বিনোদন

বিশ্ব চলচ্চিত্রে ক্রিকেট

আহমেদ শরীফ: শুরু হয়েছে বিশ্বকাপ ক্রিকেটের লড়াই। ক্রিকেট নিয়ে আমাদের উপমহাদেশে উন্মাদনা একটু বেশি। তবে বিশ্বের অন্য দেশগুলোতেও এর কমতি নেই। বলিউড ছাড়াও ব্রিটেনসহ কয়েকটি দেশে ক্রিকেট নিয়ে যেসব সিনেমা নির্মিত হয়েছে, সেগুলোর মধ্যে উল্লেখযোগ্য ১০টি সিনেমা সম্পর্কে চলুন জেনে নেই। ফায়ার ইন ব্যাবিলন: ব্রিটেনে ২০১০ সালে ক্রিকেট নিয়ে নির্মিত হয় প্রামাণ্যচিত্র—ফায়ার ইন ব্যাবিলন । ১৯৭০ ও ১৯৮০ এর দশকে ক্রিকেটে রাজত্ব করা ওয়েস্ট ইন্ডিজ টিমকে নিয়েই এটি নির্মিত। ওয়েস্ট ইন্ডিজ কীভাবে বিশ্বের সবচেয়ে ভয়ঙ্কর ক্রিকেট দলে পরিণত হলো, তাই দেখানো হয়েছে এতে। ক্লাইভ লয়েড, স্যার ভিভ রিচার্ড, গর্ডন গ্রিনিজদের মতো দলটির সুপারস্টার ক্রিকেটারদের অবদানের কথা তুলে ধরা হয়েছে এই প্রামাণ্যচিত্রে। স্টিভেন রাইলি এটি পরিচালনা করেন। ওয়ান্ডারাস অবলিভিয়ন: আরেকটি ব্রিটিশ সিনেমা ওয়ান্ডারাস অবলিভিয়ন । ২০০৩ সালের এই সিনেমাতে দেখানো হয় ১১ বছর বয়সি এক কিশোর ক্রিকেট খেলাটা ভালো না পারলেও তা নিয়ে সে কতোটা উন্মত্ত। পল মরিসন পরিচালিত সিনেমাটি বোস্টন জুইশ ফিল্ম ফেস্টিভ্যাল ও গিফোনি ফেস্টিভ্যালে পুরস্কৃত হয়। দ্য ফাইনাল টেস্ট: অ্যান্থনি অ্যাসকুইথ পরিচালিত এই সিনেমাটি মুক্তি পায় ১৯৫৩ সালে। এতে ১৯৩৪ সালে অস্ট্রেলিয়ার বিরুদ্ধে ইংল্যান্ডের অ্যাশেজ পুনরুদ্ধারের ঘটনা দেখানো হয়। কমেডি ধাঁচের এই সিনেমাতে স্যাম পালমারের চরিত্র ফুটিয়ে তোলা হয়, সিনেমাতে দেখানো হয় ইংল্যান্ডের হয়ে শেষ টেস্ট খেলছিলেন তিনি।  

