অর্থনীতি

বিজিএমইএ নতুন লোগো ব্র্যান্ডিং করে সোনার বাংলা এগিয়ে নেবে: স্পিকার

বিজিএমইএ নতুন লোগো করেছে। এই লোগোতে ৯টি বৃত্তে হাইলাইটস করা হয়েছে। নতুন লোগোটি বিজিএমইএ সারা বিশ্বকে দেখাবে, নতুনভাবে ব্র্যান্ডিং করবে। বিজিএমইএ বিশ্বের বুকে ব্র্যান্ডিং করে সোনার বাংলাকে এগিয়ে নিয়ে যাবে।

মঙ্গলবার (৫ জুলাই) রাজধানীর একটি হোটেলে বাংলাদেশ পোশাক প্রস্তুতকারক ও রপ্তানিকারক সমিতির (বিজিএমইএ) নতুন লোগো উদ্বোধনকালে প্রধান অতিথির বক্তব্যে জাতীয় সংসদের স্পীকার ড. শিরীন শারমিন চৌধুরী এসব কথা বলেন। পোশাক শিল্পের টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিত করতে পোশাক শিল্পের জন্য নতুন রূপকল্পের ঘোষণা শীর্ষক অনুষ্ঠানটি আয়োজন করে বিজিএমই।

স্পীকার বলেন, ‘আমাদের বড় সক্ষমতা ও আত্মমর্যাদা যে আমরা নিজেদের অর্থে পদ্মা সেতু তৈরি করেছি। স্ব-অর্থায়নে পদ্মা সেতু করতে পেরেছি এটাই আমাদের সক্ষমতার প্রমাণ করেছে।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিজিএমইএ নতুন লোগোতে তিনটি স্লোগান দেখতে পেয়েছে। চেইঞ্জ, চেইঞ্জিং, চেইঞ্জড। আসলে পরিবর্তনকে আমরা কখনই পরিবর্তন করতে পারি না। বিনিয়োগ করেন আর না করেন পরিবর্তন অপেক্ষা করবে না। পরিবর্তনকে আলিঙ্গন করতে হবে। চেষ্টা করেও পরিবর্তনকে আটকানো যাবে না। বৈশ্বিক পরিবেশ দ্রুত পরিবর্তনশীল। এ কারণে আমাদের টেকসই উন্নয়নের লক্ষে এসডিজির বাইরে যাবার কোন সুযোগ নেই। তারপর আছে আমাদের জলবায়ু পরিবর্তন। এই জলবায়ু পরিবর্তনে ক্ষতি মোকাবেলায় অবদান নেই তবুও আমরা তাতে গুরুত্ব দিতে হবে।’

স্পীকার বলেন, ‘গত ১০-১২ বছরে দেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা রয়েছে। এজন্য প্রধানমন্ত্রীর নেতৃত্বে আমরা উন্নয়নকে এগিয়ে নিতে পেরেছি। এই সময়ে আমরা কোনো হরতাল ও গাড়ি ভাঙচুর হতে দেখিনি। সকল ইস্যু জাতীয় সংসদে আলোচনার মধ্যমে সমাধান করেছি। এই অবস্থা বজায় থাকলে উন্নয়নের ধারা অব্যাহত থাকবে। সকল চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করে আমরা এগিয়ে যাব।’

বিজিএমইএ সভাপতি ফারুক হাসান বলেন, ‘গত কয়েক বছর ধরে বাংলাদেশ পোশাক রপ্তানিতে অভূতপূর্ব সাফল্য দেখিয়ে চলেছে। বাংলাদেশ এখন বিশ্বের দ্বিতীয় বৃহত্তম পোশাক রপ্তানিকারক দেশ। আর ডেনিমে আমরা ইউরোপ ও যুক্তরাষ্ট্রে সব দেশকে পেছনে ফেলে প্রথম অবস্থানে আছি। ২০২১-২২ অর্থবছরে আমাদের সামগ্রিক রপ্তানির পরিমাণ প্রায় ৫২.০৮ বিলিয়ন ডলার ছুঁয়েছে এবং যেখানে তৈরি পোশাক রপ্তানি প্রায় ৪২.৬১ বিলিয়ন ডলার। ২০২০-২১ অর্থবছরে পোশাক রপ্তানি হয়েছিল ৩১.৪৫ বিলিয়ন ডলারের। এক বছরে পোশাক রপ্তানি বেড়েছে প্রায় ১১.১৬ বিলিয়ন ডলার, বা ৩৫.৪৭ শতাংশ। তবে এই প্রবৃদ্ধিকে শুধুমাত্র অর্থের মূল্যমান বা পার্সেন্টে মূল্যায়ন করা সঠিক হবে না। কারণ, গত অর্থবছরে আমাদের কাঁচামাল ও উৎপাদন খরচ অনেক বেড়েছে।’

