দেশের পুঁজিবাজারে ওষুধ ও রসায়ন খাতে তালিকাভুক্ত কোম্পানি একমি পেস্টিসাইড লিমিটেডের পরিচালনা পর্ষদের সদস্য এবং অর্থ পরিশোধ না করা প্লেসমেন্টধারীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দুর্নীতি দমন কমিশনকে (দুদক) চিঠি দিয়ে অনুরোধ জানিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন (বিএসইসি)।
একইসঙ্গে কোম্পানির আর্থিক প্রতিবেদনে অনিয়ম ও জালিয়াতি করার অভিযোগে নিরীক্ষক শফিক বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলে (এফআরসি) চিঠি দিয়েও অনুরোধ জানিয়েছে বিএসইসি।
সম্প্রতি এ বিষয়ে দুইটি পৃথক চিঠি সংস্থাগুলোকে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে।
দুদকে দেওয়া বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের আদেশে মাধ্যমে গঠিত অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি কর্তৃক দাখিলকৃত একমি পেস্টিসাইড লিমিটেডের অনুসন্ধান ও তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন গত ১৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় কোম্পানির স্বতন্ত্র পরিচালক ব্যতিত পরিচালনা পর্ষদের সদস্যরা এবং প্রতিবেদনে উল্লিখিত প্লেসমেন্টহোল্ডার ব্যক্তি/প্রতিষ্ঠান, যারা শেয়ারের বিপরীতে কোন অর্থ পরিশোধ করেনি তাদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য তদন্ত ও অনুসন্ধান প্রতিবেদনটি দুর্নীতি দমন কমিশনে প্রেরণে করা হলো।
অভিযুক্ত কোম্পানির পরিচালকদের মধ্যে রয়েছেন- চেয়ারম্যান শান্তা সিনহা, ব্যবস্থাপনা পরিচালক, রেজা-উর-রহমান সিনহা, পরিচালক আহসান হাবিব সিনহা, কে এম হেলুয়ার, কোম্পানি সচিব সবুজ কুমার ঘোষ ও চিফ ফিন্যান্সিয়াল অফিসার সেলিম রেজা।
অভিযুক্ত প্লেসমেন্ট শেয়ারহোল্ডারদের মধ্যে রয়েছে- মো. আফজাল হোসেন, এসকে ট্রিমস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, মো. মতিউর রহমান, বিক্রমপুর পটেটো ফ্লেক্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড, তোফাজ্জল হোসেন ফরহাদ, জাভেদ এ মাতিন, বেঙ্গল অ্যাসেটস হোল্ডিংস লিমিটেড, চট্টগ্রাম পেস্টিসাইডস অ্যান্ড ফিশারিজ লিমিটেড, হেরিটেজ ক্যাপিটাল ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, এনআরবি ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, আঞ্জুমান আরা বেগম, ব্রিগেডিয়ার জেনারেল শেখ মোহাম্মদ সারওয়ার, এনআরবি ইক্যুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, তৌহিদা আক্তার, মো. রুহুল আজাদ এবং রানু ইসলাম।
অপরদিকে এফআরসিকে দেওয়া বিএসইসির চিঠিতে বলা হয়েছে, বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ আ্যন্ড এক্সচেঞ্জ কমিশনের আদেশের মাধ্যমে গঠিত অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটি কর্তৃক দাখিলকৃত একমি পেস্টিসাইডের অনুসন্ধান ও তদন্ত প্রতিবেদনের ভিত্তিতে কমিশন গত ১৬ সেপ্টেম্বর অনুষ্ঠিত সভায় কোম্পানির প্রাথমিক গণপ্রস্তাবের (আইপিও) তহবিল ব্যবহারে অসঙ্গতি থাকলেও, তহবিল ব্যবহার প্রতিবেদনে তা যথাযথভাবে উল্লেখ না করায় নিরীক্ষক শফিক বসাক অ্যান্ড কোং চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য বিষয়টি ফাইনান্সিয়াল রিপোর্টিং কাউন্সিলে প্রেরণ করা হলো।
এ বিষয়ে জানতে বিএসইসির পরিচালক ও মুখপাত্র মো. আবুল কালামের সঙ্গে একাধিকবার যোগাযোগ করা হলেও তিনি কল রিসিভ করেননি।
গত ১৬ সেপ্টেম্বর একমি পেস্টিসাইডস লিমিটেডের বিভিন্ন অনিয়ম ও অভিযোগের পরিপ্রেক্ষিতে গঠিত অনুসন্ধান ও তদন্ত কমিটির প্রতিবেদনের ভিত্তিতে প্রতিষ্ঠানটির চার পরিচালক, সচিব, প্রধান অর্থ কর্মকর্তাসহ ১৫ ব্যক্তি এবং ৭ প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে দুদক ও এফআরসিতে তদন্ত প্রতিবেদন পাঠানোর সিদ্ধান্ত নেয় বিএসইসি।