অর্থনীতি

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগে বিশেষ তহবিল: কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নতুন নির্দেশনা

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বিশেষ তহবিল গঠন এবং বিনিয়োগের নীতিমালায় কিছু বিষয় সংযুক্ত করে নতুন নির্দেশনা দিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক।

সোমবার (২৭ সেপ্টেম্বর) কেন্দ্রীয় ব্যাংকের ডিপার্টমেন্ট অব অফ-সাইট সুপারভিশন থেকে এ সংক্রান্ত নির্দেশনা জারি করা হয়েছে। নির্দেশনাটি সব ব্যাংকের ব্যবস্থাপনা পরিচালক বা প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে পাঠানো হয়েছে।

এর আগে তফসিলি ব্যাংকগুলোকে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন এবং সেই তহবিল থেকে বিনিয়োগের বিষয়ে অনুসরণীয় নীতিমালা দিয়েছিল কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পরে আলাদা নির্দেশনা জারি করা হয়েছিল।

নতুন নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগযোগ্য উপাদান বাড়ানোর মাধ্যমে বিনিয়োগে বৈচিত্র্য আনার উদ্দেশ্যে তথা ঝুঁকি কমাতে আগের দেওয়া নির্দেশনার অতিরিক্ত কিছু বিষয় সংযোজনের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। ২০০ কোটি টাকার তহবিলের সম্পূর্ণ অংশ (লভ্যতা অনুসারে) ন্যূনতম ৭০ শতাংশ সৌর বিদ্যুৎ, বায়ুশক্তি চালিত বিদ্যুৎ, জলবিদ্যুৎ, বায়োগ্যাস ইত্যাদি নবায়নযোগ্য শক্তি প্রকল্পে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বেসরকারি উদ্যোক্তা কর্তৃক ইস্যুকৃত তালিকাভুক্ত বা সাবস্ক্রিপশন ক্লোজিংয়ের তারিখ থেকে ১ বছরের মধ্যে তালিকাভুক্ত হবে এরূপ ১০০ শতাংশ অ্যাসেট ব্যাকড গ্রিন সুকুকে বিনিয়োগ করা যাবে।

বেসরকারি উদ্যোক্তার ইস্যুকৃত সুকুকে বিনিয়োগের ক্ষেত্রে যেসব শর্ত প্রযোজ্য হবে:

বিনিয়োগযোগ্য সুকুকের প্রকৃতি হতে হবে—ইসতিশনা সুকুক, সালাম সুকুক, ইজারাহ সুকুক, একাধিক প্রকৃতির সুকুকের সমন্বয়ে গঠিত কোনো হাইব্রিড সুকুক।

সুকুকের তহবিল ব্যবহারের ক্ষেত্রে পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ মার্জিনে ঋণপত্র খুলতে হবে। পণ্য ১২০ দিনের মধ্যে জাহাজিকরণ বা সরবরাহ করার শর্ত থাকতে হবে। সমস্ত স্থানীয় ব্যয় ৬ মাসের মধ্যে পরিশোধ করতে হবে। প্রকল্প উন্নয়নে সর্বোচ্চ ৮ মাস সময় বরাদ্দ থাকতে পারে। সুকুক সাবস্ক্রিপশন ক্লোজিংয়ের তারিখ থেকে সময়সীমা কার্যকর হবে।

অন্যান্য শর্ত সুকুকের তহবিল স্পেশাল পারপাস ভেহিকল (এসপিভি) এর নামে খোলা ব্যাংক হিসাবে সংরক্ষণ করতে হবে। উক্ত ব্যাংক হিসাব থেকে সুকুকের জন্য নির্ধারিত সুনির্দিষ্ট ব্যয় ব্যতীত অন্য কোনো খাতে খরচ বা কর্জ দেওয়া যাবে না।

প্রাইভেট প্লেসমেন্টের ক্ষেত্রে কোনো কারণে বাংলাদেশ সিকিউরটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ নির্ধারিত সময়ের মধ্যে সুকুকের সাবস্ক্রিপশন সম্পন্ন না হলে বা সুকুক ইস্যুর বিষয়টি বাতিল হলে সংশ্লিষ্ট এসভিপি এক সপ্তাহের মধ্যে বিনিয়োগকারী ব্যাংকগুলোকে সমুদয় অর্থ ফেরত দিতে হবে। এ বিষয়ে সুকুকের ট্রাস্টি, এসপিভি এবং বিনিয়োগকারী ব্যাংকগুলোর মধ্যে ত্রিপক্ষীয় চুক্তি সম্পাদন করতে হবে। সেকেন্ডারি মার্কেট বা প্রাইভেট প্লেসমেন্টের মাধ্যমে বা উভয় প্রকারে কোনো সুকুকের মোট ইস্যুর ১০ শতাংশের বেশি পরিমাণ কোনো ব্যাংক বিনিয়োগ করতে পারবে না। কনভার্টেবল সুকুকের ক্ষেত্রে কনভার্সনের পর ইক্যুইটি ধারণ যাতে ১০ শতাংশের বেশি না হয়, তা বিনিয়োগকারী ব্যাংককেই নিশ্চিত করতে হবে। অতালিকাভুক্ত সুকুকে বিনিয়োগের আগে সাবস্ক্রিপশন ক্লোজিংয়ের তারিখ থেকে এক বছরের মধ্যে তালিকাভুক্তির বিষয়ে ট্রাস্টি, এসভিপি, ইস্যুয়ার এবং বিনিয়োগকারী ব্যাংকের মধ্যে সমঝোতা স্মারক স্বাক্ষরিত হতে হবে।

আগের নির্দেশনায় বর্ণিত বিনিয়োগের অনুপাত অনুসারে সুকুক ব্যতীত সার্কুলারে বর্ণিত অন্য যেকোনো উপাদানে বিনিয়োগের সর্বোচ্চ পরিমাণ ২০০ কোটি টাকার তহবিলের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে। ওই সার্কুলারে বর্ণিত অন্যান্য নির্দেশনা অপরিবর্তিত থাকবে বলে জানিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।