অর্থনীতি

অ্যাক্টিভ ফাইনের আর্থিক হিসাব বিশেষ নিরীক্ষার সিদ্ধান্ত

শেয়ারবাজারে ওষুধ ও রাসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালের (এএফসি) আর্থিক হিসাব বিবরণী বিশেষ নিরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)। এ বিশেষ নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ দেওয়া হবে। শিগগিরই এ বিষয়ে আদেশ জারি হবে বলে বিএসইসি সূত্র জানিয়েছে।

অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালের মূলধন ও রিজার্ভ কোম্পানিতে যথাযথভাবে বিনিয়োগকৃত অবস্থায় রয়েছে কি-না সে বিষয়টি খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে বিএসইসি। আর সেজন্যই কোম্পানির আর্থিক হিসাব বিবরণী বিশেষ নিরীক্ষা করা হবে। তবে নিরীক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য এখনও পর্যন্ত কোনো বিশেষ নিরীক্ষক নিয়োগ দেয়নি বিএসইসি। শিগগিরই এ বিষয়ে আদেশ জারি করার কাজ চলছে।

সম্প্রতি অনুষ্ঠিত বিএসইসির নিয়মিত কমিশন সভায় এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বলে বিশ্বস্ত সূত্র রাইজিংবিডিকে নিশ্চিত করেছে।

অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যাল ৩ বছরের আর্থিক হিসাব খতিয়ে দেখার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জ (ডিএসই) কর্তৃপক্ষও। এজন্য কোম্পানিকে প্রয়োজনীয় তথ্যাদি আগামী ৩০ আগস্টের মধ্যে দাখিল করতে বলা হয়েছে। কোম্পানির এসব তথ্য হাতে পেয়ে, তা যাচাই-বাছাই করে অসঙ্গতি খতিয়ে দেখা হবে।

এছাড়া ২০২০ সালের ১০ ডিসেম্বর ও ২০১৯ সালের ২১ মে জারি করা নির্দেশনা অনুযায়ী উদ্যোক্তা ও পরিচালকদের মোট পরিশোধিত মূলধনের সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যাল। 

কোম্পানির মোট পরিশোধিত মূলধনের মধ্যে মাত্র ১২.০৪ শতাংশ শেয়ার রয়েছে পরিচালকদের হাতে। ফলে এখনও ১৭.৯৬ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে হবে কোম্পানিকে। ইতোমধ্যে এ বিষয়ে কোম্পানিকে একাধিকবার শুনানিতে তলব করা হয়েছে। সর্বশেষ চলতি বছরের জুন মাসে অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালের পরিচালনা পর্ষদসহ কোম্পানির সচিব ও প্রধান অর্থ কর্মকর্তাকে (সিএফও) তলব করে বিএসইসি। পাশাপাশি কোম্পানির ব্যবসায়িক ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা চাওয়া হয়েছে। তবে বিএসইসির দেওয়ার নির্ধারিত সময়ের মধ্যে কোম্পানি সম্মিলিতভাবে ৩০ শতাংশ শেয়ার ধারণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। ফলে কোম্পানির পরিচালনা পর্ষদ পুর্নগঠনের কথা ভাবছে বিএসইসি।

এ বিষয়ে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক বিএসইসির একজন কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালের বিরুদ্ধে বিশেষ নিরীক্ষা করার সিদ্ধান্ত কমিশন সভায় নেওয়া হয়েছে। এ সংক্রান্ত বিষয়ে খসড়া চিঠি ইস্যু করার বিষয়ে কাজ চলছে।

একই বিষয়ে ডিএসইর একজন কর্মকর্তা রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালের ৩ বছরের আর্থিক হিসাব বিরণী সংক্রান্ত বেশ কিছু তথ্যাদি চাওয়া হয়েছে। কোম্পানিটি এজন্য দুই মাস সময় চেয়েছে। তবে কোম্পানিকে আগামী ৩০ আগস্ট পর্যন্ত সময় দেওয়া হয়েছে।’

বিএসইসির কমিশনার অধ্যাপক ড. শেখ শামসুদ্দিন আহমেদ রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘এখনও অ্যাক্টিভ ফাইনের পর্ষদ পুনর্গঠন করা হয়নি। কোম্পানির পর্ষদ পুনর্গঠন করার বিষয়ে আমরা চিন্তা-ভাবনা করছি।’

২০১০ সালে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয় অ্যাক্টিভ ফাইন কেমিক্যালস। ২৩৯ কোটি ৯৩ লাখ টাকা পরিশোধিত মূলধনের ‘বি’ ক্যাটাগরির এ কোম্পানির মোট শেয়ার সংখ্যা ২৩ কোটি ৯৯ লাখ ৩৬ হাজার ৫৮০টি। এর মধ্যে উদ্যোক্তা পরিচালকদের কাছে ১২.০৪ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের কাছে ২৯.১০ শতাংশ, বিদেশি বিনিয়োগকারীদের কাছে ৩.১১ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের কাছে ৫৫.৭৫ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। 

বৃহস্পতিবার (১০ জুন) কোম্পানির শেয়ার সর্বশেষ লেনদেন হয়েছে ২৫.৭০ টাকায়।