তিনি বলেন, ‘শিল্পের এগিয়ে যাওয়া এবং ব্র্যান্ডিং এর জন্য বিজিএমইএ’র নিজস্ব ব্র্যান্ডিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। আর তাই আগামীর টেকসই শিল্প নির্মাণের প্রত্যয় নিয়ে বিজিএমইএ’র কর্পোরেট আইডেনটিটি অর্থাৎ লোগোতে পরিবর্তন এনেছি। আমরা মনে করি বিজিএমইএ’র রিনিউড ভিশন বা নতুন প্রত্যয় সমগ্র পৃথিবীতে আমাদের পোশাক শিল্পের ভবিষ্যৎ অগ্রাধিকার সম্পর্কে একটি সুস্পষ্ট বার্তা প্রদান করবে।’

বিজিএমইএ সভাপতি বলেন, ‘প্রযুক্তির ব্যাপক পরিবর্তনের সাথে পোশাক শিল্প এমন একটি জায়গায় পৌছেঁছে, যে শিল্পের প্রচলিত নিয়মগুলো খাটছে না, প্রায়শই চ্যালেঞ্জেন সম্মুক্ষীণ হতে হচ্ছে। শিল্পকে আরও এগিয়ে নেয়ার জন্য পণ্যেও ডিজাইন পরিবর্তনের সাথে খাপ খাইয়ে নেয়া, লিড টাইম হ্রাস করা, সর্বশেষ প্রযুক্তি গ্রহণ করা, উৎপাদন ব্যয় হ্রাস করা এবং কারখানাগুলোকে আরও টেকসই করার কোন বিকল্প নেই। আর এ প্রচেষ্টাগুলো শুরু করার জন্য সংশ্লিষ্ট বিষয়গুলোতে জ্ঞানার্জনের জন্য আমরা উত্তরায় বিজিএমইএ এর প্রধান কার্যালয়ে নতুন সেন্টার ফর ইনোভেশন, এফিসিয়েন্সি অ্যান্ড অকুপেশনাল সেফটি এন্ড হেলথ প্রতিষ্ঠা করেছি। এই কেন্দ্রের লক্ষ্য হচ্ছে পোশাক শিল্পের সক্ষমতা বৃদ্ধির সুযোগগুলো চিহ্নিত করে প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ ও ক্যাপাসিটি বিল্ডিং করা।’

বিজিএমইএ সাবেক সভাপতি আব্দুস সালাম মুর্শেদী বলেন, ‘পদ্মা সেতু আমরাও পারি এর সক্ষমতা প্রমাণ করেছে। সেতু উদ্বোধনের পর আমি ঢাকা থেকে খুলনা গিয়েছি ৩ ঘন্টায়। একই সময়ে ঢাকায় ফিরেছি। আমি আমার পোশাক ব্যবসায়ী বন্ধুদের আহ্বান জানাই, আসুন খুলনায় পোশাক শিল্প প্রতিষ্ঠান গড়ে তুলুন। ঢাকা ও এর আশেপাশে শিল্প প্রতিষ্ঠান করলে গ্রিনে করতে হয়। কিন্তু খুলনায় শিল্প প্রতিষ্ঠান করলে ন্যাচারালভাবে গ্রিন হয়ে যাবে। তার জন্য কোনো অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হবে না। আমি আশা করি পদ্মা সেতু হওয়ার ফলে আগামীতে ওইসব এলাকা অর্থনীতির হাবে পরিণত হবে। যা দেশের অর্থনীতিকে বেগবান করবে।’