অর্থনীতি

অ্যাক্টিভ ফাইনকে ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণসহ পরিকল্পনা দাখিলের নির্দেশ

শেয়ারবাজারে ওষুধ ও রাসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালসের (এএফসি) পরিচালনা পর্ষদকে সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ারধারণ করে কৌশলগত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা দাখিলের জন্য নির্দেশ দিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।

একইসঙ্গে কোম্পানির বিদ্যমান স্বতন্ত্র পরিচালকদের পরিবর্তন করার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে বলে বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে।

৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণে ব্যর্থ ১১ কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদকে তলব করে বিএসইসি। তলব করা ওই কোম্পানিগুলোর মধ্যে অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যাল ছিল। এরই ধরাবাহিকতায় গত ২৭ মে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে এ সংক্রান্ত বিষয়ে বিএসইসির আলোচনা হয়। ওই আলোচনার পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণের নির্দেশ দিয়েছে।

২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর ও ২০১৯ সালের ২১ মে জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত সকল কোম্পানির উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের মোট পরিশোধিত মূলধনের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ ধারণের বিধান রয়েছে। তবে অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালসের মোট পরিশোধিত মূলধনের মধ্যে মাত্র ১২.০৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে পরিচালকদের হাতে। ফলে এখনও ১৭.৯৬ শতাংশ শেয়ারধারণ করতে হবে। 

বিএসইসি সূত্রে জানা গেছে, চলতি বছরের ২৭ মে বিকেল ৪টার দিকে অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালের পরিচালনা পর্ষদের সঙ্গে বিএসইসির বৈঠক হয়। 

ওই বৈঠকের আলোচনা অনুযায়ী, বিদ্যমান স্বতন্ত্র পরিচালকদের পরিবর্তন করারও নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। এছাড়াও ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের বার্ষিক সাধারণ সভা (এজিএম) না করার কারণে আদালতে দায়ের করা পিটিশনে সর্বশেষ অবস্থার তথ্য জানানোর নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। 

নির্দেশের চিঠি হাতে পাওয়ার পরবর্তী ৭ দিনের মধ্যে সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ ধারণ সাপেক্ষে কৌশলগত ব্যবসায়িক পরিকল্পনা বিএসইসিতে জমা দিতে হবে। আর এজিএম সংক্রান্ত পিটিশনের সর্বশেষ অবস্থা এবং স্বতন্ত্র পরিচালক পরিবর্তনের বিষয়টি চিঠি হাতে পাওয়া পরবর্তী তিন দিনের মধ্যে বিএসইসিকে অবহিত করতে হবে। 

নির্ধারিত সময়ের মধ্যে ওই নির্দেশনা পরিপালন করে প্রতিবেদন দাখিল না করলে সিকিউরিটিজ আইন অনুযায়ী কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুনর্গঠন করা হবে বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে বিএসইসি।

অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালসের সর্বশেষ ২০১৯ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের এজিএম ওই বছরের ৩১ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত হয়। তবে কোম্পানিটি ২০২০ সালের ৩০ জুন সমাপ্ত হিসাব বছরের এজিএম করেনি। ফলে পূর্ববর্তী ও পরবর্তী এজিএম করার জন্য আদালতের কাছে আবেদন জানিয়েছে। সেটি আদালতে বিচারাধীন রয়েছে।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালসের কোম্পানি সচিব মো. মাহবুবুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বিএসইসি এ সংক্রান্ত চিঠি দেবে বলে আগের বৈঠকে জানিয়েছিল। তবে এখনও চিঠি হাতে পাইনি।’

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক ও মুখপাত্র মোহাম্মদ রেজাউল করিম রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সম্মিলিতভাতে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ না করা কোম্পানিগুলোর ব্যর্থতার জন্য তাদের পর্ষদ পুনর্গঠন করছে বিএসইসি। ইতোমধ্যে বেশ কিছু কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়েছে। বাকিগুলোর প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।’

২০১০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালস। ২৩৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের ‘বি’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ২৩ কোটি ৯৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৮০টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ১২.০৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৮.৩২ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩.১১ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫৬.৫৩ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। বৃহস্পতিবার (১০ জুন) কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ১৬.৬০ টাকায়।