অর্থনীতি

রেমিট্যান্স-রপ্তানি আয়ের ২২শ’ কোটি টাকা প্রণোদনা ছাড়

সরকার চলতি ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের অক্টোবর থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত রেমিট্যান্স পাঠানো প্রবাসীদের ও বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী রপ্তানিকারকদের জন্য নগদ প্রণোদনা হিসেবে দুই হাজার ২০০ কোটি টাকা ছাড় করেছে।

অর্থ মন্ত্রণালয়ের অর্থ বিভাগ গত বৃহস্পতিবার দুটি পৃথক সার্কুলার জারি করে পরবর্তী তিন মাসের প্রবাসী রেমিট্যান্স প্রেরকদের জন্য ২ শতাংশ এবং রপ্তানিকারকদের জন্য ১ শতাংশ হারে প্রণোদনা দেওয়ার জন্য এই অর্থ ছাড় দেওয়া হয়েছে।

সূত্র জানায়, যেসব প্রবাসী তাদের টাকা দেশে ফেরত পাঠাচ্ছেন তাদের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংক সব তফসিলি ব্যাংকে এক হাজার কোটি টাকা পাঠাবে। এ ছাড়াও কেন্দ্রীয় ব্যাংক একই সময়ের জন্য পোশাক রপ্তানিকারক, হিমায়িত খাবার এবং চামড়াজাত পণ্য রপ্তানিকারকদের জন্য আরও এক হাজার কোটি টাকা ছাড় করেছে। ছাড়া করা অর্থেও বাকি ২০০ কোটি টাকা পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানিকারকদের মধ্যে বিতরণ করা হবে।  

অর্থ মন্ত্রণালয়ের সার্কুলারে বলা হয়েছে, তহবিলটি বাংলাদেশ ব্যাংকের অনুকূলে ছাড় করা হয়েছে যা নগদ প্রণোদনা সুবিধাভোগীদের মধ্যে বিতরণ করবে।

এবিষয়ে নাম প্রকাশ না করার শর্তে অর্থ বিভাগের কর্মকর্তা বলেন, জুন মাসে শেষ হওয়া সমাপ্ত অর্থ বছরে প্রবাসীদের জন্য প্রায় ৪ হাজার কোটি টাকা নগদ প্রণোদনা দেওয়া হয়েছে।

পরিসংখ্যান অনুসারে, গত অর্থ বছরের প্রথম দুই মাসের তুলনায় চলতি অর্থ বছরের জুলাই-আগস্ট সময়কালে দেশে আসা রেমিট্যান্স প্রবাহ ১৯ শতাংশেরও বেশি কমেছে। সময়ের মধ্যে রেমিট্যান্স প্রবাহের পরিমাণ ছিল ৩.৬৮ বিলিয়ন ডলার। যা আগের বছর একই সময়ে ছিল ৪.৬ বিলিয়ন ডলার।

বৈদেশিক মুদ্রার অগ্রগতির সঙ্গে সংশ্লিষ্টরা বলেছেন, করোনাভাইরাস মহামারির দ্বিতীয় ঢেউ এবং হুন্ডি ও অন্যান্য বেআইনি পথে বৈদেশিক মুদ্রা আসার কারণেই বৈধ পথে রেমিট্যান্স আসার প্রবণতার হ্রাস ঘটে থাকতে পারে। ২০২১ সালের আগস্টে রেমিট্যান্স প্রবাহ ৮.০ শতাংশ কমে ১.৮ বিলিয়ন ডলারে নেমে আসে।

রেমিট্যান্স প্রবাহ বাড়াতে সরকার ২০১৯-২০২০ অর্থ বছর থেকে ২ শতাংশ নগদ প্রণোদনা দিয়ে আসছে।

অর্থ বিভাগের সূত্র জানায়, তৈরি পোশাক, হিমায়িত খাদ্য, চামড়াজাত পণ্য এবং পাট ও পাটজাত পণ্য রপ্তানির জন্য নগদ প্রণোদনা দেওয়ার জন্য আগের অর্থ বছরে ৫ হাজার কোটি টাকার বেশি বিতরণ করা হয়েছিল। ২০২০-২০২১ অর্থ বছরে তৈরি পোশাক রপ্তানি থেকে ৩১.৪৫ বিলিয়ন আয় হয়।

চলতি অর্থ বছরের ২০২১-২০২২ অর্থ বছরের প্রথম মাস জুলাই মাসে রপ্তানি আয়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছিল। কিন্তু পরের মাসে এটি ইতিবাচক প্রবৃদ্ধিতে ফিরে আসে।

এদিকে এক্সপোর্ট প্রমোশন ব্যুরোর (ইপিবি) সাম্প্রতিক তথ্য অনুযায়ী, মাত্র একমাস আগে ১১ শতাংশের বেশি কমার পর চলতি অর্থ বছরের পর আগস্ট মাসে রপ্তানি আয় ১৪ শতাংশ বেড়েছে।