অর্থনীতি

পুঁজিবাজারের জন্য বিশেষ তহবিল না থাকায় ৪ ব্যাংকের ব্যাখ্যা তলব

পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের জন্য দেশের সব তফসিলি ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠনে ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি একটি নির্দেশনা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। পুঁজিবাজারের তারল্য প্রবাহ বাড়াতে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের (বিএসইসি) সঙ্গে আলোচনা করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক এ উদ্যোগ নিয়েছে।

ইতোমধ্যে বিশেষ তহবিল গঠন করে বেশকিছু ব্যাংক ২০০ কোটি টাকা এবং কিছু ব্যাংক ২০০ কোটি টাকার কম পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করেছে। কিন্তু, পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত চারটি ব্যাংক এখনো কোনো ধরনের বিশেষ তহবিল গঠন করেনি। কেন্দ্রীয় ব্যাংকের নির্দেশনা থাকা সত্বেও এত দীর্ঘ সময়ে এ বিশেষ তহবিল গঠন না করার বিষয়ে ব্যাংকগুলোর কাছে ব্যাখ্যা চেয়েছে বিএসইসি। ব্যাংকগুলো হলো—ডাচ-বাংলা ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক।

সম্প্রতি এ বিষয়ে পৃথক পৃথক চিঠি ব্যাংকগুলোর ব্যবস্থাপনা পরিচালকের পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে। ব্যাংকগুলোকে আগামী সাত কার্যদিবসের মধ্যে এর ব্যাখ্যা দিতে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের জারি করা নির্দেশনার বিষয়টি উল্লেখ করে ব্যাংকগুলোকে দেওয়া বিএসইসির চিঠিতে উল্লেখ করা হয়েছে, দেশের সব তফসিলি ব্যাংককে পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের লক্ষ্যে ও তারল্য বৃদ্ধিতে ২০০ কোটি টাকার একটি বিশেষ তহবিল গঠন করার অনুমতি দিয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। কমিশন বাংলাদেশ ব্যাংকের উদ্যোগের প্রশংসা করে এবং এ উদ্যোগে তফসিলি ব্যাংকের অংশগ্রহণেরও প্রশংসা করে। কিন্তু, বাংলাদেশ ব্যাংকের সার্কুলার অনুযায়ী ডাচ-বাংলা ব্যাংক, আইসিবি ইসলামী ব্যাংক, স্ট্যান্ডার্ড ব্যাংক ও ন্যাশনাল ব্যাংক এখনো বিশেষ তহবিল গঠন করেনি। তাই, এ বিষয়ে ব্যাংককে এই চিঠি প্রাপ্তির সাত কার্যদিবসের মধ্যে ব্যাখ্যা দেওয়ার নির্দেশ দেওয়া যাচ্ছে।

২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি শেয়ারবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশে বিশেষ তহবিল গঠন এবং বিনিয়োগের নীতিমালা বিষয়ে নির্দেশনা জারি করে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। ব্যাংকগুলো ২০২৫ সালের ১৩ জানুয়ারি পর্যন্ত রেপোর মাধ্যমে এই সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে বলে নির্দেশনায় উল্লেখ করা হয়। তবে, ২০২১ সালের ২৭ সেপ্টেম্বর প্রতিটি তফসিলি ব্যাংকে গঠিত ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের মেয়াদ বাড়িয়েছে কেন্দ্রীয় ব্যাংক। নির্দেশনায় বলা হয়েছে, পুঁজিবাজারে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে তহবিল গঠন এবং বিনিয়োগের নীতিমালা সম্পর্কে ২০২০ সালের ১০ ফেব্রুয়ারি জারি করা নির্দেশনায় আংশিক সংশোধন করা হয়েছে। সংশোধিত নির্দেশনা অনুযায়ী, বেসরকারি উদ্যোক্তা কর্তৃক নবায়নযোগ্য জ্বালানি খাতে বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে বিএসইসি’র অনুমোদিত ও স্পেশাল পারপাস ভেহিকল (এসপিভি) ইস্যুকৃত গ্রিন সুকুক বন্ডে বর্ণিত বিশেষ তহবিল থেকে বাংলাদেশ ব্যাংক নির্দেশিত পন্থায় তফসিলি ব্যাংকের বিনিয়োগের মেয়াদ ২০২৮ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।

এছাড়া, নির্দেশনায় পুঁজিবাজারের বিনিয়োগের উদ্দেশ্যে প্রতিটি ব্যাংককে ২০০ কোটি টাকার বিশেষ তহবিল গঠন করার সুযোগ দেয় বাংলাদেশ ব্যাংক। বিশেষ তহবিলের আওতায় পুঁজিবাজারে বিনিয়োগ করা অর্থ ব্যাংকের এক্সপোজার হিসেবে গণ্য করা হবে না। ব্যাংকগুলো নিজস্ব অর্থ ছাড়াও ট্রেজারি বিল বা ট্রেজারি বন্ড রেপোর মাধ্যমে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে তহবিল গঠন করেছে। এই সুবিধার মেয়াদ ছিল ২০২৫ সালের ফেব্রুয়ারি পর্যন্ত। তা বাড়িয়ে ২০২৮ সাল পর্যন্ত করা হয়েছে।