সম্পাদকীয়

নিত্যপণ্যের দাম বৃদ্ধি রোধে ব্যবস্থা নিন

বাজারে নিত্যপণ্যের দাম বেড়ে চলেছে। নাগালের বাইরে চলে যাচ্ছে পেঁয়াজ ও সবজির দাম। ঢাকার খুচরা বাজারে প্রতি কেজি দেশি পেঁয়াজের দাম ৫৫ টাকায় উঠেছে। অন্যদিকে ভারতীয় পেঁয়াজ বিক্রি হচ্ছে কেজিপ্রতি ৫০ টাকা দরে। তিন দিন আগে একদিনেই ভারতীয় পেঁয়াজের দাম কেজিপ্রতি ১০ টাকা পর্যন্ত বেড়েছে। আর গত এক মাসে পেঁয়াজের দাম বেড়েছে প্রায় ৭৫ শতাংশ । শুধু পেঁয়াজ নয়, চালের বাজারও ঊর্ধ্বমুখী। গত সপ্তাহে খুচরা বাজারে মোটা চাল কেজিপ্রতি বেড়েছে ২ থেকে ৩ টাকা।  বাজার সংশ্লিষ্টরা দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা করছেন। একই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অন্যান্য নিত্যপণ্যের দামও বাড়ছে। ৫০/৬০ টাকার নিচে মিলছে না সবজি। বিক্রেতারা এ জন্য লাগাতার বৃষ্টিকে দায়ী করছেন। কিন্তু দ্রব্যমূল্যের ঊর্ধ্বগতিতে নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে সাধারণ মানুষের জীবনযাত্রায়। দেশে বছরে পেঁয়াজের চাহিদা আছে ২২ লাখ টন। এর মধ্যে ১৮ লাখ টন উৎপাদিত হয় দেশে। বাকি ঘাটতি মেটাতে ভারত থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হয়। যত দূর জানা গেছে, অস্বাভাবিক বন্যার কারণে ভারতেও এবার পেঁয়াজের দাম বেড়েছে। সরকার তরফে অবশ্য মিশর থেকে পেঁয়াজ আমদানি করা হচ্ছে বলে জানানো হয়েছে। এদিকে অভ্যন্তরীণ বাজারে চালের দাম স্থিতিশীল রাখতে নতুন করে থাইল্যান্ড থেকে চাল আমদানির পরিকল্পনা করা হয়েছে। বাণিজ্য মন্ত্রণালয় সংসদীয় কমিটিকে জানিয়েছে, চালের আমদানি শুল্ক কমিয়ে পাঁচ শতাংশ করা হচ্ছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশে ধর্মীয় অনুষ্ঠান উপলক্ষে নিত্যপণ্যের মূল্য কমানো হয়। কিন্তু আমাদের দেশে বিরাজ করে এর উল্টো পরিস্থিতি। প্রতিযোগিতা চলে কে কত দাম বাড়িয়ে হাতিয়ে নেবে বেশি মুনাফা। ফলে বাজার অস্থিতিশীল হয়ে পুরো চাপ পড়ে সাধারণ ভোক্তার ঘাড়ে। প্রায়ই দেখা যায় বিশেষ পরিস্থিতি কিংবা কোনো একটি উপলক্ষে বাজারে অস্থিরতা বা সংকট তৈরি করা হয়। কৃত্রিম সঙ্কট সৃষ্টি করে বাড়ানো হয় পণ্যের দাম। সময়, চাহিদা ও সুযোগ বিবেচনায় নিয়ে বিশেষ কোন পণ্যকে টার্গেট করে হাতিয়ে নেওয়া হচ্ছে অতিরিক্ত মুনাফা। অভিযোগ রয়েছে সিন্ডিকেট করে বাজারে পণ্যের মূল্য বাড়িয়ে দেওয়া হয়।  কিন্তু এর অবসান হওয়া জরুরি। বাজারের অস্থিরতা দূর করতে হলে অবশ্যই অসাধু ব্যবসায়ী সিন্ডিকেট দমন করতে হবে। সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে নিত্যপণ্যের বাজারে কেউ যেন কারসাজি না করে সেদিকে নজর দিতে হবে। খাদ্য মন্ত্রণালয়কে বাজার মনিটরিং ব্যবস্থা আরও জোরদার করতে হবে । নিত্য প্রয়োজনীয় পণ্যের দাম বাড়লে সাধারণ মানুষের কষ্ট আরো বেড়ে যায়। আমাদের প্রত্যাশা নীতি নির্ধারকরা জনগণের ভোগান্তি লাঘবে দ্রুত পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন। যারা অনিয়ম করছেন তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ জরুরি। আমাদের প্রত্যাশা অতি মুনাফালোভী ব্যবসায়ীদের লাগাম টেনে ধরতে সরকার কঠোর পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। প্রয়োজনে তাদের আইনের আওতায় আনতে হবে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১২ আগস্ট ২০১৭/আলী নওশের