বিনোদন

‘কারণ এটা নকল কান্নাকাটি ছিল না’

বিনোদন ডেস্ক : ‘ছেলেটা চাকরির খোঁজে ঢাকায় যাচ্ছে। ওখানে আমাদের কোনো আত্মীয়-স্বজন বা পরিচিত কেউ নেই, যে ছেলেটাকে আশ্রয় দেবে। অপরিচিত একটি জায়গা, অনিশ্চিত জীবন নিয়ে ছেলেটি চলে যাচ্ছে। ঠিক তখন একজন মায়ের কেমন লাগতে পারে? যে শহরে আপনি জীবনে যাননি, যে শহরে আপনার কেউ নেই সেই শহরের উদ্দেশ্যে আপনি যখন রওনা দেন তখন আপনার মায়ের কেমন লাগবে? এমন একটি সিকোয়েন্স এই নাটকে রয়েছে। এই সিকোয়েন্সের সময় খুব গভীরভাবে চরিত্রের ভেতরে ডুবে গিয়েছিলাম। এ সময় কান্নার দৃশ্য ছিল। সাধারণত কান্নার দৃশ্যে গ্লিসারিন বা অন্যকিছু ব্যবহার করে থাকি। অর্থাৎ নকল কান্নাকাটি করতে হয়। কিন্তু কান্নার দৃশ্যে আমার কিছু লাগেনি। কারণ এটা নকল কান্নাকাটি ছিল না।’ রাইজিংবিডির সঙ্গে আলাপকালে কথাগুলো বলেন গুণী অভিনেত্রী মনিরা মিঠু। তরুণ নির্মাতা মাবরুর রশিদ বান্নাহ্ সম্প্রতি নির্মাণ করেছেন একক নাটক ‘আমাদের গল্পটা এমনও হতে পারতো’। মোরছালিন মাসুমের গল্পে নির্মিত এ নাটকে অভিনয় করেছেন মনিরা মিঠু। নাটকটির শুটিংয়ের অভিজ্ঞতা শেয়ার করতে গিয়ে এসব কথা বলেন এই অভিনেত্রী। নাটকের গল্প প্রসঙ্গে মনিরা মিঠু রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘নাটকের গল্পটা অনেক চেনা। এই চেনা গল্প খুব স্পর্শকাতরভাবে উপস্থাপন করা হয়েছে। আমাদের ব্যক্তিগত জীবনে খুব প্রয়োজনীয় কিছু চাহিদা থাকে। দেখা যায়, এই চাহিদা বা চাওয়াটি এক সময় পূরণ হয় কিন্তু তখন আর এর আনন্দ বা প্রয়োজন থাকে না। এই নাটকের গল্পে ছেলেটির একটি চাকরি প্রয়োজন কারণ তার মা অসুস্থ তাকে বাঁচাতে হবে। কিন্তু সময় মতো সে চাকরিটা পায় না।’

নাটকের গল্পে একজন মায়ের চরিত্রে অভিনয় করেছেন মনিরা মিঠু। তার ছেলের চরিত্রে দেখা যাবে ইরফান সাজ্জাদকে। চরিত্র প্রসঙ্গে মনিরা মিঠু বলেন, ‘গল্পে বেশ চমৎকার কিছু সিকোয়েন্স রয়েছে, যা দর্শকদের মন ছুঁয়ে যাবে। শুটিংয়ের সময় খুব আবেগী হয়ে পড়েছিলাম। এ ধরনের চরিত্র আমি সবসময় পছন্দ করি। এমন সফট চরিত্রে অভিনয় করে অ্যাওয়ার্ডও পেয়েছিলাম। যদিও দর্শক আমাকে রাগী চরিত্রে দেখে অভ্যস্ত। দর্শকদের ধারণা, আমি রাগী চরিত্রে ভালো অভিনয় করি। কিন্তু তাদের এ ধারণা ভুল। কারণ সফট চরিত্রেও আমি ভালো করি। এটা আমার মতামত।’ নাটকটি নিয়ে আশাবাদী পরিচালক মাবরুর রশিদ বান্নাহ্। তিনি রাইজিংবিডিকে বলেন, ‘সম্পূর্ণ জীবনমুখী গল্প নিয়ে গড়ে উঠেছে নাটকটির কাহিনি। কোনো আরোপিত ঘটনা গল্পে নেই। অবশ্যই বলব, গল্পটিতে ইমোশনাল জার্নিটাই বেশি। কিন্তু সেটা মাত্রারিক্ত নয়। তবে দর্শক তা দেখেই বিচার করবেন। কারো কারো কাছে ইমোশনটা বেশি কিংবা কম লাগতে পারে। সেটা হোক তা আমিও চাই। শেষ পর্যন্ত আমি নিশ্চিত, এই গল্প হাজারো নাম না জানা কষ্ট করে বেড়ে উঠা যুবক বা যুবতীর গল্প।’ শুধু পেশাগত জীবন নয় ব্যক্তিগত জীবনেও মনিরা মিঠু ও মাবরুর রশিদ বান্নাহর আন্তরিকতাপূর্ণ একটি সম্পর্ক রয়েছে। কাজের ক্ষেত্রেও দুজনের রসায়ন ভালো। এ প্রসঙ্গে মনিরা মিঠু বলেন, ‘এ কথা না বলেই পারছি না যে, মাবরুর রশিদ বান্নাহর সঙ্গে কাজ করে আমি খুব স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করি। সে আমাকে মাথায় রেখে কিছু চরিত্র তৈরি করে যে চরিত্রের জন্য শুধু আমাকেই ডাকে। আমার চেয়ে ভালো অভিনয় করেন এমন অভিনেত্রী অনেক আছেন। কিন্তু ওখানে শুধু আমাকেই চাই তার।’  ঢাকার অদূরে চমৎকার একটি মফস্বল শহরে নাটকটির দৃশ্যধারণ করা হয়েছে। এতে আরো অভিনয় করেছেন সাফা কবির, গোলাম রাব্বানী মিন্টু প্রমুখ। ১৭ নভেম্বর বেলা ৩টায় চ্যানেল আইয়ে নাটকটি প্রচারিত হবে। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৫ নভেম্বর ২০১৭/শান্ত/মারুফ