বিনোদন

‘জন্মদিন ঘিরে বাড়তি উচ্ছ্বাস পছন্দ নয়’

বিনোদন প্রতিবেদক : ‘জীবনের গল্প আছে বাকি অল্প’, ‘হায়রে মানুষ রঙিন ফানুস’, ‘আমি রজনীগন্ধা ফুলের মতো’, ‘ডাক দিয়াছেন দয়াল আমারে’, ‘কি জাদু করিলা’, ‘ওরে নীল দরিয়া’, ‘চাঁদের সাথে আমি দেবো না’, ‘সাথীরে যেও না কখনো দূরে’, ‘কাল তো ছিলাম ভালো’, ‘চুমকি চলেছে একা পথে’, ‘তেল গেলে ফুরাইয়া’সহ অসংখ্য কালজয়ী গানের সুরস্রষ্টা আলম খান। আজ সোমবার (২২ অক্টোবর) ৭৫ বছরে পা দিলেন তিনি। সংগীতাঙ্গনের জীবন্ত এই কিংবদন্তি বর্তমানে কিছুটা অসুস্থ। যার কারণে জন্মদিনে বিশেষ কোনো আয়োজন রাখেননি। তাই এ দিনটি বাসায় পরিবারের সঙ্গে কাটাচ্ছেন বলে রাইজিংবিডিকে জানান তিনি। এ প্রসঙ্গে আলম খান বলেন, ‘জন্মদিন মানেই জীবন থেকে একটি বছর চলে যাওয়া। আল্লাহর অশেষ রহমতে গত একটি বছর বেশ ভালোই কেটেছে। জন্মদিন নিয়ে আমি কখনই খুব বেশি আয়োজন করা পছন্দ করি না। জন্মদিন ঘিরে বাড়তি উচ্ছ্বাস পছন্দ নয়। সৃষ্টিকর্তার কাছে প্রার্থনা করি, তিনি যেন সুস্থ ও সুন্দর রাখেন।’ আলম খান ১৯৪৪ সালের ২২ অক্টোবর সিরাজগঞ্জের বানিয়াগাতি গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তার পুরো নাম খুরশিদ আলম খান। বাবা আফতাব উদ্দিন খান ছিলেন সেক্রেটারিয়েট হোম ডিপার্টমেন্ট-এর অ্যাডমিনিস্ট্রেটিভ অফিসার ও মা জোবেদা খানম ছিলেন গৃহিণী। আলম খানের মা জোবেদা খানম ছিলেন নবাব সিরাজউদ্দৌলার দরবারের এক শিল্পীর বংশধর। সিরাজগঞ্জে কয়েক বছর থাকার পর বাবার চাকরির সুবাদে তিনি কলকাতায় চলে যান। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের পর বাবার সঙ্গে ঢাকায় ফিরে আসেন। ঢাকার সিদ্ধেশ্বরী স্কুল থেকে মেট্রিক পাস করেন। পাঁচ ভাই তিন বোনের মধ্যে আলম খান মেজো। বাংলাদেশের প্রখ্যাত পপ সংগীতশিল্পী আজম খান ছিলেন তার ছোট ভাই। আলম খান ১৯৭৬ সালে হাবিবুননেসা গুলবানুর সাথে বিবাহ বন্ধনে আবদ্ধ হন। গুলবানু একজন গীতিকার। আলম খানের সুরে সাবিনা ইয়াসমিনের কণ্ঠে গাওয়া ‘তুমি তো এখন আমারই কথা ভাবছো’ গানটির গীতিকার গুলবানু। তাদের দুই ছেলে আরমান খান ও আদনান খান দুজনেই সংগীত পরিচালক এবং একমাত্র মেয়ে আনিকা খান। আলম খানের সুরকৃত প্রথম জনপ্রিয় গান ছিল ‘স্লোগান’ সিনেমার ‘তবলার তেড়ে কেটে তাক’। এরপর ১৯৭৭ সালে আবদুল্লাহ আল মামুন পরিচালিত ‘সারেং বৌ’ চলচ্চিত্রের গান নিয়ে কথা বলার সময় তার ১৯৬৯ সালের সুর করা একটি মুখরা শুনালে সিনেমার পরিচালক তা নিতে আগ্রহী হন। অসংখ্য কালজয়ী গানের এই সুরকার এ পর্যন্ত তিন শতাধিক সিনেমার সংগীতপরিচালনা করেছেন। তার সুর করা গানের সংখ্যা দুই হাজারের বেশি। আলম খানের খানের হাতে একাধিকবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার উঠেছে। শ্রেষ্ঠ সংগীতপরিচালক হিসেবে ১৯৮২ সালে মহিউদ্দিন পরিচালিত ‘বড় ভালো লোক ছিল’ সিনেমার মাধ্যমে প্রথম জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান। এরপর ১৯৮৫ সালে ‘তিন কন্যা’, ১৯৮৭ সালে ‘সারেন্ডার’, ১৯৯২ সালে ‘দিনকাল’ এবং ১৯৯৯ সালে ‘বাঘের থাবা’, ২০০৯ সালে ‘এবাদত’ সিনেমার জন্য জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে ভূষিত হন। ‘কি জাদু করিলা’ সিনেমার জন্য ২০০৮ সালে শ্রেষ্ঠ সুরকার হিসেবে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার পান তিনি। রাইজিংবিডি/ঢাকা/২২ অক্টোবর ২০১৮/রাহাত/শান্ত