আগামী ২০২৫-২৬ অর্থ বছরের প্রস্তাবিত বাজেটে দরিদ্র জনগোষ্ঠীর বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা দেওয়ার জন্য অতিরিক্ত ৪ হাজার ১৬৬ কোটি টাকা এবং সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির জন্য এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করা হয়েছে।
সোমবার (২ জুন) বিকেল ৩টায় অন্তর্বর্তী সরকারের অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বাজেট উপস্থাপন করেন।
বাজেট বক্তৃতায় অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “২০৩০ সালের মধ্যে সব নাগরিককে সার্বজনীন স্বাস্থ্যসেবার আওতায় আনতে সেবার পরিধি বৃদ্ধি, অবকাঠামো উন্নয়ন ও দক্ষ জনবল নিয়োগে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। স্বাস্থ্য খাতের শূন্য পদ পূরণে চিকিৎসক, সেবিকা, টেকনিশিয়ান, ফার্মাসিস্ট ও স্বাস্থ্য সহকারীদের নিয়োগ ত্বরান্বিত করা হয়েছে। প্রয়োজনীয় পদ সৃষ্টির সমন্বিত পরিকল্পনা গ্রহণ করা হয়েছে।”
তিনি বলেন, “দরিদ্র জনগোষ্ঠীর স্বাস্থ্য সেবা নিশ্চিত করতে আগামী অর্থবছরে তাদের বিনামূল্যে চিকিৎসা সেবা প্রদানের লক্ষ্যে অতিরিক্ত ৪ হাজার ১৬৬ কোটি টাকা এবং সম্প্রসারিত টিকাদান কর্মসূচির জন্য এক হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ রাখার প্রস্তাব করছি।”
ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ বলেন, “উন্নত দেশগুলোর চাহিদা অনুযায়ী কেয়ারগিভার খাতে দক্ষ মানবসম্পদ তৈরি করা সম্ভব হলে বৈদেশিক কর্মসংস্থানের সুযোগ প্রসারিত হবে। একইসঙ্গে প্রবাস আয় অর্জনের নতুন দ্বার উন্মোচিত হবে। এ জন্য কেয়ারগিভারদের জন্য প্রয়োজনীয় প্রশিক্ষণ দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। পাশাপাশি নার্সিং শিক্ষায় পিএইচডি কোর্স চালু এবং আন্তর্জাতিক মানের প্রশিক্ষণ দেওয়ার জন্য একটি নার্স শিক্ষক প্রশিক্ষণ কেন্দ্র প্রতিষ্ঠার বিষয় বিবেচনায় রয়েছে।”
অর্থ উপদেষ্টা বলেন, “জাতীয় উন্নয়নে স্বাস্থ্য খাতের গুরুত্ব বিবেচনায় ২০২৫-২৬ অর্থবছরে স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রণালয়ের জন্য ৪১ হাজার ৯০৮ কোটি টাকা বরাদ্দের প্রস্তাব করছি। ২০২৪-২৫ অর্থবছরের বাজেটে এ বাবদ বরাদ্দ ছিল ৪১ হাজার ৪০৭ কোটি টাকা।”
আগামী অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটের আকার ৭ লাখ ৮৯ হাজার ৯৯৯ কোটি টাকা। প্রস্তাবিত বাজেটে রাজস্ব বাজেটের আকার ৫ লাখ ৭৪ হাজার কোটি টাকা।
সোমবার দুপুরে রাজধানীর তেজগাঁওয়ে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়ে উপদেষ্টা পরিষদ সদস্যদের বিশেষ বৈঠকে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট অনুমোদন দেওয়া হয়। বৈঠকে সভাপতিত্ব করেন অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। এটি অন্তর্বর্তী সরকারের প্রথম ও দেশের ইতিহাসে ৫৪তম বাজেট।