বিনোদন

৩১ নাটক নিয়ে বাংলা নাট্যোৎসব

ঢাকার অন্যতম নাটকের দল মহাকাল নাট্যসম্প্রদায়। দলটির তিন যুগ পূর্তি উপলক্ষে নাট্যোৎসবের আয়োজন করেছে। আজ সোমবার সন্ধ্যায় ‘বাংলা নাট্য উৎসব ২০১৯’-এর উদ্বোধন করা হবে। ১০ দিন ব্যাপী এ উৎসবে পশ্চিমবঙ্গ, ত্রিপুরা ও আসামের পাঁচটি নাটকসহ বাংলা ভাষাভাষীর ৩১টি নাটক প্রদর্শিত হবে।

মহাকাল নাট্যসম্প্রদায়ের অধিকর্তা মীর জাহিদ হাসান জানান, আজ সন্ধ্যা ছয়টায় বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালা মিলনায়তনে এই উৎসবের উদ্বোধন করবেন ত্রিপুরা বিধানসভার চিফ হুইপ কল্যাণী রায়, নাট্যজন রামেন্দু মজুমদার এবং মঞ্চসারথিখ্যাত আতাউর রহমান।

এ সময় প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত থাকবেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ, ইন্দিরা গান্ধী কালচারাল সেন্টারের পরিচালক নিপা চৌধুরী, বাংলাদেশ গ্রুপ থিয়েটার ফেডারেশনের সেক্রেটারি জেনারেল কামাল বায়েজীদ। এতে সভাপতিত্ব করবেন মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের সাবেক সভাপতি ও আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষণা সম্পাদক অ্যাডভোকেট আফজাল হোসেন। অনুষ্ঠান সঞ্চালন করবেন সংগঠনের ঊর্ধ্বতন সদস্য মীর নাহিদ আহসান। স্বাগত বক্তব্য দেবেন সংগঠনের সভাপতি মীর জাহিদ হাসান, শুভেচ্ছা বক্তব্য দেবেন উৎসব পরিষদের আহ্বায়ক কবির আহামেদ।

উৎসবে ভারতের আসাম রাজ্য থেকে ভাবিকাল থিয়েটার, পশ্চিমবঙ্গ থেকে এবং আমরা থিয়েটার ও রঘুনাথগঞ্জ থিয়েটার গ্রুপ এবং ত্রিপুরা থেকে শুভম নাট্যচক্র ও লারনার্স থিয়েটার অংশগ্রহণ করবে। বাংলাদেশের অংশগ্রহণকারী দলগুলো হচ্ছে—মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়, দেশনাটক, প্রাচ্যনাট, থিয়েটার আর্ট ইউনিট, নাট্যচক্র, বুনন থিয়েটার, শব্দ নাট্যচর্চা কেন্দ্র, আরণ্যক নাট্যদল, থিয়েটার সার্কেল, মুন্সিগঞ্জ, ঢাকা থিয়েটার, ব্যতিক্রম নাট্যগোষ্ঠী, নাট্যতীর্থ, সময়, নাগরিক নাট্যাঙ্গন অনসাম্বল, নাট্যম রেপর্টরি, লোক নাট্যদল (বনানী), বটতলা, অনুরাগ থিয়েটার, পদাতিক নাট্য সংসদ (টিএসসি), বাংলাদেশের পুতুলনাট্য গবেষণা কেন্দ্র, কথক, নাট্যযোদ্ধা, বাংলা নাট্যদল, চন্দ্রকলা থিয়েটার, নবনাট।

বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমির জাতীয় নাট্যশালার মূল মিলনায়তন, পরীক্ষণ থিয়েটার মিলনায়তন, বাংলাদেশ মহিলা সমিতির ড. নীলিমা ইব্রাহিম মিলনায়তন ও দনিয়া স্টুডিও থিয়েটার মিলনায়তনে প্রতিদিন সন্ধ্যা ৭টায় মঞ্চস্থ করবে তাদের আলোচিত প্রযোজনা।

মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের অধিকর্তা মীর জাহিদ হাসান বলেন, ‘জন্মলগ্ন থেকেই মহাকালের অভিপ্রায় ছিল রাষ্ট্রীয় ও আন্তর্জাতিক নানারকম সাম্প্রতিক সংকট উপজীব্য নাট্য প্রযোজনা মঞ্চে নিয়ে আসা। সংগ্রামী নারী আসমানী থেকে আরম্ভ করে মুক্তিযুদ্ধের বিস্তৃত ক্যানভাস, গীতিকার নারী, তাঁত শিল্পের কারিগর, প্রান্তিক জনমানুষ, লিঙ্গ প্রতিবন্ধী, সাম্প্রদায়িকতার বিরুদ্ধে, জঙ্গিবাদের মতো বিষয় ও নানামাত্রিক চরিত্র উঠে এসেছে মহাকালের নাট্য আয়োজনে।’

তিনি আরো বলেন, ‘প্রাপ্তি-অপ্রাপ্তি, সাফল্য-ব্যর্থতার হিসাব কষতে গেলে শিল্পপ্রয়াসের ধারাবাহিকতাকে ছোট করা হবে। মহাকাল গর্বিত তার কর্মময় ছত্রিশ বছরের জন্য। মহাকালের অতিক্রান্ত ছত্রিশটি শ্রাবণ- নানামাত্রিক অভিজ্ঞতা, আবেগ ও ভালোবাসার ছত্রিশটি কদম ফুল। সাদা আকাশে যাক ভেসে যাক অমল সাদা মেঘ-মাটি ফুড়ে উঠুক নতুন ঘাসের পাতা আর অনামা ফুল। বাঙলা নাটকের মঙ্গল হোক আরাধ্য শিল্পতীর্থে পৌঁছে যাক।’

বাঙালির হাজার বছরের সংস্কৃতির প্রতি অবিচল আনুগত্যে স্থির থেকে নিয়মিত নাট্যচর্চার প্রত্যয়ে ১৯৮৩ সালের ১৪ জুলাই মহাকাল নাট্য সম্প্রদায়ের পথচলা শুরু। নাট্যদলটি প্রতিষ্ঠার পর থেকে এ পর্যন্ত ৪০টি প্রযোজনা মঞ্চে এনেছে। ইতোমধ্যে ১ হাজার ১৯টি প্রদর্শনী সম্পন্ন করেছে। ২টি নাট্য প্রযোজনার শতাধিক মঞ্চায়ন এবং ১টি প্রযোজনার দেড়শত মঞ্চায়ন সম্পন্ন করেছে। ৪টি প্রযোজনার নিয়মিতভাবে মঞ্চায়ন অব্যাহত রেখেছে দলটি। ঢাকা/শান্ত