শিক্ষা

আন্দোলনে বোরহানউদ্দিন কলেজের শিক্ষকরা

গভর্নিং বডির সভাপতি অধ্যাপক হারুনর রশিদের অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে শেখ বোরহানউদ্দিন কলেজের শিক্ষকরা আন্দোলনে নেমেছেন।

রোববার সকাল থেকে তারা অবস্থান করছেন। নিচ্ছেন না ক্লাস। এর আগে শনিবার রাতে সভাপতিকে ঘেরাও করেন শিক্ষকরা।

গভর্নিং বডির বৈঠক চলাকালে শিক্ষকরা ঘেরাও করলে বৈঠক পণ্ড হয়ে যায়। পরে রোববার সকাল ১০ টায় বৈঠক শুরুর কথা ছিল। কিন্তু শিক্ষকদের আন্দোলনের মুখে এখন পর্যন্ত বৈঠক শুরু করা যায়নি। শিক্ষকরা সভাপতির পদত্যাগ দাবি করছেন।

কলেজের শিক্ষকরা জানান, সভাপতি যোগদানের পর থেকে নানা কায়দায় ও ফন্দি করে টাকা লুটপাট করছিলেন। প্রায় ১৭ কোটি টাকায় কেরানীগঞ্জের অজপাড়া গায়ে জমি কিনেন। এ ব্যাপারে শিক্ষকদের মতামত উপেক্ষা করা হয়েছে। জমি কেনায় জাল দলিলের অভিযোগ আছে। কোনো কোনো দলিলে প্রদেয় অর্থের বেশি উল্লেখ করা হয়েছে। এভাবে জমি কেনার নামে অর্থ লুটের অভিযোগ উঠেছে। সরকারি ও জাতীয় বিশ্ববিদ্যালয়ের নিয়ম ভেঙে ৪৫ জন শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে। নিয়োগ পরীক্ষার উত্তরপত্র তাৎক্ষণিক মূল্যায়ন না করে ১৫-২০ দিন পর ফল প্রকাশ করা হয়। ফলে নিয়োগ নিয়ে প্রশ্ন আছে। তিনি প্রতি মাসে গড়ে ৬৫ হাজার টাকা কলেজ থেকে নেন। মাসে ২০-২২ দিন কলেজে ভুরি ভোজ করেন। নির্মাণসহ বিভিন্ন উন্নয়ন কাজে বেহিসাবে ব্যয়ের অভিযোগ আছে।

এমন নানা অভিযোগে শিক্ষকরা ছিলেন ক্ষুব্ধ। এর মধ্যে বানোয়াট অভিযোগে শনিবার স্থায়ী অধ্যক্ষকে বরখাস্ত করে নিজের লুটপাটের এক সাক্ষীকে অধ্যক্ষ করে বসানোর উদ্যোগ নিলে শিক্ষকরা সভাপতিকে অন্য সদস্যদেরসহ ঘেরাও করে। কিন্তু সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেয়ার চেষ্টা করলে শিক্ষকরা বৈঠকে ঢুকে পরেন। শুরু হয় বাকবিতণ্ডা। একপর্যায়ে অন্য সদস্যদের হস্তক্ষেপে সভাপতি মুক্ত হন। পরে আজ সকাল পর্যন্ত বৈঠক মুলতুবি করা হয়।

আন্দোলনকারী শিক্ষকদের একজন ইংরেজি বিভাগের সাবেক প্রধান আসমা পারভীন বলেন, ‘এই সভাপতির কাছে কলেজের সম্পদ নিরাপদ নয়। তিনি শিক্ষকদের অশোভন, আপত্তিজনক ও মানহানিকর ভাষায় গালাগাল করেন। কলেজে আসেন কেবল খাওয়ার জন্য ও বাসায় নিয়ে যাওয়ার জন্য।’

কলেজের স্টাফ কাউন্সিলের সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ খালিদ মাহমুদ বলেন, ‘সভাপতি একজন শিক্ষক। কিন্তু তার কর্মকাণ্ড শিক্ষকসুলভ নয়। সমস্ত শিক্ষক ও কর্মচারী তার পদত্যাগ চায়। সভাপতির পদত্যাগ বা অপসারণ না হওয়া পর্যন্ত শিক্ষক-কর্মচারীরা আন্দোলন করবেন।’

এ বিষয়ে জানতে চাইলে অধ্যক্ষ মো. আবদুর রহমান কলেজে দু’দিনের ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে বলেন, ‘শিক্ষকরা অন্যায়ের প্রতিবাদ করছে। তিনজন শিক্ষক প্রতিনিধির যোগসাজশে এত অপকর্ম হয়েছে যে, তারা আর এই সভাপতিকে মেনে নিতে পারছেন না।’

এ ব্যাপারে ফোন করা হলে মিটিংয়ে আছি বলে ফোন রেখে দিয়েছেন সভাপতি। ঢাকা/ইয়ামিন/হাকিম মাহি