বিনোদন প্রতিবেদক : ‘তার চলে যাওয়ার শূন্যতা কোনোদিনও পুরণ হবে না। এরকম শিল্পীর জন্ম একবারই হয়। তিনি যেভাবে নজরুলসংগীত গেয়েছেন তার মতো করে হয়তো আর কেউ গাইতে পারবেন না। আমাদের পরিবার দাদুকে হারিয়ে যে বেদনা অনুভব করেছি ঠিক তেমনি আমাদের নজরুলসংগীতের একজন অভিভাবকে হারিয়ে বেদনা অনুভব করছি। তাকে সবসময় আমাদের বাড়িতে আসতে দেখেছি। আমাদের পরিবারের সঙ্গে ভালো সম্পর্ক ছিল। বাবা তাকে চাচিআম্মা বলে ডাকতেন। এরকম শিল্পী খুবই কম সময়ই আসে।’ নজরুলসংগীত শিল্পী ফিরোজা বেগম সর্ম্পকে এভাবেই বলছিলেন কাজী নজরুল ইসলামের নাতনী খিলখিল কাজী। ফিরোজা বেগম ২০১৪ সালের ৯ সেপ্টেম্বর আমাদের ছেড়ে চিরতরে চলে যান। শরীরে বার্ধক্য এসেছিল, কিডনি জটিলতায়ও ভুগছিলেন তিনি। ঢাকার অ্যাপোলো হাসপাতালে রাত ৮টা ২৮ মিনিটে তিনি মৃত্যুবরণ করেন। তার এ বিদায়ে সাংস্কৃতিক অঙ্গনে নেমে আসে শোকের ছায়া। সমগ্র ভারতীয় উপমহাদেশে নজরুলসংগীতের জন্য বিখ্যাত হয়ে আছেন ফিরোজা বেগম। তিনি স্বয়ং কবি কাজী নজরুল ইসলামের দুর্লভ সান্নিধ্য পেয়েছেন। তার সংগীত ক্যারিয়ারে পেয়েছেন অগণন পুরস্কার ও সম্মাননা। চেষ্টা, নিষ্ঠা আর সততার গুণে নিজেকে প্রতিষ্ঠা করেছেন নজরুলসংগীতের সম্রাজ্ঞীর আসনে। নজরুলসংগীতে অসামান্য অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ দেশে-বিদেশে পেয়েছেন নানা পুরস্কার। স্বাধীনতা পদক, একুশে পদক, নেতাজী সুভাষ চন্দ্র পুরস্কার, সত্যজিৎ রায় পুরস্কার, নাসিরউদ্দীন স্বর্ণপদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমী স্বর্ণপদক, সেরা নজরুলসংগীতশিল্পী পুরস্কার (টানা বেশ কয়েকবার), নজরুল আকাদেমি পদক, চুরুলিয়া স্বর্ণপদক, বর্ধমান বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্মানসূচক ডিলিট, এমন আরো অগণন পুরস্কার ও সম্মাননা। এ ছাড়াও জাপানের অডিও প্রযোজনা প্রতিষ্ঠান সিবিএস থেকে পেয়েছেন গোল্ড ডিস্ক। সর্বশেষ ২০১২ সালের ১২ এপ্রিল তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায়ের কাছ থেকে ‘বঙ্গ সম্মান’ পুরস্কার গ্রহণ করেন।
রাইজিংবিডি/ঢাকা/৯ সেপ্টেম্বর ২০১৭/রাহাত/শান্ত