বিনোদন

ঈদে সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে দাঁড়ান : প্রিয়তি

আমাদের পরিবার অনেক বড়। কারণ আমরা ছয় ভাই, দুই বোন ও তাদের সন্তান রয়েছে। তাই খুব স্বাভাবিকভাবেই আব্বার দায়িত্ব অনেক বেশি ছিল। ছোটবেলা আব্বাকে দেখেছি- তিনি সবাইকে কিছু না কিছু কিনে দেয়ার চেষ্টা করতেন। পাশাপাশি গরিব মানুষদেরকেও জামাকাপড় কিনে দিতেন। তবে আমরা দুই ঈদে জামাকাপড় পেতাম না। ঈদুল ফিতরে শুধু পেতাম। আব্বা মারা যাওয়ার বেশ পরে আয়ারল্যান্ড চলে আসি। তখন মা দুই ঈদে আমার জন্য জামাকাপড় পাঠাতেন। তবে ছোটবেলার ঈদে যখন নতুন জামা পেতাম তখন সত্যি আনন্দটা অন্যরকম ছিল। ছোটবেলার ঈদ সবারই আনন্দের, আমারও তাই ছিল। ছোটবেলায় ঈদের সময় বাইরে ঘুরতে যাওয়া, আত্মীয় স্বজনের বাড়ি যাওয়ার বিষয়গুলো যদিও নতুন কিছু নয় কিন্তু এই স্মৃতিগুলো মনে পড়তেই খুব ভালো লাগে। ভাবতে ভালো লাগে এমন সোনালি সুন্দর একটা সময় জীবনে ছিল। আয়ারল্যান্ডে আসার পর যেটা হয়েছে- ঈদের দিন সকালে ঘুম থেকে উঠে রেডি হয়ে বের হই। এখানে আশেপাশে যেসব বাঙালি রয়েছে তাদের বাসায় যাই। মানে বাংলাদেশে যে আনন্দটা করতাম সেটা এখানে করার চেষ্টা করি। আর পেশাগত কারণে যতই ব্যস্ত থাকি না কেন ঈদের সময় দুই-তিনদিন  যে কোনোভাবে ছুটি নেয়ার চেষ্টা করি। তবে এয়ার ফোর্সে জয়েন করার পর সেই ছুটি নেয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। কারণ ফ্লাইং শিডিউল আগে থেকেই করা থাকে। ফলে চাইলেই পরিবর্তন করা যায় না। এছাড়া দায়িত্ববোধের কিছু বিষয় থাকে। যে কারণে ঈদের দিনও কাজ করতে হচ্ছে। সম্ভবত গত ৯-১০ বছর বাংলাদেশে ঈদ করি না। আসলে ভুলেই গেছি কতদিন ধরে বাংলাদেশে ঈদ করি না। এ বছর বাংলাদেশে ঈদ করার ইচ্ছে ছিল। কিন্তু বিশেষ কারণে সম্ভব হচ্ছে না। কিছুদিন আগে রাঙামাটিতে পাহাড় ধসের ঘটনা আমাকে মানসিকভাবে বিপর্যস্ত করেছে। বলছি না, আমি বড় মাপের মানুষ বা আত্মপ্রচারের জন্য বিষয়টি বলছি- এই ঈদটা তেমনভাবে উদযাপন করছি না। পাহাড়ে দুর্ঘটনায় ক্ষতিগ্রস্ত মানুষের জন্য এবারের ঈদ উৎসর্গ করছি। তবে হ্যাঁ, বাচ্চাদের কিছুটা সময় দেব। ওরা যাতে ঈদ বিষয়টা কি বুঝতে পারে, জানতে পারে। ঈদের আনন্দ উপভোগ করতে পারে।  পাশাপাশি আপনাদের একটি বিষয়ে আহ্বান জানাব, আপনারা যেখানে ১০ হাজার টাকা দিয়ে একটি ড্রেস কিনবেন, সেখান থেকে ৩ হাজার টাকা বাঁচিয়ে ঈদে সুবিধাবঞ্চিতদের পাশে দাঁড়ান- ওদের সঙ্গে যাতে ঈদের আনন্দটা ভাগ করে নেয়া যায়। আমি ‘গ্ল্যামারাস ওয়ার্ল্ডের প্রিয়তি’ এই পরিচয়ে বেঁচে থাকতে চাই না। আমি খুব সাধারণ মানুষ। সাধারণ হয়েই থাকতে চাই। আর সবার জন্য ঈদের শুভেচ্ছা রইল। অনুলিখন : আমিনুল ইসলাম শান্ত রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৬ জুন ২০১৭/তারা