বিনোদন

অনেক প্রত্যাশার-২০১৮ || ছটকু আহমেদ

চলচ্চিত্রের সুদিন ফিরে আসার অনেক প্রত্যাশার বছর-২০১৮। শুধু আমি না, চলচ্চিত্রসংশ্লিস্ট সবাই প্রযোজক, পরিচালক, শিল্পী, চিত্রগ্রাহক, চিত্রসম্পাদক, কাহিনি সংলাপ ও চিত্রনাট্য লেখক, নৃত্য পরিচালক, বিশেষ দৃশ্য পরিচালক, মেকআপ ম্যান, শিল্পনির্দেশক, সহকারী পরিচালক, ড্রেসম্যান, প্রডাকশান স্টাফ, অফিস স্টাফ, থার্ড পার্টি ব্রোকার, বুকিং এজেন্ট, সিনেমার বিভিন্ন মিডিয়া হাউস ক্যামেরা সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান লাইট সরবরাহকারী প্রতিষ্ঠান, এফডিসির বিভিন্ন কর্মকর্তা ও কর্মচারী, চলচ্চিত্র দর্শক, প্রদর্শক এবং সর্বোপরি চলচ্চিত্র সাংবাদিক, প্রিন্ট মিডিয়া, গণমাধ্যম, চলচ্চিত্র সংক্রান্ত পত্রিকা ও অনলাইন পত্রিকার সাংবাদিক, মালিক সবাই ২০১৮ সালে চলচ্চিত্রের শুভ পরিবর্তনের আশায় পথ চেয়ে আছেন। আবর্জনা-জঞ্জাল মুক্ত চলচ্চিত্র, যৌথ প্রযোজনার নামে যৌথ প্রতারণা মুক্ত চলচ্চিত্র, সাফটার ঝাপটা মুক্ত চলচ্চিত্রের প্রত্যাশা সবার অন্তরে। ২০১৮ সালই হবে বাংলাদেশের চলচ্চিত্রের ‘ডু আর ডাই’ বছর। হয় বেনিয়া ব্যবসায়ীরা চলচ্চিত্রকে বিদেশের হাতে তুলে দেবে, নয় তো বাংলাদেশের চলচ্চিত্রে এক মহাজাগরণ সৃস্টি হবে। আসুন আমরা সবাই মিলে সোচ্চার কণ্ঠে বলি, নতুন বছর ২০১৮ সালে- মেকি চলচ্চিত্রকার নিপাত যাক।

চলচ্চিত্রের নামে যারা নাটক বা টেলিফিল্ম করে দর্শক হল থেকে বিতাড়িত করছে তারা নিপাত যাক।  

আর্ট ফিল্মের নামে যারা বিদেশে ছবি পাঠিয়ে লবিং করে নাম কুড়াতে তৎপর তারা নিপাত যাক।

চলচ্চিত্র আমদানির নামে যারা বিদেশি ছবির পৃষ্ঠপোষকতা করছে সেই সব অসাধু বেনিয়া ব্যবসায়ীরা নিপাত যাক।

যারা বিদেশের সংস্কৃতিকে বাংলাদেশে লালন করছে তারা নিপাত যাক।

যারা কালচার শোয়ের নামে বিদেশে মানব পাচার করে দেশের তথা চলচ্চিত্রের ভাবমূর্তি বিনষ্ট করছে তারা নিপাত যাক।

চলচ্চিত্রে পারস্পরিক শ্রদ্ধাবোধ জেগে উঠুক।

শিল্পী কলাকুশলী সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্ক পুনঃস্থাপিত হোক। হিংসা ভেদাভেদ দূর হোক।

দেশের শিল্পী কলাকুশলীদের জয় হোক। বিদেশি শিল্পী ও কলাকুশলী এনে যারা দেশীয় শিল্পী ও কলাকুশলীদের পেটে লাথি মারতে চায় তারা নিপাত যাক।

এফডিসি কর্তৃক সেন্ট্রাল সার্ভারের মাধ্যমে ছবির মুক্তি নিশ্চিত হোক।

যারা ভিডিও পাইরেসি করে আমাদের ছবির ব্যবসায় ধস নামাচ্ছে সেই সব ভাইরাস নির্মূল হোক।

সেন্সরের নীতিমালা আধুনিক হোক। সমাজের বিভিন্ন বাস্তবতা নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণে সেন্সর  বোর্ডের বাধা দূর হোক।

বিদেশে আমাদের দেশের ছবির রপ্তানির জটিলতা দূর হোক।

চলচ্চিত্রে সরকারি অনুদান দলীয় প্রভাব মুক্ত হোক। 

সিনেমা হল সব নিজস্ব মেশিনে ডিজিটাল হোক, পরিচ্ছন্ন ও কালোবাজারি মুক্ত হোক।

ছবির প্রযোজক যেন তার শেয়ারের টাকা ঠিক সময়মত পায় সে-ব্যবস্থা করা হোক। থার্ড পার্টি ব্রোকাররা যেন সহনশীল হয়।

বুকিং এজেন্টরা যেন সেল রিপোর্ট সঠিকভাবে দেয়।

কাকরাইল সিনেমাপাড়া যেন আগের মত গমগম করে।

সিনেমা হলের সামনে যেন ‘হাউজফুল’ সাইন বোর্ড প্রতিনিয়ত দেখতে পাই।

চলচ্চিত্র সাংবাদিকরা যেন হলুদ সাংবাদিকতা থেকে বিরত থাকে।

নতুন নায়ক-নায়িকা ও শিল্পীদের সাথে যেন প্রতারণা না হয়।

মোদ্দা কথা চলচ্চিত্রের জয়জয়কার যেন হয়। লেখক: চলচ্চিত্র পরিচালক ও চিত্রনাট্যকার রাইজিংবিডি/ঢাকা/১ জানুয়ারি ২০১৮/তারা