অর্থনীতি

যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে আশাবাদী বাণিজ্য উপদেষ্টা

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে শুল্ক সংক্রান্ত আলোচনা আশাব্যঞ্জক হয়েছে বলে জানিয়েছেন বাণিজ্য উপদেষ্টা শেখ বশিরউদ্দীন।

যুক্তরাষ্ট্র সফর শেষে দেশে ফিরে সোমবার (১৪ জুলাই) সচিবালয়ে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের সম্মেলন কক্ষে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তিনি এ মন্তব্য করেন।

উপদেষ্টা বলেন, “তিন দিন খুবই ব্যস্ততা ও গুরুত্বের সঙ্গে কেটেছে। প্রায় ৩৫ থেকে ৪০ জন মার্কিন প্রতিনিধির সঙ্গে আমাদের আলোচনা হয়েছে। অনেক গঠনমূলক পরামর্শও পেয়েছি, যা আমাদের কাজে লাগবে।”

তবে আলোচনার নির্দিষ্ট বিষয়বস্তু এবং কোন কোন বিষয়ে দুই দেশ একমত হয়েছে বা মতপার্থক্য রয়ে গেছে—এমন প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, “বিষয়গুলো নন-ডিসক্লোজেবল। এ মুহূর্তে বিস্তারিত কিছু বলা যাবে না।”

যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে যৌক্তিক শুল্কহার প্রসঙ্গে এক প্রশ্নে বাণিজ্য উপদেষ্টা বলেন, “আমরা ‘শূন্য’ হারের পক্ষে। বাংলাদেশ প্রতিযোগিতামূলক মূল্যে যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে ব্যবসা করছে এবং ২০১৫ সাল থেকে শুল্ক-কর পরিশোধ করেই এ বাজারে প্রবেশ করেছে। বৈষম্যমূলক শুল্ক না হলে আমরা এ সক্ষমতা ধরে রাখতে পারবো।”

আগামী ১ আগস্ট থেকে পাল্টা শুল্ক পুনঃআরোপ নাকি নতুন কোনো শুল্কহার প্রযোজ্য হবে—এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, “তারা (যুক্তরাষ্ট্র) যৌক্তিক শুল্ক নির্ধারণ করবে বলে জানিয়েছে। কারণ, আমরা বলেছি, আমাদের প্রতিষ্ঠানগুলো তাদের নিজস্ব সক্ষমতায় ব্যবসা পরিচালনা করছে।”

চীনের সঙ্গে বাণিজ্য নিরুৎসাহিত করতে যুক্তরাষ্ট্র কোনো শর্ত দিচ্ছে কিনা—এমন প্রশ্নে তিনি উত্তর না দিয়ে বলেন, “আমরা নন-ডিসক্লোজার এগ্রিমেন্টে রয়েছি, তাই এখন এসব বিষয়ে কিছু বলছি না।”

তিনি আরো বলেন, “তিন দিনের দ্বিতীয় রাউন্ডের বৈঠক শেষে আমরা তৃতীয় রাউন্ডের প্রস্তুতির জন্য দেশে ফিরেছি। এরইমধ্যে ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের সঙ্গে বৈঠক করেছি এবং কিছু আন্তঃমন্ত্রণালয় আলোচনাও বাকি রয়েছে। সব কাজ শেষ করে আগামী সপ্তাহের মাঝামাঝি আবার যুক্তরাষ্ট্রে যাবো। আমরা সবাই মিলে চেষ্টা করছি যেন একটি ভালো ফলাফল আসে।”

সংবাদ সম্মেলনে বাণিজ্য সচিব মাহবুবুর রহমান উপস্থিত ছিলেন।

তিনি বলেন, “সর্বশেষ তিন দিনের আলোচনায় আমরা ঘনিষ্ঠভাবে যুক্ত ছিলাম। বড় কোনো শুল্কের চাপ যেন না আসে, তা নিশ্চিত করতে আমরা আন্তরিকভাবে কাজ করছি।” গত ৭ জুলাই যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে বাংলাদেশের কিছু পণ্যের ওপর ৩৫ শতাংশ পাল্টা শুল্ক পুনঃআরোপিত হয়েছে। এ নিয়ে দুদফা আলোচনা হয়েছে, যার দ্বিতীয়টি অনুষ্ঠিত হয় ৯ থেকে ১১ জুলাই।

এদিন সংবাদ সম্মেলনের আগে দেশের ব্যবসায়ী ও অর্থনীতিবিদদের সঙ্গে পৃথক বৈঠক করেন বাণিজ্য উপদেষ্টা। সেখানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র ও বাংলাদেশের মধ্যে সম্ভাব্য ‘বাণিজ্যিক সহযোগিতা কাঠামো’ এবং তার খসড়া সংযুক্ত সংযোজনীসহ আলোচিত হয়।

বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন  পলিসি এক্সচেঞ্জ বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও সিইও ড. মাসরুর রিয়াজ, সানেমের নির্বাহী পরিচালক ড. সেলিম রায়হান,  র‌্যাপিডের চেয়ারম্যান ড. মোহাম্মদ আব্দুর রাজ্জাক, অর্থনৈতিক সম্পর্ক বিভাগের কম্পোনেন্ট ম্যানেজার ড. মোস্তফা আবিদ খান, এছাড়া ব্যবসায়ী প্রতিনিধিদের মধ্যে ছিলেন এফবিসিসিআইয়ের প্রশাসক হাফিজুর রহমান, বিকেএমইএ সভাপতি মোহাম্মদ হাতেম।

ব্যবসায়ীদের পক্ষে মোহাম্মদ হাতেম বলেন, “সরকার এ বিষয়টি যথেষ্ট গুরুত্ব দিয়ে আলোচনা করছে। আমরা সন্তুষ্ট।”