বিনোদন

‘দেশের চলচ্চিত্রের জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা’

আমিনুল ইসলাম শান্ত : মিস আয়ারল্যান্ড মাকসুদা আক্তার প্রিয়তি। ঢাকায় জন্মগ্রহণ করেন তিনি। শৈশব কেটেছে এ নগরীতেই। কৈশোরে পাড়ি জমান আয়ারল্যান্ডে। প্রিয়তির প্রথম চলচ্চিত্র ‘ওয়ান্ডারল্যান্ড’। আইরিশ এ চলচ্চিত্রটি নির্মাণ করেন পরিচালক কিয়ারন ডেভিস। এ অভিনেত্রীর দ্বিতীয় আইরিশ চলচ্চিত্র ‘কোকোলান’। এটিও নির্মাণ করছেন ডেভিস। অভিনয়ের পাশাপাশি বিভিন্ন সামাজিক কর্মকাণ্ডের সঙ্গেও যুক্ত এই অভিনেত্রী। সম্প্রতি বাংলাদেশে এসেছেন প্রিয়তি। বর্তমান ব্যস্ততাসহ নানা বিষয় নিয়ে রাইজিংবিডির সঙ্গে কথা বলেন তিনি। এ আলাপচারিতার বিশেষ অংশ তুলে ধরা হলো- রাইজিংবিডি : হঠাৎ দেশে আসলেন কেন?

প্রিয়তি : আসলে হঠাৎ করে দেশে আসিনি। অনেক দিন ধরেই দেশে আসার কথা ভাবছিলাম। কিন্তু ছুটি পাচ্ছিলাম না যার কারণে আসতে পারিনি। প্রায় দুই বছর পর দেশে আসলাম। রাইজিংবিডি : শুধু কি ঘুরতে দেশে এসেছেন না বিশেষ কোনো পরিকল্পনা রয়েছে?

প্রিয়তি : দেশে আসি না অনেক দিন। ঘুরতে আসাটা অন্যতম একটি কারণ। এ ছাড়াও কিছু কাজের পরিকল্পনা নিয়েও এসেছি। শিশুদের নিয়ে একটি ফাউন্ডেশন দাঁড় করানোর জন্য কাজ করছি। সেটার কাগজপত্র তৈরি করার কিছু প্রক্রিয়াও শেষ করার পরিকল্পনা রয়েছে। এ ছাড়া আমার আত্মজীবনী প্রকাশের প্রক্রিয়াও শেষ করতে চাই। রাইজিংবিডি : আপনার আত্মজীবনী লেখার কাজ কি শেষ?

প্রিয়তি : হ্যাঁ, লেখার কাজ শেষ। আমি তো আসলে লেখক না। তবে আমার লেখার কাজ শেষ করেছি। বাকি কাজ প্রকাশনী থেকে করছে। প্রচ্ছদও তৈরি করা হয়েছে। আগামী একুশে বই মেলায় বইটি প্রকাশের এখন পর্যন্ত পরিকল্পনা আছে। এটি নাগরিক প্রকাশনী থেকে প্রকাশিত হবে। দেখা যাক কী হয়। রাইজিংবিডি : ঢাকাই চলচ্চিত্রে অভিনয়ের কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা?  

প্রিয়তি : আমাকে তো অভিনয়ের জন্য কেউ প্রস্তাব দেয় না। ভালো কোনো কাজের প্রস্তাব পাচ্ছি না। তা হলে কীভাবে এখানে কাজ করব? আমাকে হয়তো দেশের চলচ্চিত্রে ব্যবহার করা যাচ্ছে না। এটা আমার ধারণা। এ ধারণা ভুলও হতে পারে। আমি সবসময় চাই এখানে কাজ করতে। সব কিছু মিলিয়ে যদি ভালো কিছু হয় অবশ্যই কাজ করব। দেশের চলচ্চিত্রের জন্য আমার দরজা সবসময় খোলা থাকবে।  

রাইজিংবিডি : ‘কোকোলান’ চলচ্চিত্রটির কাজের অগ্রগতি জানতে চাই।   

প্রিয়তি : ‘কোকোলান’ চলচ্চিত্রের কাজ এখনো চলছে। এটির শুটিং পুরোটাই সিজনের ওপর নির্ভর করে হচ্ছে। আসলে আইরিশ পরিচালকরা একটি চলচ্চিত্রের শুটিং ৪/৫ বছর ধরে করে। রাইজিংবিডি : এত দীর্ঘ সময় নিয়ে চলচ্চিত্র নির্মাণের কারণ কী?

