বিনোদন

‘কান্না চেপে রাখতে পারছি না’

‘মনটা বড্ড খারাপ, সারাক্ষণ চেষ্টা করছি মনটাকে ঠিক রাখার, কিন্তু কিছুতেই পারছি না। সবাই বলে প্রেগনেন্ট হলে হাসিখুশি থাকতে হয়, কী করে থাকব বলোতো! তোর কথা ভেবেই সব ভোলার চেষ্টা করছি। কিন্তু এত ধ্বংসস্তূপ আগে কখনো দেখিনি যে। কান্না চেপে রাখতে পারছি না। নিজের মনটাকে বোঝানোর চেষ্টা করছি, না না এখন মন খারাপ করলে চলে না! ভাবছি, তুই কী ভাববি…। কিন্তু নিজেকে আটকে রাখতে পারছি না।’—টলিউড অভিনেত্রী শুভশ্রী গাঙ্গুলি মা হতে যাচ্ছেন। তার অনাগত সন্তানের উদ্দেশ্যে একটি চিঠি লিখেছেন তিনি। তারই প্রথমাংশে এসব কথা লিখেন এই অভিনেত্রী।

করোনার প্রকোপে ভারতের নাজেল অবস্থা। তার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় আম্ফান এসেছে গোদের উপর বিষফোঁড়া হয়ে। এই ঝড়ের তাণ্ডবে গাছ উপড়ে গেছে, গৃহহীন হয়েছেন অসংখ্য মানুষ। এসব কথাও সন্তানের উদ্দেশ্যে বলেছেন শুভশ্রী। এ অভিনেত্রী লিখেন—‘জানিস কত হাজার হাজার গাছ মাটিতে লুটিয়ে পড়েছে। সেগুলোকে আর ফেরানো যাবে না। ওই গাছগুলোকে যে এতো ভালোবাসতাম আগে কখনো অনুভব করিনি। তোকে গলফগ্রীন, সাউদার্ন এভিনিউ, ময়দানের সবুজ দৃশ্য আর দেখানো হলো না। সেই বড় বড় গাছগুলো তো শুধু গাছ ছিল না, ছিল হাজার হাজার পাখির বাসা। তুই দেখতে পেলি না! ৮২ হাজার ঘর ভেঙে গেল এই ঝড়ে।’

মানুষ নিজ স্বার্থে অবলীলায় প্রকৃতিকে ধ্বংস করে যাচ্ছে। এজন্য প্রকৃতির বিরূপ আচরণ অন্যায় কিছু নয়! এসব বিষয়ও উঠে এসেছে চিঠিতে। শুভশ্রীর ভাষায়—‘মাঝে মাঝে চিৎকার করে প্রকৃতিকে বলতে ইচ্ছে করছে, আর কত? আবার ভয়ও লাগছে, পাছে যদি পাল্টা প্রশ্ন আসে! পৃথিবীর হৃৎপিণ্ড যখন দাউ দাউ করে জ্বলছিল, কোথায় ছিল তোদের মনুষ্যত্ব? প্রকৃতির কোল কেটে যখন ফ্ল্যাটবাড়ি বানাস, তখন তোদের বিবেকে বাঁধে না? জঙ্গলের মাঝেই রেল লাইন পাতিস, আর তাতেই কাটা পড়ে কত হাতির দল। কটা প্রশ্ন করিস তোরা মানুষরা? ছি-ছি সত্যিই কোনো উত্তর দিতে পারব না। তার জন্যেই চুপ করে আছি।’

খাবারের থালা হাতে এক বাচ্চার ছবি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ভাইরাল হয়েছে। শুভশ্রী তার সন্তানকে উদ্দেশ্য করে এ বিষয়ে লিখেন—‘বুক অবধি জল নিয়ে ত্রাণের খাবার নিতে এসেছে বছর চারের এক বাচ্চা, এরপরেও তোর কথা ভেবে কী করে বেশি বেশি খাই বলতো? এই তো আর কিছু বছর পর তুইও ওর সমানই হবি। ও তো তোরই মতো!’

 

ঢাকা/শান্ত