বিনোদন

ছোট পর্দায় মজনু শাহ

পলাশীর যুদ্ধে ইংরেজদের হাতে পরাজয়ের পর স্বাধীনতা পুনরুদ্ধারের জন্য প্রথম যুগের স্বাধীনতা সংগ্রামে যেসব বীর যোদ্ধা সম্মুখ সারিতে ছিলেন তার মধ্যে ফকির মজনু শাহ অন্যতম। মজনু শাহ গোয়ালি রাজ্যের (বর্তমান ভারত) মেওয়াত এলাকায় জন্মগ্রহণ করেন। বর্তমান ভারতের কানপুর থেকে চল্লিশ মাইল দূরে তিনি বাস করতেন। এখান থেকে শতাধিক সশস্ত্র অনুচর নিয়ে ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানির অধিকারভুক্ত বাংলা ও বিহারের বিভিন্ন স্থানে গেরিলা অভিযান চালাতেন তিনি।

তার কার্যক্ষেত্র প্রধানত বিহারের পানিয়া অঞ্চল, বাংলার রংপুর, দিনাজপুর, রাজশাহী, কোচবিহার, মালদহ, সিরাজগঞ্জ, পাবনা ও ময়মনসিংহ জেলা বিস্তৃত ছিল। তিনি ঢাকা, সিলেট নিম্নবঙ্গের কোনো কোনো জায়গায়ও অভিযান পরিচালনা করেছেন। বগুড়ার মহাস্থানগড়ে ফকির নেতা মজনু শাহর আস্তানা বা প্রধান ঘাঁটি ছিল। ১৭৭৬ খ্রিষ্টাব্দে এখানে একটি দুর্গ নির্মাণ করেছিলেন তিনি। এখান থেকে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করেছেন। তার মধ্যে আদমদীঘি থানার অভিযানগুলো ছিল উল্লেখযোগ্য।

এই ঐতিহাসিক পটভূমি নিয়ে এবার নির্মিত হয়েছে একক নাটক ‘রক্তদহ’। পরিচালনা করেছেন মুরসালিন শুভ। নাটকটি রচনা করেছেন সাংসদ, রবীন্দ্র গবেষক, লেখক মো. ইসরাফিল আলম। ঐতিহাসিক পটভূমি নিয়ে নাটক রচনা প্রসঙ্গে মো. ইসরাফিল আলম বলেন, ‘‘ফকির সন্ন্যাসী মজনু শাহ ও ইংরেজ সৈন্যদের মাঝে যুদ্ধে প্রচুর লোক হতাহত হওয়ায় বিল ভোমরার পানি রক্তের জোয়ারে লাল রং ধারণ করে। সেই থেকে বিল ভোমরা ঐতিহাসিক ‘রক্তদহ’ বিল নাম ধারণ করে। এই ইতিহাস এ যুগের ছেলে-মেয়েরা জানে না। এছাড়া এখন টিভি নাটক ও সিনেমায় শুধু প্রেম-ভালোবাসার নাটক প্রচার হওয়ার কারণে এ প্রজন্মের দর্শকদের রুচি ও চেতনার পরিবর্তন হচ্ছে না। ইতিহাসও জানছে না। এ কারণে এমন ঐত্যিহাসিক কাহিনি নিয়ে নাটক নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া।’’

এ নাটকের বিভিন্ন চরিত্রে অভিনয় করেছেন—শ্যামল মাওলা, নাজিরা মৌ, আব্দুল্লাহ রানা, অভি, কেয়া মণি, রাজিন, সানজিদা কাইয়ুমসহ অর্ধশত অভিনয়শিল্পী।

সম্প্রতি নওগাঁ, আত্রাই, রানীনগর, বগুড়ার বিভিন্ন স্থানে এ নাটকের দৃশ্যধারণের কাজ হয়েছে। বড় বাজেটের নাটকটি প্রযোজনা করেছে দাগ এন্টারটেনমেন্ট মিডিয়া লি.। খুব শিগগির একটি বেসরকারি টেলিভিশন চ্যানেলে প্রচার হবে নাটকটি।

 

ঢাকা/শান্ত