শিক্ষা

ক্যাম্পাসের নিরাপত্তা চায় ঢাবি শিক্ষার্থীরা

নিজস্ব প্রতিবেদক : কোটা সংস্কার আন্দোলনে হামলা, মামলা, গ্রেপ্তার, রিমান্ড, ছাত্র-শিক্ষকদের ওপর হামলার বিচার ও সারা দেশের ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা চেয়ে মানববন্ধন করেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সব বিভাগের শিক্ষার্থীরা। বুধবার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাদেদেশে এ মানববন্ধন হয়। এতে প্রায় চার শতাধিক শিক্ষার্থী অংশ নেন। মানববন্ধনে অংশ নিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক ড. রুশাদ ফরিদী বলেন, আজকে আমার আসার কথা ছিল না। কারণ এ নিপীড়নের ঘটনায় আমাদেরও কর্মসূচি আছে। কিন্তু শিক্ষার্থীরা ফোন করে জানিয়েছে তারা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। কিন্তু সবকিছু উপেক্ষা করে আজকের মানববন্ধন করার মধ্য দিয়ে শিক্ষার্থীরা ত্রাসের রাজত্ব ভেঙে দিয়েছে। তিনি বলেন, ভিসির বাসায় হামলাকারীদের বিচার আমরাও চাই। সেটা প্রমাণসহকারে। কিন্তু যাদের গ্রেপ্তার করা হয়েছে, তাদের কোনো প্রমাণ দেখানো হয়নি। হলের মাধ্যমে ছায়া প্রশাসন তৈরি শিক্ষার্থীদের নির্যাতন করা হয়। সমাজবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী নাহিদ ইসলাম বলেন, আমাদের সহপাঠী মশিউরকে কোনো অপরাধ ছাড়াই গ্রেপ্তার করা হয়েছে। আমরা যখন প্রক্টরকে জিজ্ঞেস করি, তিনি বলেন সেটা আইনি বিষয়। কিন্তু আমরা বলতে চাই তাকে কী আইনিভাবে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল? তাকে তো হল থেকে উঠিয়ে নিয়ে যায়। দুই দিন মানসিক ও শারীরিকভাবে নির্যাতন করে। কোটা আন্দোলন তো কোনো নিষিদ্ধ আন্দোলন নয়। আমরা কেউই মশিউরকে ছাড়া ক্লাসে যাইনি, যাবোও না। শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা দিতে প্রশাসন ব্যর্থ হয়েছে শুধু তাই নয়, শিক্ষকদের নিরাপত্তাও তারা দিতে পারেনি। বায়ো-কেমিস্ট্রি বিভাগের সাবিনা হক লাবণ্য বলেন, আমরা বুকভরা স্বপ্ন নিয়ে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছি। আজকে আমরা নিজের ক্যাম্পাসে নিরাপদ নই। এটা কখনো ভাবতে পারিনি। আমরা এই নিরাপত্তাহীনতা নিয়ে আর ভাবতে চাই না। আমাদের প্রতিবাদ অব্যাহত রাখতে হবে। আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের আন্তারা ইসলাম বলেন, আমরা আজকেও যেমন অন্যায়ের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ করছি। এটা অব্যাহত রাখতে হবে। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা তিন দফা দাবি তুলে ধরেন। দাবিগুলো হলো-ক্যাম্পাসে সাধারণ শিক্ষার্থীদের ওপর হামলায় জড়িতদের চিহ্নিত করে শাস্তি, কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের কেন গ্রেপ্তার করা হয়েছে তা প্রকাশ করা ও তাদের মুক্তি, ক্যাম্পাসে নিরাপত্তা নিশ্চিত করা। মানববন্ধনে শিক্ষার্থীরা ‘প্রক্টর, ভিসি, শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের নিরাপত্তা চাই’, ‘আগে নিরাপত্তা পরে ক্লাস’, ‘শিক্ষা ও হাতুড়ি এক সঙ্গে চলতে পারে না’, ‘উদ্বেগ উৎকণ্ঠা আর কত দিন’, শিক্ষদের ওপর হামলা কেন প্রশাসন জবাব চাই’, ‘নিপীড়নের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াও ছাত্রসমাজ’, মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার চাই, উই আর সরি স্যার, রাশেদের মুক্তি চাইসহ বিভিন্ন লেখা সংবলিত প্ল্যাকার্ড তুলে ধরেন।

     

রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ জুলাই ২০১৮/ইয়ামিন/সাইফ