বিনোদন

‘মৌসুমীকেই বলতে হবে, কে এই অদৃশ্য শক্তি?’

শিল্পী সমিতির নির্বাচনকে ঘিরে সরগরম বিএফডিসি। সাধারণত কালেভদ্রে বিএফডিসিতে শিল্পীদের দেখা মেলে। কিন্তু এখন অধিকাংশ সময় বিএফডিসি লোকে লোকারণ্য। যাদের বেশিরভাগ বহিরাগত। নির্বাচনকে কেন্দ্র করে বহিরাগতদের আনাগোনা বেড়েই চলেছে।

এ বিষয়ে মিশা সওদাগর বলেন, ‘বহিরাগতদের আনাগোনা ঠেকাতে আর নির্বাচনের পরিবেশ নিয়ে বিএফডিসি প্রশাসন ও নির্বাচন কমিশন সতর্ক অবস্থানে রয়েছেন, যাতে নির্বাচনকে ঘিরে কোনো অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে।’

আগামী ২৫ অক্টোবর বিএফডিসিতে শিল্পী সমিতির দ্বি-বার্ষিক নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এতে মিশা সওদাগরের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন চিত্রনায়িকা মৌসুমী। এ বিষয়ে মিশা সওদাগর বলেন, ‘এটা কিন্তু প্রতিদ্বন্দ্বিতা নয়। এখানে চার-পাঁচ শ’ মেম্বার আছে তাদের কাছে আমি বা মৌসুমী একই সমান। মৌসুমী গুণী অভিনেত্রী, অনেক উচ্চমার্গীয় মনের মানুষ এছাড়াও সে অনেক গুণে গুণান্বিত। তিনি শিল্পী সমিতির সেবা করতে চান। এটা শিল্পীদের জন্য ভালো খবর। কিন্তু বর্তমান কমিটি শিল্পী সমিতিকে এমন একটা অবস্থানে নিয়ে গেছে যা দেখে এখন অনেকেই নেতৃত্ব দেয়ার আগ্রহ প্রকাশ করছেন। আমরা যে মানবিক কাজের পরিচয় বহন করে রেখেছি, সে কাজের সাক্ষী তারাও হতে চায়। আমি বরাবরই বলে আসছি, ভোটাররা যদি আমাকে নির্বাচিত করেন আমি ফুলের মালা পরব, আর যদি মৌসুমী জয়ী হয় তাকে আমি ফুলের মালা পরিয়ে দেব। এখানে হার-জিৎ ব্যাপার না। নির্বাচন করার উদ্দেশ্য শিল্পীদের সেবা করা।’

এ অভিনেতা আরো বলেন, ‘শিল্পী সমিতি একটি অরাজনৈতিক, অলাভজনক প্রতিষ্ঠান, এখানে সময় দিতে হবে, শিল্পীদের সেবা করতে হবে। মৌসুমী যদি নির্বাচিত হয়ে আসে তাকে স্বাগতম জানাব। সে ব্যস্ত মানুষ, যদি সমিতির পেছনে সময় দিতে পারে ভালোই হবে। আর শিল্পীরা যদি মনে করেন তার সেবা নেবে সে রাস্তাও খোলা। কিন্তু আমরা চাই শান্তিপূর্ণ নির্বাচন। প্রত্যাশা একটাই যারাই কমিটিতে আসুক তারা যেন চলচ্চিত্রের স্বার্থে কাজ করেন।’

এদিকে নির্বাচনের শুরু থেকে মৌসুমী বিভিন্ন অভিযোগ করেছেন, তার নির্বাচনের ক্ষেত্রে নাকি বাধা দেয়া হচ্ছে, একটি অদৃশ্য চাপ প্রয়োগ করা হচ্ছে। এ বিষয়ে মিশা সওদাগর বলেন, ‘আমি স্বতস্ফূর্তভাবে বলতে চাই—একজন শিল্পীকে সৎ এবং সাহসী হতে হবে। শিল্পীদের বড় শক্তি লাখ লাখ ভক্ত। মৌসুমীর মতো শিল্পীকে কেউ আঙ্গুল তুলে কথা বলবে এমন সাহস কারো নেই। যে শিল্পী তার সমস্যার কথা বলতে পারে না, কে বা কারা তাকে বাধা প্রদান করছে? কে তাকে প্যানেল করতে দেয়নি? নিজের সমস্যার কথা মৌসুমীকেই বলতে হবে, কে এই অদৃশ্য শক্তি? নাম না বলে বিচ্ছিন্নভাবে কথা বললে এ অভিযোগের কোনো ভিত্তি থাকে না। তার অভিযোগ ভিত্তিহীনই রয়ে যাবে।’

শিল্পীদের উদ্দেশ্য মিশা সওদাগর বলেন, ‘শিল্পীদের কাছে কেউ সুপারস্টার নয়, সুপারস্টার দর্শকের কাছে। সমিতিতে যখন বসব তখন সবাই সমান। তবে সিনিয়রদের সম্মান সবার আগে করতে হবে। যে যত বড় সুপারস্টার হোক না কেন একজন সিনিয়র শিল্পীকে তার প্রাপ্ত সম্মান দিতেই হবে। আমি যতই সভাপতি হই না কেন ফারুক, আলমগীর, সোহেল রানা, ববিতা, সুচন্দাদের কাছে সবসময়ই জুনিয়র।’

তিনি আরো বলেন, ‘পুনরায় নির্বাচিত হলে দুস্থ শিল্পীদের জন্য অল্প জায়গার মধ্যে হলেও আবাসনের ব্যবস্থা করা হবে। সিঙ্গেল যে হলগুলো রয়েছে সেগুলো কীভাবে উন্নত করা যায় সে ব্যাপারে হল মালিকদের সহায়তা করা হবে। কারণ হল বাঁচলেই সিনেমা বাঁচবে, সিনেমা বাঁচলেই শিল্পীরা বাঁচবে। একটি ফান্ড করা হবে যেকোনো ব্যাংকে। কোনো শিল্পী যদি বিপদে পড়েন তাহলে ওই ফান্ডের ইন্টারেস্ট থেকে সহযোগিতা করা হবে।’ ঢাকা/রাহাত সাইফুল/শান্ত