বিনোদন

যেভাবে হয়েছিল সঞ্জয়-মান্যতার প্রেম

বলিউডের অন্যতম আলোচিত জুটি অভিনেতা সঞ্জয় দত্ত ও মান্যতা। কীভাবে তাদের প্রেমের সম্পর্ক শুরু, পরবর্তী সময়ে এই জুটির বিয়ে— এ নিয়ে বলিপাড়ায় অনেক গল্পই প্রচলিত আছে।

ব্যক্তিগত জীবনে অনেক নারীর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন সঞ্জয় দত্ত। এমনকি মান্যতার আগে দুইবার বিয়েও করেছেন। কিন্তু মান্যতাকে বিয়ের পর যেন নিজেকেই বদলে ফেললেন সঞ্জয়। তিনি এখন আদর্শ স্বামী ও দুই সন্তানের যত্নশীল বাবা।

সঞ্জয় ও মান্যতার পরিচয় অনেকটা নাটকীয়ভাবে। সেই সময় নাদিয়া দুরানি নামে এক জুনিয়র আর্টিস্টের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে ছিলেন সঞ্জয়। তখনই মান্যতার সঙ্গে এই অভিনেতার পরিচয়। মান্যতার নাম ছিল দিলনাওয়াজ শেখ। পরবর্তী সময়ে নাম পরিবর্তন করেন তিনি।

নাদিয়া ও মান্যতার মধ্যে কোনো বিষয়ে মিল ছিল না। নাদিয়া জাঁকজমকপূর্ণ জীবন পছন্দ করতেন। সঞ্জয়ই তার সব ইচ্ছা পূরণ করতেন। অন্যদিকে মান্যতা সঞ্জয়কে রান্না করে খাওয়াতেন। ধীরে ধীরে সঞ্জয়ের মনে জায়গা করে নেন মান্যতা। ‘সজন’ সিনেমাখ্যাত এই অভিনেতার ব্যাপারে খুবই যত্নশীল ছিলেন মান্যতা। শুটিং সেটে তার প্রিয় খাবার রান্না করে নিয়ে যেতেন। এছাড়া ব্যক্তিগত ও পেশাদার বিভিন্ন বিষয়ে খেয়াল রাখতেন। সঞ্জয়ের কোনো ক্ষতি হতে দিতেন না। সবকিছু মিলিয়ে মান্যতার প্রতি সঞ্জয়ের আকর্ষণ দিন দিন বাড়তেই থাকে।

এক সাক্ষাৎকারে মান্যতা বলেন, ‘যেখানে ক্ষমতা আছে সেখানেই ষড়যন্ত্রকারী থাকবে। সঞ্জয় ক্ষমতাশালী। তার আশেপাশের অনেকেই তাকে ব্যবহারের চেষ্টা করে। যারা তাকে ব্যবহার করতে চায় তাদের ও সঞ্জয়ের মাঝে আমি ব্যারিকেড। স্বাভাবিকভাবেই এই ক্ষণিকের বন্ধুরা আমার প্রতি বিরক্ত ছিল। কারণ আমি তাদের উদ্দেশ্য পণ্ড করে দিতাম।’

দীর্ঘদিন প্রেম করার পর ২০০৮ সালে ৭ ফেব্রুয়ারি ভারতের পর্যটন নগরী গোয়ার তাজ এক্সোটিকাতে আনুষ্ঠানিকভাবে বিয়ে করেন সঞ্জয় ও মান্যতা। হিন্দু ধর্মমতে তাদের বিয়ে হয়। সেই সময় তাদের বিয়ে নিয়ে অনেক আলোচনাও হয়েছিল। সঞ্জয়ের সঙ্গে বিয়ে প্রসঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে মান্যতা বলেন, ‘আমার সবচেয়ে সুখের ঘটনা। সাঞ্জু সবসময় আমার সুখে-দুঃখে পাশে থেকেছে। আমি তাকে নয় বছর ধরে চিনি। ২০০৫ সালে আমার ও তার মধ্যে সম্পর্ক গড়ে ওঠে। সে আমার অতীত জানত। তাই তার বন্ধুরা যখনই তাকে আমার সম্পর্কে ক্ষেপানোর চেষ্টা করত সে শুধু হাসত। সে আমার সম্পর্কে সব জানে। বিয়ের আগে যখন দুর্বিসহ সময় কাটাচ্ছিলাম ফোন করে তার কাছে সাহায্য চেয়েছিলাম। আমরা দুজনই খুবই ইতিবাচক মানসিকতার। আর সবারই অতীত থাকে। আবার পরবর্তী সময়ে সুন্দর ভবিষ্যতও হতে পারে।’

বিয়ের দুই বছর পর এই দম্পতির ঘরে আসে যজম সন্তান শাহরান ও ইকরা দত্ত। সন্তানদের সঙ্গে সময় কাটাতে খুবই পছন্দ করেন সঞ্জয়।

বিয়ে, সন্তানের জন্ম সব মিলিয়ে বেশ ভালোই কাটছিল সঞ্জয়ের সংসার। কিন্তু আদালতের রায়ে সঞ্জয়কে সাড়ে তিন বছরের জন্য কারাগারে যেতে হয়। তবে ভেঙে না পড়ে শক্তভাবেই সংসারের হাল ধরে রাখেন মান্যতা। এদিকে সঞ্জয়ও জেল থেকেই পরিবারের খোঁজ রাখতেন। শুধু তাই নয়, মান্যতার জন্মদিনে জেলে বসেই কবিতা লিখেছিলেন এই অভিনেতা। সাজার মেয়াদ শেষ করে এখন স্ত্রী-সন্তান নিয়ে সুখেই আছেন সঞ্জয়।

এক সাক্ষাৎকারে সঞ্জয় বলেন, “মান্যতা আমার ‘বেটার’ নয় ‘বেস্ট হাফ’। আমার শক্তি। যখনই আমি বিপদে পড়েছি সে আমাকে সাহায্য করেছে। আমার চেয়ে সে বেশি কষ্ট সহ্য করেছে। একা একা সন্তানদের লালন-পালন করেছে। প্রতিনিয়ত এগুলো উপলব্ধি করে প্রার্থনা করি, যেন এমন কষ্ট কাউকে না পেতে হয়।”