অর্থবছর ছিল ৫ দশমিক ৭ শতাংশ।

 এডিবির কান্ট্রি ডিরেক্টর মমোহন প্রকাশ বলেন, ‘চলতি অর্থবছর সাড়ে ৫ থেকে ৬ শতাংশ  জিডিপি প্রবৃদ্ধি নির্ভর করবে করোনার দ্বিতীয় ঢেওয়ের ওপর। করোনার দ্বিতীয় ঢেউয়ের চাপে এটি ৫ দশমিক ৫ থেকে ৫ দশমিক ৮ শতাংশও হতে পারে।’ করোনার ভ্যাকসিন সংকট প্রেক্ষাপটে তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশে অনেক কোম্পানির সক্ষমতা রয়েছে। তাই দেশে ভ্যাকসিন উৎপাদনে জোর দিতে হবে।’

চলতি অর্থবছরের বাজেটে সরকার ৮ দশমিক ২ শতাংশ প্রবৃদ্ধির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে। করোনার বাস্তবতার কারণে পরে তা ৭ দশমিক ৪ শতাংশে নামিয়ে আনা হয়। এর আগে ২০১৯-২০ অর্থবছরে বাংলাদেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধিও লক্ষ্য ৮ দশমিক ২ শতাংশ থেকে কমিয়ে ৫ দশমিক ২ শতাংশে নিয়ে আসে সরকার। তবে বাংলাদেশ পরিসংখ্যান ব্যুরোর (বিবিএস) প্রাথমিক হিসেবে অর্জন হয় ৫ দশমিক ২৪  শতাংশ। চূড়ান্ত হিসেবে সেটি আরও কমবে বলে জানা গেছে।