শিক্ষা

‘শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রকৃত শিক্ষা কার্যক্রম নেই’

নিজস্ব প্রতিবেদক : দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রকৃত শিক্ষা কার্যক্রম নেই বলে মন্তব্য করেছেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন শিক্ষক অধ্যাপক আবুল কাসেম ফজলুল হক। শুক্রবার বিকেলে জাতীয় প্রেসক্লাবের ভিআইপি লাউঞ্জে ‘জাতীয় শিক্ষানীতি ২০১০ এবং শিক্ষা আইন ২০১৬’ নিয়ে আয়োজিত এক আলোচনা সভায় দেওয়া বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন। আলোচনা সভার আয়োজন করে নাগরিক ভাবনা নামের একটি সংগঠন। এতে মূল বক্তব্য উপস্থাপন করেন আবুল কাসেম ফজলুল হক। আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, দেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রকৃত শিক্ষা কার্যক্রম নেই। দেশে এখন পরীক্ষাসর্বস্ব শিক্ষাব্যবস্থা চলছে। শিক্ষা আর পরীক্ষার ফলকে এক করে ফেলা হয়েছে। সৃজনশীল পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবিমুখ করছে। তিনি বলেন, শিক্ষাব্যবস্থা সম্পর্কে বাংলাদেশের সংবিধানে কিছু কথা লেখা আছে। কোনো সরকারই সেগুলো মানছে না। বাংলাদেশের প্রাথমিক শিক্ষা এখন ১৪ ভাগে বিভক্ত। এটা সংবিধান ও রাষ্ট্রের স্বার্থের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। জাতীয় শিক্ষানীতিতে কী লেখা আছে, সেটা বড় কথা নয়, বাস্তবে শিক্ষাব্যবস্থার রূপ ও   প্রকৃতি কেমন হচ্ছে, সেটাই বড় কথা। আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, ‘আট বছর ধরে মাদ্রাসা শিক্ষার আধুনিকায়নে অতিরিক্ত গুরুত্ব দিতে গিয়ে মূলধারার প্রতি উদাসীনতা শিক্ষাব্যবস্থাকে জটিল করে তুলেছে। প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে ধর্মশিক্ষা থাকলেও নৈতিক শিক্ষা নেই।’ তিনি বলেন, বাংলাদেশের শিক্ষাব্যবস্থা নানা ধারা-উপধারায় এমনভাবে বিভক্ত যে তা জাতি ও রাষ্ট্র গঠনের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। কথিত সৃজনশীল পদ্ধতি শিক্ষার্থীদের শিক্ষাবিমুখ, জ্ঞানবিমুখ করছে। দেশের কলেজ ও বিশ্ববিদ্যালয় পর্যায়ে উচ্চশিক্ষার অবস্থাও ভালো নয় বলে মনে করেন আবুল কাসেম ফজলুল হক। তিনি বলেন, শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানগুলোতে প্রকৃত শিক্ষা কার্যক্রম নেই। শিক্ষাব্যবস্থা নিয়ে যত আলোচনা হবে, ততই এর ত্রুটি-বিচ্যুতিগুলো বেরিয়ে আসবে উল্লেখ করে আবুল কাসেম ফজলুল হক বলেন, শিক্ষা আইন, ২০১৬ পড়তে গেলে জাতীয় শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থার অত্যন্ত জটিল ও ভয়াবহ চিত্র সামনে আসে। গোটা নীতি ও ব্যবস্থাকে বুঝে ওঠা অত্যন্ত কঠিন। বাংলা মাধ্যম ও বাংলা ভাষাকে শিক্ষায় অগ্রাধিকার দেওয়ার পরামর্শ দিয়ে ১০ দফা সুপারিশ করেন তিনি। এছাড়া ইংলিশ ভার্সন বিলুপ্ত, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক পর্যায়ে বাংলা ভাষা শেখার ব্যবস্থাকে উন্নত করা এবং শিক্ষানীতি ও শিক্ষাব্যবস্থাকে পুনর্গঠন করার কথাও বলেন তিনি। তবে সবকিছুর জন্য জনসাধারণকে জাগতে হবে বলে মনে করেন তিনি। সংগঠনটির আহ্বায়ক হাবিবুর রহমানের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য দেন নাগরিক ভাবনার উপদেষ্টা প্রকৌশলী ইনামুল হক, রাজীব শেখ, রাজনীতিবিদ দেলওয়ার হোসেন, মোয়াজ্জেম হোসেন খান মজলিশ, মুক্তিযোদ্ধা মোতাসিম বিল্লাহ প্রমুখ। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৭ জানুয়ারি ২০১৭/মামুন খান/মুশফিক