বিনোদন

৬৮ কারাগারে কার‌াব‌ন্দিদের দি‌য়ে মঞ্চস্থ হ‌বে ‘কবর’

দেশে প্রথমবারের মতো শুরু হচ্ছে কারানাট্য। কারাবন্দির মনস্তত্বে ইতিবাচক উন্নয়ন, আত্মসংশোধন প্রণালী রূপে কারানাট্য ও কারাগারে সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ড পরিচালনার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের থিয়েটার অ্যান্ড পারফরম্যান্স স্টাডিজ বিভাগের অধ্যাপক ও উপমহাদেশের বহুমাত্রিক নাট্যব্যক্তিত্ব ড. ইসরাফিল শাহীনের তত্ত্বাবধানে এটি পরিচালিত হবে। 

তিন বছরব্যাপী এই গবেষণাধর্মী কাজের জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ও কারা অধিদপ্তর অনুমতি দিয়েছে। এই মাসের শেষ সপ্তাহে এ প্রকল্পের কাজ কেরানীগঞ্জ বাংলাদেশের কেন্দ্রীয় কারাগার দিয়ে শুরু হবে। আগামী বছর ২১ ফেব্রুয়ারি বাংলাদেশের ৬৮টি কারাগারের অভ্যন্তরে কারাবন্দির অংশগ্রহণে মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকটি মঞ্চায়িত হবে।

একইভাবে দেশের বিভিন্ন কারাগারে কারাবন্দিরা পর্যায়ক্রমে মঞ্চস্থ করবেন সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ‘অসমাপ্ত আত্মজীবনী’ ও ‘কারাগারের রোজনামচা’ গ্রন্থ থেকে বিভিন্ন দৃশ্য। এছাড়া জেল হত্যা দিবসে জাতীয় চার নেতার নৃশংস হত্যাকাণ্ডটি কারাগারের অভ্যন্তরে কারাবন্দিদের দ্বারা অভিনীত এবং পরিবেশন করা হবে।

ডিসেম্বরের প্রথম সপ্তাহে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের নবাব নওয়াব আলী চৌধুরী সিনেট ভবন অথবা বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমিতে গবেষণা প্রকল্প ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের উদ্বোধনী অনুষ্ঠান আয়োজিত হবে। অনুষ্ঠানে উপস্থিত থাকবেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান, কৃষিমন্ত্রী ড. আব্দুর রাজ্জাক, সংস্কৃতি প্রতিমন্ত্রী কে এম খালিদ, সুরক্ষা সেবা বিভাগের সচিব মো. শহিদুজ্জামান এবং ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. আখতারুজ্জামান।

ড. ইসরাফিল শাহীনের সঙ্গে এই কর্মকাণ্ডে দেশের বরেণ্য নাট্যশিক্ষক, নির্দেশক, নাট্যকলার বিভিন্ন বিষয়ে এম.ফিল-পিএইচ.ডি গবেষকবৃন্দ, শিল্প, সাহিত্যিক, এবং অঞ্চলভিত্তিক নির্বাচিত সাংস্কৃতিক কর্মীরা অংশগ্রহণ করবেন।

এ প্রসঙ্গে ড. ইসরাফিল শাহীন বলেন, ‘নাটক মঞ্চায়ন, সংগীত পরিবেশন, কবিতা আবৃত্তি, নৃত্য, গল্প বলা, খেলাধুলা ইত্যাদি পরিবেশনা বন্দির মনে ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে এবং কারামুক্তির পর স্বাভাবিক জীবনে ফিরে যেতে সহায়ক ভূমিকা রাখবে। কারাগারের বদ্ধ পরিবেশে দলগতভাবে নাট্যচর্চা ও সাংস্কৃতিক কর্মকাণ্ডের মাধ্যমে একজন অপরাধীর মানবিক গুণাবলীসমূহ বিকশিত হবে এবং আত্ম-প্রতিফলন প্রক্রিয়ার ভেতর দিয়ে কারাবন্দি ব্যক্তি অনুধাবন করতে পারবে যে, সে কী ভুল করেছে এবং কীভাবে নিজেকে শোধরাতে পারবে।’