কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের চলমান আন্দোলনে রাজস্ব আদায়ে কিছুটা সমস্যা হচ্ছে বলে জানিয়েছেন জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) চেয়ারম্যান মো. আবদুর রহমান খান।
বৃহস্পতিবার (২৬ জুন) রাজধানীর পুরানা পল্টনে ইকোনমিক রিপোর্টার্স ফোরাম (ইআরএফ) অডিটোরিয়ামে ‘প্রান্তিক জনগোষ্ঠীর খাদ্য নিরাপত্তা ও ভ্যাট’ শীর্ষক সেমিনারে এ কথা বলেন তিনি।
ইয়ুথ পলিসি নেটওয়ার্ক এ সেমিনারের আয়োজন করে। সেমিনারে ইআরএফ সাধারণ সম্পাদক আবুল কাশেমের সঞ্চালনায় স্বাগত বক্তব্য রাখেন ইআরএফ সভাপতি দৌলত আকতার মালা।
এনবিআর চেয়ারম্যানের অপসারণের দাবিতে গত ২২ জুন থেকে আন্দোলন করছে এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদ।
চলমান আন্দোলন প্রসঙ্গে এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “এনবিআর সংস্কারে অন্তর্বর্তী সরকার যে সিদ্ধান্তগুলো নিয়েছে, এটা নিয়ে আমাদের কর্মকর্তা-কর্মচারীদের কাছ থেকে অনেক দ্বিমত এসেছে। সেগুলো অ্যাড্রেস করে জুলাই মাসের মধ্যে একটা এমান্ডেন্ট করার ঘোষণা আমাদের অর্থ উপদেষ্টা দিয়েছেন।”
তিনি বলেন, “আজ এনবিআর কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের সঙ্গে আলোচনায় বসবে সরকার। এই আলোচনার মাধ্যমে একটা সিদ্ধান্ত আমরা পাব বলে আশা করছি। এরপর এটা নিয়ে অনেক... যাচ্ছে।”
আন্দোলনের কারণে রাজস্ব আদায়ে সমস্যা হচ্ছে জানিয়ে আবদুর রহমান খান বলেন, “জুন মাসের আর দুদিন আছে। প্রতি মুহূর্তে আমি কর আদায়ের পরিস্থিতি দেখি। গতকাল পর্যন্ত তিন লাখ ৫৩ হাজার কোটি টাকার কর আদায় হয়েছে। এবার আমাদের জিডিপির গ্রোথটা কম। গতবারের চেয়ে সিগনিফিকেন্ট গ্রোথ হবে আশা করছি। আন্দোলনের কারণে কিছুটা তো হ্যাম্পার হচ্ছেই।”
তিনি বলেন, “আমরা সবাই দেশের স্বার্থে কাজ করি। আমাদের দেশের স্বার্থ নিয়ে চিন্তা করা উচিত। সংস্কার, যে কোনো আইন করি, আন্দোলন করি, যা কিছু করি প্রত্যেকটাই আমাদের নিজেদের জন্য না হয়ে যদি দেশের জন্য হয়। ছোট ভাই-বোনেরা যারা জুলাই বিপ্লবের মাধ্যমে সে স্পিরিট আমাদের মধ্যে এনেছে তা ধরে রেখে সবাই মিলে কাজ করলে নতুন বাংলাদেশ গড়ে তোলা সম্ভব।”
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “আমাদের ট্যারিফ কমাতে হবে। এবার বাজেট প্রায় আট লাখ কোটি টাকার। এর ফলে তিন লাখ কোটি টাকা ঋণ যোগ হবে। দেনা আরো বাড়ল। পরবর্তী প্রজন্মকে এই ঋণ পরিশোধ করতে হবে। আমাদের ট্যাক্স জিডিপি কম। আমরা অটোমেশন করছি।”
তিনি বলেন, “গরিব মানুষের ওপর চাপ বাড়ায় বিস্কুটে ভ্যাট ১৫ শতাংশ থেকে কমিয়ে সাড়ে ৭ শতাংশ করা হয়েছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসে ছাড় দিয়েছি।”
এনবিআর চেয়ারম্যান বলেন, “বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো বাজেটের আকার কমেছে। যাতে মানুষের ওপর চাপ না পড়ে। বাজেটের সাইজ যতটা ছোট করেছে ধরে নিতে হবে রাষ্ট্র ততটা সঞ্চয় করেছে, ততটা ঋণের চাপ থেকে কমেছে।”
তিনি জানান, গতকাল পর্যন্ত অনলাইন রিটার্ন ১৭ লাখ পার হয়েছে। গত বছর এটা ৫ লাখ ছিল। জুলাই থেকে আগামী অর্থবছরের অনলাইনে রিটার্ন দেওয়া যাবে। ন্যাশনাল সিঙ্গেল উইন্ডো ও বন্ড ম্যানেজমেন্ট সিস্টেম আধুনিক করা হয়েছে। কর যেখান থেকে নেওয়ার কথা সেখান থেকে নিতে পারলে এসব ক্ষেত্রে করছাড় দেওয়া যায়। ভোক্তারা সবসময় করছাড়ের সুবিধা পায় না।
অনুষ্ঠানে ইয়ুথ পলিসি নেটওয়ার্ক জানায়, পাউরুটি, বিস্কুটে যাতে ভ্যাট না থাকে আমরা সেটি চাই। তরুণ প্রজন্ম তথা বিশ্ববিদ্যালয় পড়ুয়া শিক্ষার্থীরা পাউরুটি খেয়ে থাকে। তাই পাউরুটি ও বিস্কুট থেকে ভ্যাট উঠিয়ে দিতে হবে।