অর্থনীতি

আগামী অর্থবছর গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা ৬ লাখ মেট্রিক টন

আগামী ২০২১-২২ অর্থবছরে গমের বাৎসরিক চাহিদা মোট ৬ লাখ মেট্রিক টন নির্ধারণ করা হয়েছে। এজন্য পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ এর বিধি ৮৩ (১) (ক) প্রয়োগ করে আন্তর্জাতিক দরপত্রের মাধ্যমে এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন ২০০৬-এর ৬৮ (১) ও পিপিআর ২০০৮-এর বিধি ৭৬ (২) অনুযায়ী জি-টু-জি’র ভিত্তিতে গম কিনতে উদ্যোগ নিয়েছে খাদ্য মন্ত্রণালয়।

সূত্র জানায়, দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরাসহ সরকারি বিতরণ ব্যবস্থা সচল রাখার উদ্দেশ্যে খাদ্য মন্ত্রণালয় অভ্যন্তরীণ সংগ্রহের পাশাপাশি আন্তর্জাতিক উৎস থেকে গম সংগ্রহ করে থাকে। আগামী ২০২১-২০২২ অর্থ বছরে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে ৫ লাখ মেট্রিক টন গম সংগ্রহের জন্য বাজেটে অর্থ সংস্থান রয়েছে। 

দেশের সরকারি মজুত বাড়িয়ে সরকারি খাদ্য বিতরণ ব্যবস্থা নিশ্চিত করতে আমদানির ক্ষেত্রে অনেকগুলো উৎস থাকলে দ্রুত খাদ্যশস্য আমদানি করা সহজ হয় এবং প্রতিযোগিতাপূর্ণ দামে খাদ্যশস্য কেনা করা সম্ভব হয় বিধায় খাদ্য মন্ত্রণালয় প্রতি বছর জি-টু-জি ভিত্তিতে এবং আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে গম সংগ্রহ করছে।

সূত্র জানায়, বর্তমানে বিভিন্ন দেশে গম হার্ভেস্টিং মৌসুম। মৌসুমের শুরুতে গমের দাম কম থাকে বিধায় আন্তর্জাতিক বাজারে গমের দাম কমতে পারে। এ বিবেচনায় সরকারি অর্থ সাশ্রয়ের স্বার্থে এখনই গম সংগ্রহ করা উচিত।

উল্লেখ্য, রাশিয়া ও ইউক্রেনের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের সমঝোতা চুক্তি রয়েছে। ইতোমধ্যে রাশিয়ার ফরেন ইকোনমিক করপোরশন থেকে ২ লাখ মেট্রিক টন গম সরবরাহের প্রস্তাব পাওয়া গেছে।

পাবলিক প্রকিউরমেন্ট আইন, ২০০৬ এর ৬৮ (১) ধারায় রাষ্ট্রীয় জরুরী প্রয়োজনে বা বিপর্যকর কোন ঘটনা মোকাবেলা করার জন্য জনস্বার্থে সরকার কর্তৃক গঠিত অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সুপারিশক্রমে সরাসরি ক্রয় পদ্ধতি অনুসরণ করে ক্রয় সম্পন্ন করার এবং পাবলিক প্রকিউরমেন্ট বিধিমালা, ২০০৮ এর সর্বশেষ সংশোধনীর বিধি ৮৩ (১) (ক) অনুযায়ী ক্রয় প্রক্রিয়ার সময়সীমা কমানোর বিধান রয়েছে।

সূত্র জানায়, পিপিআর, ২০০৮-এর বিধি ৮৫ অনুযায়ী আন্তর্জাতিক ক্রয়ের কোটেশন পদ্ধতি প্রয়োগের জন্য খাদ্য অধিদপ্তর থেকে ইতোমধ্যে সম্ভাব্য সরবরাহকারীদের তালিকা তৈরির জন্য পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশসহ অন্যান্য উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে।

আগামী ২০২১-২০২২ অর্থবছরে গমের বাৎসরিক চাহিদা মোট ৬ লাখ মেট্রিক টন। এরমধ্যে অভ্যন্তরীণ উৎস থেকে ১ লাখ মেট্রিক টন গম সংগ্রহ করা হবে। যথাসময়ে ঝুঁকিহীনভাবে গম সংগ্রহের লক্ষ্যমাত্রা অর্জনের স্বার্থে আন্তর্জাতিক উৎস থেকে জি-টু-জি পর্যায়ে ২ লাখ মেট্রিক টন ও আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্রের মাধ্যমে ৩ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানি করার প্রয়োজন রয়েছে।

জি-টু-জি এর ভিত্তিতে ২ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির জন্য প্রয়োজনীয় অর্থের পরিমাণ পিপিআর, ২০০৮ এর বিধি ৭৬ (২) এ উল্লেখিত মূল্যসীমার ঊর্ধ্বে হবে বিধায় এ বিষয়ে অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নীতিগত অনুমোদন প্রয়োজন। এছাড়া পিপিআর, ২০০৮ এর বিধি ৮৩ (১) (ক) অনুযায়ী আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র দাখিলের সময়সীমা কমানোর ক্ষেত্রেও অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির নীতিগত অনুমোদনের প্রয়োজন রয়েছে।

এঅবস্থায়, ‘অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির অনুমোদনের জন্য কয়েকটি বিষয় তুলে ধরা হয়েছে-

(ক) রাষ্ট্রীয় জরুরী প্রয়োজনে পিপিএ ২০০৬-এর ধারা ৬৮ (১) এবং পিপিআর, ২০০৮-এর বিধি ৭৬ (২) এ বর্ণিত ক্রয় পদ্ধতি প্রয়োগ করে রাশিয়ান ফেডারেশন থেকে জি-টু-জি ভিত্তিতে ২ লাখ মেট্রিক টন গম কেনা।

(খ) আন্তর্জাতিক উন্মুক্ত দরপত্র পদ্ধতি অনুসরণ করে ৩ লাখ মেট্রিক টন গম আমদানির লক্ষ্যে পিপিআর, ২০০৮ এর বিধি ৮৩ (১) (ক) অনুযায়ী দরপত্র দাখিলের সময়সীমা পত্রিকায় বিজ্ঞাপন প্রকাশের তারিখ থেকে ৪২ দিনের পরিবর্তে ১৫ দিন নির্ধারণ করা।

এ সংক্রান্ত একটি প্রস্তাব অনুমোদনের জন্য শনিবার অর্থমন্ত্রী আ হ ম মুস্তফা কামালের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠেয় অর্থনৈতিক বিষয় সংক্রান্ত মন্ত্রিসভা কমিটির সভায় উপস্থাপন করা হবে বলে খাদ্য মন্ত্রণালয় সূত্রে জানা গেছে।