অর্থনীতি

দিওয়ালির রঙে সাজল বসুন্ধরা কনভেনশন সিটি

শনিবার সন্ধ্যা। বসুন্ধরা আবাসিক এলাকা-সংলগ্ন ৩০০ ফিটের রাস্তায় বিনোদনপিপাসুদের উপচে পড়া ভিড়। সেই ভিড় মিশেছে ইন্টারন্যাশনাল কনভেনশন সিটি বসুন্ধরার এক্সপো জোনে। সুরের মূর্ছনা, নৃত্যের ছন্দময় মুদ্রার সঙ্গে বাহারি রঙের বৈচিত্র্যময় সাজে শিল্পের পসরা সাজিয়ে বসেছিলেন ভারতীয় শিল্পীরা। শিশুশিল্পী থেকে শুরু করে সব শ্রেণির শিল্পীর শৈল্পিক পরিবেশনায় উচ্ছ্বাসের ঢল নেমেছিল আইসিসিবির এক্সপো জোনে। বলিউড সিনেমার হার্টবিট তোলা গান আর নাচের পাশাপাশি ভারতীয় শাস্ত্রীয় নাচ আর সংগীতের ব্যাকরণগত শুদ্ধতায় মুগ্ধতার চাদরে ঢাকা ছিল এক্সপো জোন।

ভারতীয় শিল্পীদের হৃদয় হরণ করা নান্দনিক পরিবেশনায় উন্মাদনা সৃষ্টি হয়েছিল এ দেশের নৃত্য ও সংগীত সমঝদারদের মাঝে। পরিবেশনার প্রতিটি ফ্রেমে মুগ্ধতা ছড়িয়েছিলেন ভারতীয় শিল্পীরা।

এমন দৃশ্যকল্পই চিত্রিত ছিল ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ (আইএবিডি) আয়োজিত দিওয়ালি ফেস্ট, ২০২২-এর বর্ণাঢ্য আসরে। সনাতন ধর্মাবলম্বীদের দীপাবলি উৎসব উদ্যাপনে হেমন্তের সন্ধ্যায় শুরু হয়ে এ আয়োজন চলে রাত সাড়ে ১০টা পর্যন্ত।

ছুটির দিনের সন্ধ্যায় শিল্পের এ আসরে প্রধান অতিথি ছিলেন ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা। তিনি অনুষ্ঠান মঞ্চের সামনে প্রদীপ প্রজ্বালনের মাধ্যমে অনুষ্ঠানের উদ্বোধন করেন। বক্তৃতা করেন দেশের শীর্ষস্থানীয় শিল্পপ্রতিষ্ঠান বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর, ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের সভাপতি অজয় আগল প্রমুখ। উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় হাইকমিশনারের স্ত্রী মনু ভার্মা ও বসুন্ধরা গ্রুপের পরিচালক সাবরিনা সোবহান।

ভারতীয় হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা অনুষ্ঠানের আয়োজকদের ধন্যবাদ জানিয়ে বলেন, ‘আমি ও আমার স্ত্রীর জন্য আজকের এ অনুষ্ঠান খুবই বড় একটি সুযোগ। কারণ আমরা এখানে সবার সঙ্গে মিলিত হতে পেরেছি। ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশের পক্ষ থেকে এটিই প্রথম উৎসব আয়োজন। এ অনুষ্ঠানের মাধ্যমে আমাদের পারস্পরিক মিলিত হওয়ার সুযোগ তৈরি হয়েছে, যা আমাদের সম্পর্ক উন্নয়নে ভূমিকা রাখবে। এমন সুন্দর একটি সন্ধ্যা উপহার দেওয়ার জন্য আয়োজকদের বিশেষভাবে ধন্যবাদ।’

ইন্ডিয়ান অ্যাসোসিয়েশন অব বাংলাদেশ এ দেশে ভারতীয় সংস্কৃতি প্রসারে বিশেষ ভূমিকা রেখে চলেছে উল্লেখ করে হাইকমিশনার প্রণয় কুমার ভার্মা বলেন, ‘ভারতীয় হাইকমিশনের কাজ আরও গতিশীল করতে পারস্পরিক বন্ধুত্ব ও সহযোগিতা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এ জন্য আমি ভারতীয় কমিউনিটির এই আয়োজনকে উৎসাহিত করতে চাই। আপনারা সবাই এখানে ভারতকে প্রতিনিধিত্ব করছেন। আপনাদের যে কোনো প্রয়োজনে অবশ্যই হাইকমিশন সহযোগিতা করবে। আপনাদের জন্য হাইকমিশনের দরজা সব সময় খোলা। আপনারা ভারতীয় হাইকমিশনকে নিজের ঘর মনে করবেন।’ বাংলাদেশে অবস্থানরত ভারতীয়দের এক ছাতার নিচে মিলিত হওয়ার জন্য আইএবিডি কাজ করবে বলে তিনি আশা প্রকাশ করেন।

বসুন্ধরা গ্রুপের ব্যবস্থাপনা পরিচালক সায়েম সোবহান আনভীর বলেন, ‘বাংলাদেশে দিওয়ালির এমন আয়োজন সত্যি চমকপ্রদ। এমন একটি আয়োজনে আসতে পেরে আমি অত্যন্ত আনন্দিত। আশা করব, এ আয়োজন আপনাদের সবার হৃদয়ে আনন্দ-খুশির উচ্ছলতা বয়ে আনবে।’

আয়োজক সংগঠনের সভাপতি অজয় আগল বলেন, ‘এ উৎসব সুখ ও সমৃদ্ধির প্রতীক। শহরের অলিগলি সেজে ওঠে আলোর মালায়। রকমারি আলো, প্রদীপ, মোমের আলোর রোশনাইতে চারদিকের অন্ধকার ঘুচে যায়। প্রার্থনা করি, এ দীপাবলিতে আপনাদের জীবনের সব প্রতিবন্ধকতা কেটে যাক। শুভারম্ভ হোক আপনাদের সবার জীবনে।’

অনুষ্ঠানের মূল আকর্ষণ ছিলেন ইন্ডিয়ান আইডল অভিজিৎ সাওয়ান্ত। মিলনায়তনে সুরের মূর্ছনা ছড়িয়ে দর্শক-শ্রোতাদের আপ্লুত করেন ভারতীয় এই মিউজিক সেনসেশন।