প্রিয়তি : ওখানকার পরিচালকরা সিনেমা নির্মাণের পাশাপাশি ফুল টাইম চাকরি করে। ওদের মূল পেশা চাকরি। পরিচালনা ওদের মূল পেশা না। কারণ ব্যয়বহুল একটি শহরে বসবাসের যে খরচ তা মেটানোর কাজটি আগে। এজন্য চাকরির পাশাপাশি যখন অভিনয়শিল্পীদের শিডিউল মিলে তখন শুটিং করে। যার কারণে একটি চলচ্চিত্র নির্মাণে অনেক সময় লেগে যায়।  রাইজিংবিডি : ‘কোকোলান’ চলচ্চিত্রটি কবে নাগাদ মুক্তি পাবে?

প্রিয়তি : এখনো সঠিক কোনো সময় বলতে পারছি না। আমি আমার অংশের শুটিং প্রায় শেষ করেছি। যতদূর জানি, আমার অল্প কিছু অংশ বাকি আছে। এ ছাড়াও অন্যদের কিছু শুটিং বাকি আছে। তা ছাড়া পরিচালক এখন অন্য আরেকটি প্রজেক্ট নিয়ে ব্যস্ত রয়েছেন। দেখা যাক কী হয়। রাইজিংবিডি : আইরিশ অথবা হলিউড চলচ্চিত্রে কাজের নতুন কোনো পরিকল্পনা আছে কিনা?

প্রিয়তি : আইরিশ চলচ্চিত্রে তো কাজ করছি। আর হলিউডে কাজের সুযোগ রয়েছে। আমি চাইলে কাজ করতে পারি। এখন হলিউডে যদি নিজের ক্যারিয়ার শুরু করতে চাই, সেক্ষেত্রে যুক্তরাষ্ট্রে আমাকে স্থায়ীভাবে থাকতে হবে। সব কিছু বাদ দিয়ে শুধু অভিনয়টার দিকে ফোকাস করতে হবে। কিন্তু সেটা তো করতে পারছি না। বাচ্চা দুটো ছোট। ওদেরও তো ভবিষ্যৎ আছে। তাই আপাতত এ নিয়ে পরিকল্পনা নেই। নিজেকে আরেকটু গুছিয়ে নিই। বাংলাদেশের সঙ্গে আরো বেশি করে যুক্ত হতে চাই। পরে যদি মনে হয় তবে হলিউডে কাজ করব। সে সুযোগ তো থাকছেই। বয়স চলে গেলেই হলিউডে কাজ করা যাবে না তা তো আর না। রাইজিংবিডি : বলিউডে কাজ করছেন এমন গুঞ্জন গত বছর শোনা গিয়েছিল। এ বিষয়ে জানতে চাই।

প্রিয়তি : বলিউডে কাজ করতে গেলেও একই সমস্যা হচ্ছে। ওখানে কাজ করতে গেলে ভারতে স্থায়ীভাবে থাকতে হবে। ওদেরকে সময় দিতে হবে। নিজেকে তৈরি করতে হবে। আসলে সব কিছু বাদ দিয়ে এটা করতে পারছি না।  

রাইজিংবিডি : তবে কি অভিনয় ক্যারিয়ার নিয়ে ভাবছেন না?

প্রিয়তি : আমি অভিনয়টা ভালোবাসি। কিন্তু কোন সেক্টরে বেশি এফোর্ট দিতে পারছি সেটা মূল বিষয়। আমি আপাতত সোশ্যাল অ্যাক্টিভিটির দিকে বেশি গুরুত্ব দিতে চাই। রাইজিংবিডি/ঢাকা/১৪ জানুয়ারি ২০১৮/শান্ত/মারুফ