অর্থনীতি

ই-রিটার্ন ফাইলিং মডেল তৈরি করেছে এনবিআর

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সদস্য (করনীতি) মো. আলমগীর হোসেন জানিয়েছেন, করদাতাদের সুবিধার্থে ই-রিটার্ন ফাইলিং মডেল তৈরি করেছে এনবিআর। এর মাধ্যমে করদাতারা ঘরে বসেই রিটার্ন ফাইল তৈরি, রিটার্ন দাখিল, ই-টিআইএন নাম্বার নেওয়াসহ সবকিছু সহজেই করতে পারবেন।   

সোমবার (২৯ নভেম্বর) ইকোনোমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) এবং গোল্ডেন বাংলাদেশ আয়োজিত অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে এসব তথ্য জানান তিনি। ইআরএফের সাধারণ সম্পাদক রাশিদুল ইসলামের সঞ্চালনায় অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন ইআরএফের সভাপতি শারমীন রিনভী।

আলমগীর হোসেন জানান, আপাতত বেতনভুক্ত কর্মচারী এবং ছোট উদ্যোক্তাদের জন্যই (যাদের আয় কম) এই সিস্টেমটি তৈরি করা হয়েছে। তারা ঘরে বসেই এটি করতে পারবেন। এখানে পুরো কাজটাই সিস্টেম করে দেবে। এজন্য কোনো বিধিবিধান জানারও প্রয়োজন নেই। অনলাইনে রিটার্ন দাখিলের জন্য সিস্টেমে ঢুকে একটা ইউজার আইডি দিতে হবে। এরপর সিস্টেম থেকেই তার কাছে একটি ওটিপি নাম্বার আসবে। সেটার প্রয়োজনীয় তথ্যগুলো পূরণ করলেই হয়ে যাবে।

তিনি বলেন, ‘বড় উদ্যোক্তা বা প্রতিষ্ঠানের আয়কর দেওয়ার জন্য অবশ্যই একজন আইনজীবীর পরামর্শ নিতে হবে। কেননা, আয়করের মতো জটিল বিষয়ে পরামর্শ না নিলে সেখানে ভুল হওয়ার সম্ভাবনা থেকে যাবে। ভুল হলে করদাতাকেই এর দায়িত্ব নিতে হবে। প্রতিষ্ঠানও তার আইনজীবীকে নয়, তাকেই খুঁজবে। রিটার্ন দাখিল করার সময় একজন দক্ষ আইনজীবীকে দিয়েই সেটা করাতে হবে।’

মো. আলমগীর হোসেন আরও বলেন, ‘এনবিআর কতগুলো মৌলিক কাজে হাত নিয়েছে। আগে শুধু জোন বাড়ানো হতো। বর্তমানে ই-ট্যাক্স ম্যানেজমেন্টসহ বেশকিছু মৌলিক জায়গায় কাজ করছে। এনবিআর গোয়েন্দা সংস্থা তৈরি করেছে। প্রাতিষ্ঠানিক আয়করে স্বচ্ছতা আনার জন্য আইসিএমবিএর সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছি। এটি করদাতাদের ঝুঁকিমুক্ত থাকতে সাহায্য করবে।’

তিনি জানান, ট্রেড বডি এবং সামাজিক সংগঠনগুলোর রিটার্ন দাখিল বাধ্যতামূলক হলেও তারা সেটা করছে না। ইআরএফ সেটা সঠিকভাবেই করছে।

আয়করের মতো জটিল বিষয়ে ছোট ছোট অনেক সমস্যা আছে। গঠনমূলক লেখার মাধ্যমে সেগুলো দূর করতে ভূমিকা রাখার জন্য সাংবাদিকদের প্রতি আহ্বান জানান মো. আলমগীর হোসেন।

তিনি বলেন, ‘এনবিআরের পক্ষ থেকে বাংলা আয়কর আইনের একটা চূড়ান্ত খসড়া তৈরি করেছি। এটি বর্তমানে সংশ্লিষ্টদের মতামতের জন্য এনবিআরের ওয়েবসাইটে দেওয়া আছে। আগামী ডিসেম্বরে মন্ত্রিসভার অনুমোদনের জন্য পাঠানো হবে।’

বেসরকারি স্বেচ্ছাসেবী প্রতিষ্ঠান গোল্ডেন বাংলাদেশের নির্বাহী পরিচালক মো. জাহাঙ্গীর আলম বলেন, ‘আয়কর সম্পর্কে মানুষের ধারণা কম। ফলে ছোট ছোট সমস্যা তৈরি হয়। যেগুলো সহজেই মেটানো সম্ভব। ইআরএফ এক্ষেত্রে বড় ভূমিকা রাখতে পারে। ২০০২ সাল থেকে আমরা ৬৪ জেলায় ডাটাবেজ তৈরি করেছি।’

ইআরএফ সদস্যদের জন্য ২০২১-২০২২ করবর্ষের আয়কর রিটার্ন তৈরি, রিটার্ন ফরম পূরণ এবং নতুন করদাতার জন্য ই-টিআইএন খোলার ক্ষেত্রে সহযোগিতা করেছে গোল্ডেন বাংলাদেশ।