অর্থনীতি

আবারও বাড়ল পেঁয়াজের দাম

অর্থনৈতিক রিপোর্টারঢাকা, ৪ আগস্ট : ঈদ সামনে রেখে পেঁয়াজের দাম আবারও বাড়লো। কেজিতে ৫ টাকা বেড়ে খুঁচরা বাজারে দেশী পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়।

দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। তবে চলতি সপ্তায় আরও কমেছে ছোলার দাম।

বাজার ভেদে প্রতিকেজি ছোলা বিক্রি হচ্ছে ৪৫-৫০ টাকায়। চিনি, ডাল, ভোজ্যতেল, চাল ও আটা বিক্রি হচ্ছে আগের দামে। কেজি প্রতি ১০ টাকা দাম বেড়েছে ব্রয়লার মুরগীর।   

তবে ঈদে মসলা জাতীয় পণ্যের দাম না বাড়ানোর জন্য ব্যবসায়ীদের দিকে সতর্ক দৃষ্টি রাখছে  বাণিজ্য মন্ত্রণালয়ের দ্রব্যমূল্য মনিটরিং টিম। মসলা জাতীয় পণ্যের বাজারে পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। কিন্তু তারপরও আদা, রসুন এবং জিরার মতো মসলার দাম বাড়ানোর অপচেষ্টা চলছে।

প্রতি কেজি আমদানিকৃত আদা এখন ১০০-১২০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে যা স্বাভাবিকের চেয়ে বেশি।শুক্রবার রাজধানীর কাপ্তান, মালিবাগ, শান্তিনগর এবং ফকিরাপুল বাজার ঘুরে দেখা গেছে, ঈদ সামনে রেখে চিনি ও সেমাইয়ের পাশাপাশি মসলা জাতীয় পণ্যের বেচাবিক্রি বেড়েছে। আর এক্ষেত্রে পেঁয়াজের দাম সবচেয়ে বেশি।

খুচরা বাজারে বর্তমান দেশী ও আমদানিকৃত দু’ধরনের পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে। এর মধ্যে দেশী পেঁয়াজের দাম সবচেয়ে বেশি। প্রতি কেজি পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৫০ টাকায়। অথচ চলতি সপ্তাহের শুরুতে এ পেঁয়াজ ৪৪-৪৫ টাকায় বিক্রি হয়েছে।

আমদানিকৃত ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে ৪৪-৪৫ টাকায়। যা এক সপ্তাহ পূর্বে ৪০-৪২ টাকায় বিক্রি হয়েছে। পেঁয়াজের বাজারে এসে তাই বিরক্ত সাধারণ ও নিম্ন আয়ের ভোক্তারা।

শান্তিনগর বাজারে পেঁয়াজ কিনতে এসে রীতিমতো ক্ষোভ প্রকাশ করলেন রাজারবাগের বাসিন্দা তৌফিক হাসান।

তিনি বলেন, রোজায় সবচেয়ে বেশি ব্যবহার হয় এমন সব পণ্যের দাম যখন কমছে তখন শুধু পেঁয়াজের দাম বেড়ে যাচ্ছে। নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে পেঁয়াজের দাম।

তিনি বলেন, পেঁয়াজের দাম নিয়ন্ত্রণে সরকারের সব ধরনের পদক্ষেপ নেয়া প্রয়োজন। ঈদ সামনে রেখে যেভাবে পেঁয়াজের দাম বাড়ছে তা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব না হলে ভোক্তাদের হয়তো স্বাভাবিকের চেয়ে অনেক বেশি দাম দিয়ে পেঁয়াজ কিনতে হবে।

এদিকে, আমদানির পরিমাণ ভালো এবং সরবরাহ স্বাভাবিক থাকায় ঈদ সামনে রেখে পেঁয়াজ, রসুন, আদা, হলুদ, শুকনা মরিচ, ও গরম মসলার সরবরাহ ও মূল্য স্থিতিশীল থাকবে বলে মনে করছে বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

কিন্তু চাহিদাকে পুঁজি করে ইতোমধ্যে পেঁয়াজসহ কয়েকটি মসলা জাতীয় পণ্যের দাম বেড়েছে। কয়েকটি পণ্যের দাম বাড়ার আভাস পাওয়া গেছে।

এদিকে, রোজা শুরুর আগে পেঁয়াজসহ মসলাজাতীয় পণ্যের সরবরাহ ও মূল্য যাতে কোন কারণে অস্বাভাবিক না হয় সেজন্য ব্যবসায়ী ও সংশ্লিষ্ট সকলকে সতর্ক থাকার নির্দেশ দিয়েছিল বাণিজ্য মন্ত্রণালয়।

দাম বাড়িয়ে বাজারমূল্য স্বাভাবিক রাখতে ব্যবসায়ীদের সহযোগীতাও চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু পেঁয়াজ ব্যবসায়ের সঙ্গে জড়িত আমদানিকারক, আড়ৎমালিক, পাইকার এমনকি খুচরা ব্যবসায়ীরা কোন কথা রাখছে না। ফলে পেঁয়াজের দাম বেড়েই যাচ্ছে।

এদিকে, বাজারে প্রতি কেজি আমদানিকৃত রসুন ৬৫-৭০, রসুন দেশী ৭০-৭৫, আদা মানভেদে ৯০-১২০, শুকনো  মরিচ ১৫০-১৮০, জিরা কেজি ৩৮০-৪৫০, দারুচিনি ২৩০-২৫০, লবঙ্গ ১৫০০-১৬০০, এলাচ ১২০০-১৫০০, ধনে ৬০-৬৫ এবং তেজপাতা ১৭০-১৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে।

বাজার ঘুরে দেখা গেছে, পেঁয়াজ ছাড়া অন্যসব ভোগ্যপণ্যের দাম স্বাভাবিক রয়েছে। স্থিতিশীল রয়েছে শাক-সবজির দাম। তবে ব্রয়লার মুরগীর দাম বেড়েছে। প্রতিকেজি ব্রয়লার মুরগী বিক্রি হচ্ছে ১৫০-১৬০ টাকায়।

 

রাইজিংবিডি/ এমএএস