বিনোদন

জয়ার বন্ধুত্বে মুগ্ধ শ্রীজাত

বিনোদন ডেস্ক : নিজের ফেইসবুক পেজে বাংলাদেশি অভিনেত্রী জয়া আহসানকে নিয়ে মুগ্ধতার আবেশ জড়ানো একটি পোস্ট দিয়েছেন কলকাতার কবি শ্রীজাত। তরুণ এই কবি লিখেছেন, ‘আমি তাকে চিনি পর্দার মাধ্যমে, সে আমাকে চেনে দু’মলাটের মধ্যবর্তী অঞ্চল থেকে। আর সেই চেনাটাই যে সবচাইতে জরুরি চেনা, সে-কথা বুঝতে পারি, যখন আমাদের আলাপ হয় মুখোমুখি। দেখা অবশ্য হয়েছিল প্রথমবার, শহর ম্যানহাটন-এর এক পাঁচতারা হোটেলের ঘরোয়া জমায়েতে, দু’একখানা বাক্য ছাড়া কোনও বিনিময় হয়নি। কিন্তু এটুকু বুঝেছিলাম, জয়া আপাদমস্তক একজন শিল্পী, যে তার শিল্পের কাছে সমর্পিত।’

প্রথম দেখায় জয়ার প্রতি অনুরাগের কথা জানাতে ভোলেননি শ্রীজাত। জয়া আহসানও কবির লেখা কবিতার প্রতি ভালোলাগার কথা জানিয়েছেন। যেবারই তিনি কলকাতা গিয়েছেন কবির খোঁজ নিয়েছেন জানিয়ে শ্রীজাত লিখেছেন, ‘কী ভাগ্যি, আমার লেখার প্রতি তার আস্থা জাহির করেছে প্রতিবার। কিন্তু বেশ অবাক হয়েছি আমি, কেননা কাজের সূত্রে যখনই কলকাতায় এসেছে জয়া, খোঁজ নিয়েছে আমার। ফোনে বার্তা পাঠিয়ে ডাক দিয়েছে খোশগল্পের, প্রতিবারই। অবাক হয়েছি এই কথা ভেবেই যে, আমার রোজকার বন্ধুবৃত্তে যে-মানুষটা যাতায়াত করে না, যার সঙ্গে আমার কোনও কাজের সম্পর্কও নেই, সে নিজে কীভাবে টানা এতদিন ধরে নিখাদ আড্ডার আগ্রহ ধরে রাখছে? মাঝখানে সাক্ষাতের অভাবে ঢাকার একুশে বইমেলা থেকে একগুচ্ছ অসামান্য বই কিনে উপহার করে পাঠিয়েও দিয়েছে আমার বাড়ি। আজ, এই মাঝবয়সে এসে মনে হয়, বন্ধু হতে গেলে সব সময়ে প্রতিদিনকার ওঠাবসা দরকার হয় না। দূরের কোনও একটা সুতোয় টান পড়লে যে-সাঁকো আপনি নড়ে ওঠে, তারও নাম বন্ধুত্ব। তাকে এমনি দেখা যায় না। কুয়াশা দিয়ে সে ঢাকা থাকে সারাক্ষণ।’

জয়ার আন্তরিক আমন্ত্রণে বরাবরই মুগ্ধ হয়েছেন শ্রীজাত। একথা উল্লেখ করে পোস্টে তিনি লিখেছেন, ‘অমুক দিন থেকে তমুক দিন এখানে আছি, তারপর আউটডোর। একদিন সময় হবে?’ – আন্তরিক এই আমন্ত্রণ আমার ফোনে এসেওছে একাধিক সময়ে, জয়ার তরফেই। মন বারবার সাড়া দিলেও, আড্ডা দেওয়া হয়ে ওঠেনি। সে নিজে দুই বাংলার ব্যস্ততম অভিনয়শিল্পীদের একজন, আমাকেও দিনমজুরি’র ছোটাছুটি নিয়ে থাকতে হয়। তাই আড্ডার আগ্রহ থাকলেও, তারিখ কেবলই পিছিয়ে যাচ্ছিল। শেষমেশ আজ সেটা সম্ভব হল এবং আবারও, জয়ারই তোড়জোড়ে।’

   

এরপরই শ্রীজাত লিখেছেন জয়া আহসানকে নিয়ে তার মতলবের কথা। যদিও বিষয়টি তিনি খোলাসা করেননি। লিখেছেন, ‘আমার উল্টোদিকের পাড়া যোধপুর পার্কেই তার কলকাতার আস্তানা, সেখানে সন্ধে থেকে টানা অনেকক্ষণ গল্পে মেতে থাকা গেল অবশেষে। ছবি থেকে উপন্যাস, থিয়েটার থেকে কবিতা, স্বপ্ন থেকে বাস্তব, কথার সুতো বুনতে বুনতে আমরা তৈরি করছিলাম সময়ের শীতলপাটি, যা বিছিয়ে দেবার বড় একটা সুযোগ আজকের এই ব্যস্ত জীবনে বন্ধুদের হয় না (অবশ্য বেরনোর আগে চুপিচুপি একখানা মতলবও এঁটেছি আমরা, সে-কথা এখনই বলবার নয়)।’

সমকালীন বাংলা ভাষার আধুনিক কবিদের মধ্যে শ্রীজাত অন্যতম। তিনি আনন্দ পুরস্কারে ভূষিত হয়েছেন ‘উড়ন্ত সব জোকার’ কাব্যগ্রন্থের জন্য। সোশ্যাল নেটওয়ার্কিং সাইটে বিভিন্ন সময় নিজের অভিমত ব্যক্ত করে তিনি প্রবল জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন। অন্যদিকে জয়া আহসান দুই বাংলাতেই সমান জনপ্রিয় অভিনেত্রী। অভিনয়ের স্বীকৃতি হিসেবে তিনি তিনটি জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার, দুটি ফিল্মফেয়ার পুরস্কারসহ ভারতীয় জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার অর্জন করেছেন।   রাইজিংবিডি/ঢাকা/২৫ আগস্ট ২০১৯/তারা