অর্থনীতি

সব পণ্যের দাম চড়া

সাপ্তাহিক ছুটির দিনে সকালে রাজধানীর বিভিন্ন বাজারে উপস্থিত হন বিভিন্ন পেশার লোকজন। কিন্তু বাজারে চাল, তেল, চিনি, মাছ, মুরগি, ডিম, সবজিসহ সবকিছুরই অতিরিক্ত দাম দেখে থমকে যান ক্রেতারা। বাজারে সবকিছুর চড়া দাম দেখে হতাশা প্রকাশ করেছেন বেশিরভাগ মধ্যবিত্ত শ্রেণির ক্রেতারা। সব মিলিয়ে সাপ্তাহিক ছুটির দিন শুক্রবারে (২৪ সেপ্টেম্বর) বাজারে আসা প্রায় সব ক্রেতারাই দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতি দেখে জানিয়েছেন তাদের ক্ষোভের কথা, অসহায়ত্বের কথা। চাহিদা মতো বাজার করতে না পেরে ফিরে গেছেন অনেকে। 

শুক্রবার রাজধানীর নিউমার্কেট, হাতিরপুল, টাউনহল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পিঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকা কেজিতে, সেই সঙ্গে আলু ২০ থেকে ২৫ টাকা, টমেটো ১০০ টাকা, কাঁচা মরিচ ১৫০ টাকা, পটল ৪০ টাকা, বরবটি ৭০ টাকা, বেগুন ৬০ টাকা, পেঁপে ২০ টাকা, ঢেঁড়স ৬০ টাকা, শসা ৭০ টাকা, করলা ৭০ টাকা, সিম ১৬০ টাকা, গাজর ১২০ টাকা কেজি দরে বিক্রি হচ্ছে। 

অন্যদিকে, মাছের বাজারেও প্রতিটি মাছ তুলনামূলক বেশি দামে বিক্রি হতে দেখা গেছে।  বাজারে পাঙ্গাশ প্রতি কেজি ১৩০ থেকে ১৪০ টাকা।  শিং মাছ (মাঝারি) ৪০০ থেকে ৬০০ টাকা, কই মাছ ২০০ থেকে ২২০ টাকা, চিংড়ি প্রকারভেদে ৫০০ থেকে ৮০০ টাকা, ইলিশ (বড়) পিস ১২০০ থেকে ১৪০০ টাকা, ইলিশ (ছোট) পিস ৬৫০ থেকে ৭৫০, এক কেজি ওজনের ইলিশ ১২০০ টাকা, রুই মাছ ২৭৫ থেকে ৩০০ টাকা, কাতল ২৫০ থেকে ২৮০ টাকা, তেলাপিয়া ১৫০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।  এছাড়া ডিম প্রতি ডজন বিক্রি হচ্ছে ১১০ থেকে ১২০ টাকায়।

গরু এবং খাসির মাংসের কেজি যথাক্রমে ৫৮০ ও ৮০০ টাকায় বিক্রি হলেও বেড়েছে মুরগির দাম।  ব্রয়লার মুরগি প্রতি কেজি বিক্রি হচ্ছে ১৬০ টাকা, লেয়ার ২৩০ টাকা, পাকিস্তানি মুরগির কেজি ৩০০ টাকা আর দেশি মুরগি বিক্রি হচ্ছে ৪৫০ টাকা কেজিতে।

গত সপ্তাহের তুলনায় বাজারে সব রকমের চালের দাম বেড়েছে কেজি প্রতি ২ টাকা থেকে ৫ টাকা।  মোটা চাল কেজি প্রতি ৪৫ টাকা থেকে ৪৭ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। যা গত সপ্তাহে ছিল কেজি প্রতি ৪৪ টাকা। নাজিরশাইল মান ভেদে ৬৫ থেকে ৮৫ টাকায় বিক্রি হচ্ছে, গত সপ্তাহে যার দাম ছিল ৬২ থেকে ৮০ টাকা।  পাইজাম ৪৭ থেকে ৫০ টাকা। গত সপ্তাহের মূল্য ৪৫ থেকে ৪৮ টাকা।  মিনিকেট ৬০ থেকে ৬২ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে।  যা গত সপ্তাহে ছিল ৫৮ থেকে ৬০ টাকা। আটাশ চালের বর্তমান দাম ৪৮ থেকে ৫২ টাকা হলেও গত সপ্তাহের দাম ছিল ৪৬ থেকে ৫০ টাকা।

কোম্পানি ভেদে প্রতি লিটার সয়াবিন তেল বিক্রি হচ্ছে ১৫০ টাকায়, যার দাম গত সপ্তাহে ছিল ১৪৫ টাকা। ২ লিটার ২৯৫ থেকে ৩০০ টাকা। গত সপ্তাহে ছিল ২৮৭ থেকে ২৯০ টাকা। আর ৫ লিটার তেলের বর্তমান দাম ৭১৮ থেকে ৭৪৫ টাকা। যার দাম ছিল ৭১০ থেকে ৭৩০ টাকা। 

মোহাম্মদপুর টাউন হলে বাজার করতে এসেছেন বেসরকারি চাকরিজীবী ফখরুল আলম।  তিনি বলেন, সবকিছুর দাম বেশি।  এত বেশি দাম হলে আমাদের মতো মধ্যবিত্ত মানুষরা কী খাবো? বয়লার মুরগির দামও ১৬০ টাকা কেজি। যেহেতু চাকরি করি তাই সপ্তাহের অন্যদিনে সময় পাই না। তাই আজ ছুটির দিকে পুরো সপ্তাহের জন্য বাজার করতে এসেছিলাম। কিন্তু প্রতিটি জিনিসের দামের ঊর্ধ্বগতি দেখে ইচ্ছে থাকলেও অতিরিক্ত দামের কারণে তুলনামূলক কম জিনিস নিয়েই ফিরছি।

নিউমার্কেট কাঁচা বাজারে বাজার করতে এসেছেন গার্মেন্টসের কর্মকর্তা রফিকুল ইসলাম। সব জিনিসের চড়া দাম দেখে হতাশা প্রকাশ করে তিনি বলেন, শখ করে কিছু খেতে চাইলেও অতিরিক্ত দামের কারণে তা কেনা হয়ে ওঠে না। আজকের বাজারে সবজি থেকে শুরু করে মাছ, মাংস, ডিম, এমনকি বয়লার মুরগিরও বেশি দাম।