বিনোদন

আমি ফকির হয়ে গেছি: কুদ্দুস বয়াতি

রাহাত সাইফুল : বাংলাদেশের লোকগানের জনপ্রিয় সংগীতশিল্পী কুদ্দুস বয়াতি। প্রয়াত কথাসাহিত্যিক হুমায়ূন আহমেদের একটি বিজ্ঞাপনের মাধ্যমে মিডিয়ায় পরিচিতি পান তিনি। এর পর অসংখ্য জনপ্রিয় গান গেয়ে শ্রোতাদের মনে স্থান করে নেন তিনি। বাংলাদেশ ছাড়াও ৪৭ টি দেশে স্টেজ শোয়ে গান পরিবেশন করেছেন কুদ্দুস বয়াতি। তবে এ শিল্পী এখন অনেকটাই অন্তরালে চলে গেছেন। তাকে এখন আর খুব বেশি দেখা যায় না। অভাব- অনটনের মধ্য দিয়ে তার জীবন চলছে। তাই ভালো নেই এই শিল্পী।  রাইজিংবিডির  এ প্রতিবেদকের সঙ্গে আলাপকালে এমনটাই জানান কুদ্দুস বয়াতি। কেমন আছেন জানতে চাইলে জবাবে তিনি বলেন, ‘ভালো নেই তবে ভালো থাকার চেষ্টা করছি।’ কেন ভালো নেই জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘এদেশের একজন শিল্পী হাজার হাজার মানুষকে আনন্দ দেয়। কিন্তু একজন শিল্পী কীভাবে আছেন, কীভাবে তার সংসার চলে, তার ঘরে কী ভাত আছে, সে কী খেয়ে আছে, না খেয়ে আছে। এগুলো দেখার কোনো লোক নেই। এদেশের মানুষ শুধু বিনোদন নিতে চায় কিন্তু শিল্পীদের খোঁজ নিতে রাজি না।’ তিনি আরো বলেন, ‘‘আমি গান গেয়েছি ‘এইদিন দিন নয় আরো দিন আছে’, ‘আম খাইও জাম খাইও তেঁতুল খাইওনা/ অল্প বয়সে বিয়ে করলে প্রাণে বাচতানা।’ এসব গানে সচেতনতার কথা ছিল। একতারা দোতারা নিয়ে দেশে-বিদেশে সংগ্রাম করে যাচ্ছি। শেষ পর্যন্ত আমি দেশপ্রেম নিয়ে মরতে চাই। ইতিহাসের পাতায় আমি থাকতে চাই। বিভিন্ন স্টেজে আমি সচেতনতামূলক কথা বলি। আমি প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে কয়েকবার টঙ্গিপাড়ায় গিয়েছিলাম। সেখানে গিয়ে ওনার সঙ্গে দেখা করার সুযোগ হয়নি। আমি স্বাধীনতা যুদ্ধের সময় থেকে গান করি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধুর পতাকা মাথায় নিয়ে  দেশ-বিদেশে ঘুরি কিন্তু আমি কী পেলাম?’’ ‘‘আমি এক টাকার কুদ্দুস বয়াতি। আমি আমার বংশধরদের লেখাপড়া করাচ্ছি। এখন চাকরির জন্য গেলে চাকরি পাচ্ছে না তারা। আমি ফকির হয়ে গেছি। আমার স্ত্রী হাসপাতালে ভর্তি। প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে পারলে আমি ওনাকে বলব, ‘বাংলাদেশ ঠিক রাখা, বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঠিক রাখা যেমন প্রয়োজন তেমনি আমাদের ঐতিহ্য, গান, একতারা-দোতরাও ঠিক রাখা প্রয়োজন। লোক শিল্পীরা অনেক কষ্টে আছে।’’ বলেন, কদ্দুস বয়াতি। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৮ এপ্রিল ২০১৭/রাহাত/শান্ত