অর্থনীতি

আর্থিক অনিয়ম তদন্তে ফারইস্ট ইসলামী লাইফের বিরুদ্ধে কমিটি

গ্রাহকদের দাবি পরিশোধ না করাসহ নানা আর্থিক অনিয়ম খতিয়ে দেখতে শেয়ারবাজারে বিমা খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে তদন্ত কমিটি গঠন করেছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। কোম্পানিটির একজন উদ্যোক্তা পরিচালকসহ আরো বেশ কয়েকজনের অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে বিএসইসি এ তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।

ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার আদেশটি গত ২৮ জুন ইস্যু করা হয় বলে সূত্রে জানা গেছে।

সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ অধ্যাদেশ, ১৯৬৯ এর ২১ ধারা ও বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন আইন, ১৯৯৩ এর ১৭ক ধারা অনুযায়ী এ তদন্ত কমিটি গঠনের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

গঠিত তদন্ত কমিটিতে দুইজন সদস্য রয়েছেন। তারা হলেন সহকারী পরিচালক মো. শাহনেওয়াজ ও মো. সিরাজুল ইসলাম।

এই তদন্তের আদেশ জারির পর থেকে পাঁচ কার্যদিবসের মধ্যে গঠিত কমিটিকে বিএসইসিতে প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।

এ বিষয়ে বিএসইসির নির্বাহী পরিচালক মো. সাইফুর রহমান রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘বিভিন্ন অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সেরর বিরুদ্ধে তদন্ত কার্যক্রম পরিচালনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি।’

এর আগে ফারইস্ট ইসলামী লাইফ ইন্স্যুরেন্সের আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়মের অভিযোগ পাওয়া যায়। এ বিষয়ে প্রাথমিক তদন্তে সত্যতা পায় বিএসইসি। প্রাথমিক তদন্তে জানা যায়, এক প্রভাবশালী পরিচালককে আর্থিক সুবিধা দিতে গিয়ে কোম্পানিটির স্থায়ী আমানত ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ফলে কোম্পানির কয়েক বছরের আর্থিক প্রতিবেদন বিশেষ নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি। গত বছরের ১৯ সেপ্টেম্বর এ সংক্রান্ত আদেশ জারি করা হয়।

কোম্পানিটির আর্থিক প্রতিবেদন অনুসারে জানা গেছে, ২০১৬ সালে বিভিন্ন ব্যাংকে কোম্পানির স্থায়ী আমানত ছিল ১ হাজার ৪৩১ কোটি ১০ লাখ টাকা। আর ২০১৮ সালে তা নেমে এমেছে ৪১৩ কোটি ৫৯ লাখ টাকায়।

 অভিযোগ রয়েছে, আর্থিক সক্ষমতা কমে যাওয়ায় গ্রাহকদের দাবি যথাযথভাবে পূরণ করতে পারছে না কোম্পানিটি। এতে করে কোম্পানিটির গ্রাহক হারারোর পাশপাশি জীবন বিমা পলিসিও কমে গেছে। একইসঙ্গে ফারইস্ট লাইফের বিনিয়োগের পরিমাণও কমেছে।

প্রসঙ্গত, শেয়ারবাজারে ২০০৫ সালে তালিকাভুক্ত হওয়া ‘এ’ ক্যাটাগরির কোম্পানিটির শেয়ার সংখ্যা ৭ কোটি ৪৭ লাখ ৪২ হাজার ৭৫১টি। এর মধ্যে চলতি বছরের ৩১ মে পর্যন্ত কোম্পানিটির উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ৩০.৫৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ৪৩.০৮ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ০.৮১ শতাংশ এবং সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৫.৫৮ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। মঙ্গলবার (২৮ জুন) কোম্পানিটির শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ৬১.৫০ টাকায়।