হ্যানসি: এ ট্রু স্টোরি: দক্ষিণ আফ্রিকায় ২০০৮ সালে মুক্তি পায় এ সিনেমাটি। দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট দলের সাবেক অধিনায়ক হ্যানসি ক্রোনিয়ে, যিনি এক সময় দেশটির হিরো ছিলেন, বিশ্বজুড়ে সম্মানিতও ছিলেন। ২০০০ সালে ভারত-দক্ষিণ আফ্রিকা ক্রিকেট সিরিজে বাজিকরদের সাথে তার সম্পৃক্ততা নাটকীয়ভাবে প্রমাণিত হয়। এরপর ক্রিকেট থেকে তার বিদায়, বিমান দুর্ঘটনায় মৃত্যু হওয়া সব কিছুই ছিল নাটকীয়। এসব নিয়েই সিনেমাটি নির্মিত হয়। সিনেমাটি পরিচালনা করেন রিগার্ড ভ্যান ডেন বার্গ। বডিলাইন: ইংল্যান্ড ও অস্ট্রেলিয়া ১৯৩২-৩৩ মৌসুমে ঐতিহাসিক এক টেস্ট সিরিজে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করে। সে সময় ইংলিশ বোলাররা অস্ট্রেলিয়ার ব্যাটসম্যানদের শরীর লক্ষ্য করে বল করার কৌশল অবলম্বন করে। এতে ঐ সিরিজে ক্রিকেট কিংবদন্তি স্যার ডোনাল্ড ব্র্যাডম্যান কয়েকবার আহত হন। বিষয়টি বিশ্বজুড়ে সমালোচিত হয়। ঐ ঘটনাকে কেন্দ্র করে ১৯৮৪ সালে বডি লাইন নামে টিভিতে একটি সিনেমা সিরিজ নির্মিত হয়। ক্রিকেট নিয়ে অন্যতম সেরা সিনেমা বিবেচনা করা হয় একে। ফ্রম দ্য অ্যাশেজ: ১৯৮১ সালে নাটকীয়ভাবে অস্ট্রেলিয়াকে হারিয়ে অ্যাশেজ সিরিজ জয় করে ইংল্যান্ড। ইয়ান বোথামের দুর্দান্ত ব্যাটিংয়ে ঐ অ্যাশেজ সিরিজ জয়ের ঘটনাকে স্মরণ করে ২০১১ সালে নির্মিত হয় ফ্রম দ্য অ্যাশেজ সিনেমাটি। জেমস আরসকিন পরিচালিত সিনেমাটিটি খুব উপভোগ্য। হিট ফর সিক্স: ২০০৭ সালে নির্মিত বারবাডোজের এই সিনেমাটিতে দেখানো হয় কীভাবে ম্যাচ ফিক্সিংয়ের কারণে অভিযুক্ত ওয়েস্ট ইন্ডিজের একজন ক্রিকেটার আবারো ইন্টারন্যাশনাল টুর্নামেন্ট খেলতে সংগ্রাম করে সফল হয়। সিনেমাটিতে টিনো বেস্ট, ডেসমন্ড হাইন্সসহ ওয়েস্ট ইন্ডিজ দলের কয়েকজন সাবেক ক্রিকেটারকে দেখা যায়।  

প্লেয়িং অ্যাওয়ে: ১৯৮৭ সালে ব্রিটিশ এই সিনেমাটি নির্মিত হয়। এতে বৃটেনের একটি ক্রিকেট টিম ওয়েস্ট ইন্ডিজ বংশোদ্ভুত স্থানীয়দের সাথে প্রীতি ক্রিকেট ম্যাচ খেলে। এতে শ্বেতাঙ্গ ও কৃষ্ণাঙ্গদের মানসিক টানাপোড়েন দেখানো হয় অনেকটা কমেডি ধাঁচে। আই নো হাউ মেনি রানস ইউ স্কোরড লাস্ট সামার: ২০০৮ সালে মুক্তি পাওয়া অস্ট্রেলিয়ান এই সিনেমাটিতে এক সিরিয়াল কিলারকে দেখানো হয়, যে কি না তার ধারালো ক্রিকেট গ্ল্যাভস ও স্ট্যাম্প দিয়ে স্থানীয় এক ক্রিকেট দলের সদস্যদের হত্যা করে। ব্যাজারস গ্রিন: ১৯৪৯ সালে কমেডি ধাঁচের এই ব্রিটিশ  সিনেমাটি মুক্তি পায়। শান্ত, নিবিড় একটি গ্রামে এক কোম্পানি বড় ধরনের ব্যবসায়ীক প্রজেক্ট শুরু করতে চায়। কিন্তু স্থানীয়রা তাতে বাধা দেয়। পরে ক্রিকেট ম্যাচের মাধ্যমে নির্ধারণ হয় ঐ গ্রামে কোম্পানির কারখানা হবে কি না। একই নামে ও একই কাহিনি নিয়ে ১৯৩৪ সালেও একটি সিনেমা নির্মিত হয়েছিল। রাইজিংবিডি/ঢাকা/ ৮ জুন ২০১৯/মারুফ/তারা