যেকোনো ছেঁড়া-ফাটা, ত্রুটিপূর্ণ, আগুনে পোড়া টাকার নোটের ৯০ শতাংশের বেশি অক্ষত থাকলেই নোটের পুরো মূল্য ফেরত পাবেন গ্রাহকরা। ব্যাংকগুলোর যেকোনো শাখায় এসব ত্রুটিপূর্ণ নোটের বিনিময় মূল্য পাবেন গ্রাহকরা। এই সেবা না দিলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
বাংলাদেশ ব্যাংকের কারেন্সি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ নতুন নীতিমালা-সংক্রান্ত প্রজ্ঞাপন গত সোমবার জারি করেছে। গত ৯ অক্টোবর বাংলাদেশ ব্যাংক নতুন নোট রিফান্ড রেগুলেশন্স জারি করে। এর ধারবাহিকতায় বাজারে অপ্রচলনযোগ্য, ছেঁড়া, ফাটা বা ত্রুটিযুক্ত নোট বিনিময়ে এই নতুন নীতিমালা করা হয়েছে।
ছেঁড়া-ফাটা, ত্রুটিপূর্ণ নোট, দাবিযোগ্য নোট গ্রহণ এবং তার বিনিময়মূল্য প্রদান ও নিষ্পত্তি প্রসঙ্গে নতুন নীতিমালায় বলা হয়েছে, জনসাধারণের স্বাভাবিক ও সুষ্ঠু নগদ লেনদেন অব্যাহত রাখার স্বার্থে ব্যাংকের শাখার মাধ্যমে বিধি মোতাবেক ছেঁড়া-ফাটা, ত্রুটিপূর্ণ ও ময়লাযুক্ত নোটের বিনিময়মূল্য প্রদান ও দাবিযোগ্য নোট-সংক্রান্ত সেবা নিয়মিতভাবে প্রদান করবে।
এ ধরনের সেবা প্রদানে কোনো ব্যাংক ও ব্যাংকের শাখা অনীহা পরীলক্ষিত হলে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেবে কেন্দ্রীয় ব্যাংক।
নোটের ব্যবহার উপযোগিতা ও বৈশিষ্ট্যের ওপর ভিত্তি করে প্রচলনে থাকা নোটগুলোকে পাঁচ শ্রেণিতে ভাগ করা হয়েছে। এর মধ্যে পুনঃপ্রচলনযোগ্য নোট, অপ্রচলনযোগ্য নোট, ছেঁড়া-ফাটা বা ত্রুটিপূর্ণ নোট, দাবিযোগ্য নোট ও আগুনে পোড়া নোট রয়েছে।
ব্যাংকের শাখায় অপ্রচলনযোগ্য ও ছেঁড়া-ফাটা বা ত্রুটিপূর্ণ নোটের সম্পূর্ণ বিনিময়মূল্য প্রদানযোগ্য।
প্রযোজ্য ক্ষেত্রে যে ব্যবস্থা অনুসরণ করতে হবে ব্যাংক শাখার ক্ষমতাপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (রাষ্ট্রীয় মালিকানাধীন ব্যাংকের ক্ষেত্রে ন্যূনতম প্রথম শ্রেণির কর্মকর্তা এবং বেসরকারি ব্যাংকের ক্ষেত্রে পদমর্যাদার দিক থেকে উক্ত মর্যাদার সমান) নিশ্চিত হবেন যে, উপস্থাপিত নোটে আসল নোট হিসেবে সন্দেহাতীতভাবে শনাক্ত হওয়ার মতো পর্যাপ্ত নিরাপত্তাবৈশিষ্ট্য রয়েছে এবং নোটটিতে সম্পূর্ণ নোটের ৯০ শতাংশের বেশি অংশ বিদ্যমান। ৯০ শতাংশের বেশি অংশ বিদ্যমান থাকলে বিনিময় মূল্যের পুরো অর্থ গ্রাহককে তাৎক্ষণিকভাবে দিতে হবে।
তবে ৯০ শতাংশ বা তার কম অংশ বিদ্যমান কিংবা অতিরিক্ত ময়লাযুক্ত নোটকে ‘দাবিযোগ্য’ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়েছে। এসব নোটের বিনিময় মূল্য ব্যাংক সরাসরি দিতে পারবে না। আবেদন পাওয়ার পর বাংলাদেশ ব্যাংক পর্যালোচনা করে বিনিময় মূল্য দেওয়া যাবে কি না বা কত শতাংশ দেওয়া হবে, সে সিদ্ধান্ত সর্বোচ্চ ৮ সপ্তাহের মধ্যে সংশ্লিষ্ট ব্যাংককে জানাবে।
এ ছাড়া আগুনে পোড়া নোটের ক্ষেত্রে ব্যাংক কোনো বিনিময় মূল্য দিতে পারবে না। এসব নোটের জন্য গ্রাহককে সরাসরি বাংলাদেশ ব্যাংকের যেকোনো শাখা অফিসে আবেদন করতে হবে। প্রয়োজনীয় যাচাই শেষে বাংলাদেশ ব্যাংকই এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত জানাবে।
প্রজ্ঞাপনে আরো বলা হয়েছে, প্রতিটি ব্যাংকের প্রতিটি শাখার দৃশ্যমান স্থানে ‘ছেঁড়া-ফাটা বা ত্রুটিপূর্ণ নোট বিনিময় ও দাবিযোগ্য নোটসংক্রান্ত সেবা প্রদান করা হয়’ মর্মে নোটিশ টানাতে হবে। কোনো গ্রাহক জাল নোট বা ভিন্ন নোটের অংশ জোড়া দিয়ে উপস্থাপন করলে প্রচলিত আইন অনুযায়ী তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।