বিনোদন

অভিনয়শিল্পীর কোনো কাঁটাতার নেই : মানসী

রাহাত সাইফুল : ভারতীয় বাংলা সিনেমা ও টিভি সিরিয়ালে নিয়মিত কাজ করছেন অভিনেত্রী মানসী সিনহা। এ পর্যন্ত ৭২টি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেছেন তিনি। এছাড়া অসংখ্য টেলিভিশন ধারাবাহিক নাটকে কাজ করেছেন। টলিউডের ব্যস্ত এই অভিনেত্রীর দর্শকপ্রিয়তা কলকাতার পাশাপাশি বাংলাদেশেও রয়েছে। সম্প্রতি বাংলাদেশের একটি ফ্যাশন হাউজের মডেল হয়েছেন তিনি। এজন্য বাংলাদেশে এসেছিলেন এই অভিনেত্রী। এ সময় রাইজিংবিডির এই প্রতিবেদকের সঙ্গে অভিনয়সহ নানা বিষয়ে কথা বলেন মানসী। এ আলাপচারিতার বিশেষ অংশ পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো- রাইজিংবিডি : বাংলাদেশে এসে কেমন লাগছে? মানসী সিনহা : ২০০৩ সালে ‘চার দুয়ার’ নাটকের শুটিং করতে ঢাকায় এসেছিলাম। পাবলিক লাইব্রেরিতে নাটকটির শুটিং করেছিলাম। তখন খুব বেশি সময় পাইনি। এবারো কাজ করতে এসে কোনো রকম পার্থক্য  পেলাম না। মনে হয়েছে, আমি দেশেই কাজ করছি। এখানকার সবাই খুবই আন্তরিক। গৌতম আমাদের ভারতে গিয়েছিলেন। তখন তার সঙ্গে পরিচয় হয় কিন্তু এর আগে কাজ করা হয়নি। এবার কাজ করতে এসে খুব ভালো লাগছে। গৌতম কাজের ক্ষেত্রে খুব আন্তরিক। এছাড়া সোহাগ, বারিস, দোয়েল ওরা সবাই ভীষণ ভালো। পাকশি রিসোর্টে গিয়ে আমরা খুব আনন্দ করেছি। রাইজিংবিডি : ভারতীয় সিরিয়ালের দর্শক বাংলাদেশেও আছে, সেটা কী জানেন? মানসী সিনহা : আসলে এর আগে কখনো বুঝিনি। ঢাকায় এসে বুঝতে পেরেছি এখানেও আমার ভক্ত আছে। এখানে দেখছি, সবাই আমাকে চিনেন, সবাই আমার কাজ দেখেন। সবাই আমাকে ভালোবাসেন। এ বিষয়টি নিয়ে খুব গর্ব হচ্ছে। আমি টিভি সিরিয়াল করছি, সিনেমার কাজ করছি- সেগুলো বাংলাদেশের মানুষ দেখেন। এটা আমার কাছে প্রাপ্তির জায়গা। একজন অভিনেত্রী সেটাই চায়। বাংলাদেশের মানুষের সঙ্গে এর আগে কখনো যোগাযোগ হয়নি। গৌতমের সঙ্গে যখন কথা হয় তখন বলেছিল, বাংলাদেশের মানুষ আমাকে পছন্দ করেন। তবে এর আগে সরাসরি তা কখনো দেখা দেখিনি।  রাইজিংবিডি : বাংলাদেশের নাটক বা সিনেমায় অভিনয়ের প্রস্তাব পেয়েছেন? মানসী সিনহা : এখানে এসেই একটি কাজের প্রস্তাব পেয়ে গেছি। এছাড়া যৌথ প্রযোজনার ‘শঙ্খচিল’ সিনেমায় কাজ করেছি। একজন অভিনয়শিল্পীর কোনো দেশ হয় না, কোনো গণ্ডি হয় না। আমি বাংলাদেশে কাজ করিনি কিন্তু বিদেশে অনেক জায়গায় কাজ করেছি। অভিনয়শিল্পীর কোনো কাঁটাতারের বেড়া নেই। রাইজিংবিডি : বাংলাদেশের নাটক, সিনেমা দেখেছেন? মানসী সিনহা : হ্যাঁ, দেখেছি। আগে বাংলাদেশের চ্যানেল আমাদের ওখানে নিয়মিত দেখা যেত। তখন আমরা দেখতাম। বাংলাদেশের সিরিয়াল, টেলিফিল্ম খুব ভালো। এখন দেখতে পাই না। সুযোগ পেলে নিশ্চয়ই দেখব। রাইজিংবিডি : বাংলাদেশের শিল্পীদের সঙ্গে পরিচয় আছে? মানসী সিনহা : ফেরদৌসের সঙ্গে আমার ভালো সর্ম্পক রয়েছে। এছাড়া মিম ওখানে কাজ করে তার সঙ্গেও আমার পরিচয় আছে। আরো কয়েকজনকে চিনি। নায়করাজ রাজ্জাক সাহেবের সঙ্গে আমার কাজ করার সুযোগ হয়েছে। তিনি আমাদের সঙ্গে অনেক আন্তরিকভাবে মিশতেন। কখনো মনেই হয়নি মাঝখানে একটা কাঁটাতারের বেড়া আছে। রাইজিংবিডি : অভিনয়ে আসার গল্পটা জানতে চাই। মানসী সিনহা : আসলে আমার পরিবারটাই অভিনয়ের সঙ্গে জড়িত। আমার মা থিয়েটারের নামকরা অভিনেত্রী। আমার বাবাও থিয়েটারের মানুষ। আমি তিন বছর বয়স থেকে থিয়েটারে অভিনয় করি। তারপর লেখাপড়া সামলে নিয়মিত থিয়েটার করে আসছিলাম। ২০০২ সালে ‘আলো’ সিনেমায় প্রথম কাজ করি। তারপর এ পর্যন্ত ৭২টি চলচ্চিত্রে কাজ করেছি। রাইজিংবিডি : অভিনয়ের পাশাপাশি সংসারের দায়িত্ব সামলান কীভাবে? মানসী সিনহা : যখনই সময় পাই রান্না করি। ছেলেমেয়ের খেয়াল রাখতে হয়। একসঙ্গে সবকিছু সামলাতে আমার ভালোই লাগে। রাইজিংবিডি : ইদানীং যৌথ প্রযোজনার সিনেমাগুলো কলকাতায় মুক্তি পাচ্ছে। সেগুলো ওখানে কেমন চলে? মানসী সিনহা : কলকাতায় বাংলাদেশের সিনেমা খুবই ভালো চলছে। রাইজিংবিডি : এখানকার শিল্পীদের পশ্চিমবঙ্গে দর্শকপ্রিয়তা কেমন? মানসী সিনহা : দর্শক এখানকার শিল্পীদের ভালোবাসেন। তাদের ভালো না বাসলে সিনেমা হিট হয় কীভাবে? রাইজিংবিডি : সময় দেয়ার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। মানসী সিনহা : রাইজিংবিডির মাধ্যমে বাংলাদেশের মানুষকে শুভেচ্ছা ও ভালোবাসা জানাই। আপনাদের ভালোবাসা পেলে সরাসরি এখানে এসে কাজ করার সুযোগ পাব।

       

রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৪ মার্চ ২০১৯/রাহাত/শান্ত