বিনোদন

ঢাকাই চলচ্চিত্রের পঞ্চকন্যার প্রিয় বন্ধু

রাহাত সাইফুল : ‘বন্ধু তোমার পথের সাথীকে চিনে নিও’ মুকুল দত্তের কথায় হেমন্ত মুখার্জির গাওয়া বিখ্যাত এ গানটির মতো অসংখ্য গান গেয়েছেন বিখ্যাত সব শিল্পীরা। প্রত্যেক মানুষের ভালো বন্ধু প্রয়োজন। বন্ধু ছাড়া কী আর জীবন চলে! বর্তমান বা ভবিষ্যৎ সবখানেই বন্ধুকে পাশে চাই। বন্ধু কিংবা বন্ধুত্বের সঙ্গে মানুষের পরিচয় যুগ যুগান্তরের হলেও ১৯৩৫ সালের আগস্ট মাসের প্রথম রোববার বিশ্ব বন্ধু দিবস পালিত হয়ে আসছে। বিশ্ব বন্ধু দিবস  উপলক্ষে ঢাকাই চলচ্চিত্রের পঞ্চকন্যার প্রিয় বন্ধুদের নিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রতিবেদন। ঢাকাই চলচ্চিত্রের তুমুল জনপ্রিয় অভিনেত্রী শাবনূর। নব্বই দশকের এ চিত্রনায়িকা ‘স্বপ্নের ঠিকানা’, ‘স্বপ্নের পৃথিবী’, ‘তোমাকে চাই’, ‘আনন্দ অশ্রু’, ‘নিঃশ্বাসে তুমি বিশ্বাসে তুমি’, ‘দুই নয়নের আলো’সহ বেশ কিছু দর্শকপ্রিয় সিনেমা উপহার দেন। চলার পথে বেশ কিছু বন্ধু পেয়েছেন তিনি। এর মধ্যে তার মা-ই তার প্রিয় বন্ধু। তার ভাষায়- মায়ের কারণেই চলচ্চিত্রের এই সুন্দর ক্যারিয়ার তৈরি করতে পেরেছি। তার সহযোগিতা না পেলে হয়তো জনপ্রিয় অভিনেত্রী হতে পারতাম না। আমার জীবনের সবকিছু মায়ের সঙ্গে শেয়ার করেছি। ‘কুলি’ খ্যাত চিত্রনায়িকা সাদিকা পারভিন পপি। তিনবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত এই চিত্রনায়িকার সফলতার পেছনেও রয়েছে বন্ধুর ভূমিকা। তারকাদের মধ্যে বেশ কয়েকজন বন্ধু থাকলেও তার সবচেয়ে কাছের বন্ধুর তালিকায় রয়েছে তার ছোট বোন সুমি। এ প্রসঙ্গে পপি বলেন, ‘আমার প্রিয় বন্ধু হলো আমার ছোট বোন। ও আমার বয়সে ছোট হলেও ওর সঙ্গে আমার শেয়ারিংটা অনেক ভালো। চলচ্চিত্রে আমার ভালো বন্ধু শাবনূর। এ ছাড়া স্কুল বন্ধু শিমু, শিউলি, লাবণী।’  রত্না বেশকিছু জনপ্রিয় সিনেমা উপহার দিয়ে ঢাকাই চলচ্চিত্রে হয়েছেন এক জনপ্রিয় চিত্রনায়িকা। কাজী হায়াতের পরিচালনায় ‘ইতিহাস’ সিনেমায় অভিনয়ের মাধ্যমে চলচ্চিত্রাঙ্গনে বেশ জনপ্রিয়তা অর্জন করেন রত্না। ক্যারিয়ারের এক যুগ ব্যবধানে চিত্রনায়িকা রত্না অর্ধশত চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন। শিক্ষাজীবন ও চলচ্চিত্র ক্যারিয়ারে অনেক বন্ধু পেয়েছেন। এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘আমার বন্ধু অনেক। এর মধ্যে অন্যতম প্রিয় বন্ধু হলো স্বপ্না। ও আমার স্কুল জীবনের বন্ধু। একসঙ্গে স্কুলে লেখাপড়া করেছি। একদম জন্মের পর থেকেই ও আমার বন্ধু। আমি ওকে অনেক বিশ্বাস করি। আমার যতজন বন্ধু আছে সবারই বন্ধু আছে কিন্তু আমি ছাড়া স্বপ্নার কোনো বন্ধু নাই।’ ‘ঢালিউড কুইন’ খ্যাত অভিনেত্রী অপু বিশ্বাস। এক দশকের বেশি সময় ধরে প্রায় ১০০টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। দর্শকদের উপহার দিয়েছেন বেশকিছু ব্যবসাসফল সিনেমা। ছোট সময়টা কেটেছে বগুড়ায়। সেখানে এসওএস হারম্যান মেইনার স্কুলে শিশু শ্রেণিতে ভর্তি হওয়ার পরই বন্ধু হিসেবে পান বৃষ্টি পোদ্দারকে। এখনো তাদের বন্ধুত্ব অটুট রয়েছে। এ প্রসঙ্গে অপু বিশ্বাস বলেন, ‘তৃতীয় শ্রেণিতে উঠার পর ইয়াকুবিয়া বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়েও দুজন একসঙ্গে ভর্তি হই। সেখান থেকেই আমরা এসএসসি পাশ করি। আমাদের সেশন এক হতে হবে আবার পরীক্ষার সময় আমাদের সিট একই রুমে হতে হবে। এ নিয়ে শিক্ষকদের সঙ্গে আমরা অনেক বায়নাও ধরতাম। আমাদের দুজন দুজনকে দেখতে হবে, এ বিষয়টা শিক্ষকরাও জানতেন। আমাদের অনেক মধুর স্মৃতি রয়েছে। এসএসসি পাশের পর আমি সিনেমায় চলে আসি। আমার ব্যস্ততার কারণে সরকারি মুজিবুর রহমান মহিলা কলেজে ভর্তি হলাম। আর বৃষ্টি অন্য একটি কলেজে ভর্তি হয়। এরপর আমাদের আর দেখা হতো না। দীর্ঘ সাত বছর আমাদের দেখা ও কথা হয়নি। দীর্ঘ বিরতির পর আমাদের যোগাযোগ হয়েছে। আমার আরো একজন বাল্যবন্ধু রয়েছে। ওর নাম সিমিম। সিমিম আর আমি দেখতে প্রায় একই রকম। সিমিম এখন দক্ষিণ কোরিয়াতে থাকে।’ ঢাকাই চলচ্চিত্রের গ্ল্যামারকন্যা পরীমনি। চলচ্চিত্রে পা রাখার পর থেকেই সর্বাধিক সংখ্যক সিনেমায় চুক্তিবদ্ধ হওয়াসহ বিভিন্ন কারণে আলোচিত তিনি। বতর্মানে এই চিত্রনায়িকা বেছে বেছে সিনেমার কাজ করছেন। পরীমনির ছোটবেলা কেটেছে পিরোজপুর। সেখানেই প্রতিবেশী কাজলের সঙ্গে তার বন্ধুত্ব গড়ে ওঠে। এখনো তাদের বন্ধুত্ব অটুট রয়েছে। এ প্রসঙ্গে পরীমনি বলেন, ‘আমার প্রিয় বন্ধু কাজল। আমি যখন ভালো থাকি তখন কাজল আমার খোঁজ খবর নেয় না। আমি যখন খারাপ থাকি যেমন অসুস্থ থাকলে ও ফোন কের খোঁজ নেয়। কাজল আমার প্রতিবেশী। আমার থেকে দুই বছরের সিনিয়র কাজল। ছোটবেলা থেকে আমরা এক জায়গায় বড় হয়েছি।’ অনেকে বাল্য বন্ধুর সঙ্গে যোগাযোগ রেখে তাদের বন্ধুত্ব অটুট রেখেছেন। আবার অনেকে সময়ের প্রয়োজনে ভিন্ন ভিন্ন জায়গায় অবস্থান করছেন। কিন্তু মনের গহীনে আজও সেই বন্ধুত্ব অমলিন রয়ে গেছে। বন্ধু দিবসে প্রত্যাশা অটুট থাকুক সবার বন্ধুত্ব। রাইজিংবিডি/ঢাকা/৫ আগস্ট ২০১৮/রাহাত/শান্ত