শিক্ষা

এসএসসির ভুল প্রশ্নে উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থী-অভিভাবকরা

আবু বকর ইয়ামিন : ভুল প্রশ্নপত্রে এসএসসি পরীক্ষা দেওয়া শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবরা উদ্বেগ ও উৎকণ্ঠায় আছেন। চলমান এসএসসি পরীক্ষায় ইংরেজি ভার্সনের প্রশ্নপত্রে ভুলের মাত্রা বেশি। বাংলা থেকে অনুবাদ করতে গিয়ে প্রশ্নের বিষয়বস্তু পাল্টে গেছে। কোথাও কোথাও শব্দের ভুল ইংরেজি করা হয়েছে। এতে বিপাকে পড়েছে ইংরেজি ভার্সনের এসএসসি পরীক্ষার্থীরা। ফলাফলে এর প্রভাব পড়বে- এমন আশঙ্কায় আছেন তারা। তবে শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না বলে জানিয়েছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় ও ঢাকা শিক্ষা বোর্ড কর্তৃপক্ষ। ইতিমধ্যে প্রত্যেকটি পরীক্ষায় ঘটনা তদন্ত করে এর দায় দায়িত্ব নিরূপণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর বোর্ড চেয়ারম্যান অভিভাবক-পরীক্ষার্থীদের উদ্বিগ্ন না হওয়ার জন্য পরামর্শ দিয়েছেন। প্রশ্নপত্রের ভুলের বিষয়সহ পরীক্ষা ব্যবস্থাপনার নানা ত্রুটি এবারের এসএসসি পরীক্ষার শুরুর দিন থেকেই ঘটে আসছে। এ পর্যন্ত অর্ধেকের বেশী পরীক্ষা শেষ হয়েছে। আগামী ২৫ ফেব্রুয়ারি পরীক্ষার তত্ত্বীয় বিষয় শেষ হচ্ছে। এর পরই শুরু হবে ব্যবহারিক পরীক্ষা। এবার এসএসসি ও সমমান পরীক্ষায় অনিয়মিতদের প্রশ্ন নিয়মিত শিক্ষার্থীদের হাতে দেওয়া, এক বিষয়ের প্রশ্নে অন্য বিষয়ের প্রশ্ন যুক্ত হওয়া, কেন্দ্রে কম প্রশ্ন পাঠানোর কারণে ফটোকপিতে পরীক্ষা নেওয়া, ট্রেজারিতে প্রশ্ন রেখে পাশের কেন্দ্র থেকে এনে পরীক্ষা গ্রহণ, বিলম্বে পরীক্ষা শুরুসহ নানা ঘটনা ঘটেছে। অব্যবস্থাপনা ও ত্রুটির বিষয়টি এবারের পরীক্ষার পিছু ছাড়ছেই না। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের চেয়ারম্যান অধ্যাপক মু. জিয়াউল হক বাংলা ও ইংরেজী ভার্সনের প্রশ্নপত্রের ভুলে বিষয়টি স্বীকার করে বলেন, ‘ইসলাম ও নৈতিক শিক্ষা বিষয়ের প্রশ্নপত্রের কিছু ত্রুটি-বিচ্যুতি হয়েছে। এ নিয়ে উদ্বিগ্ন হওয়ার মত কিছু ঘটেনি। প্রশ্ন যেভাবে রয়েছে, উত্তর সে অনুসারেই  করতে হবে। এ ধরনের ঘটনা  নতুন বা এবার প্রথম ঘটেছে, এমনটি নয়।’ পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক অধ্যাপক তপন কুমার সরকার বলেন, ‘এবার এসএসসি পরীক্ষায় প্রশ্নপত্রে কিছু ভুল-ত্রুটি হয়েছে। বাংলা থেকে ইংরেজি অনুবাদে অর্থ পরিবর্তন হয়েছে। প্রত্যেকটি ভুল নিরূপণ করা হচ্ছে। এসব কারণে শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। প্রশ্নপত্রের ভুলের জন্য শিক্ষার্থীদের ফলাফলে প্রভাব পড়বে না।’ শিক্ষা মন্ত্রণালয়ের মাধ্যমিক ও উচ্চশিক্ষা বিভাগের সিনিয়র সচিব মো. সোহরাব হোসাইন বলেন, ‘পরীক্ষা নিয়ে অনাকাক্সিক্ষত ঘটনা ঘটেছে, সেগুলো সম্পর্কে আমরা অবহিত। প্রত্যেকটি ঘটনা তদন্ত করে এর দায় দায়িত্ব নিরূপণের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদন পাওয়ার পর দায়ীদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এ ঘটনায় শিক্ষার্থীরা কোনোভাবেই ক্ষতিগ্রস্ত হবে না। প্রশ্নপত্র অনুযায়ীই তাদের উত্তরপত্র মূল্যায়ন করা হবে।’ এবার প্রশ্ন ফাঁসের ঘটনার না ঘটলেও পরীক্ষা শুরুর আধা ঘণ্টা পর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে কথিত প্রশ্নপত্র দেখা যায়। ভুয়া প্রশ্ন বিক্রি করে প্রতারণার অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় জড়িত থাকার দায়ে দেশের বিভিন্ন স্থান থেকে কয়েকজনকে আটক করছেন আইনশৃংখলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৯/ইয়ামিন/শাহনেওয়াজ