বিনোদন

বনানী কবরস্থান মসজিদে আলী যাকেরের প্রথম জানাজা

বরেণ্য সাংস্কৃতিক ব্যক্তিত্ব আলী যাকেরের মরদেহ শুক্রবার সকাল ১১টায় মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে নেওয়া হয়েছে। শেষ শ্রদ্ধা জানানোর জন্য তার মরদেহ দুপুর আড়াইটা পর্যন্ত সেখানে রাখা হবে।

আজ বাদ আসর নগরীর বনানী কবরস্থান মসজিদে তার প্রথম জানাজা অনুষ্ঠিত হবে। তবে কোথায় দাফন করা হবে তা এখনো সিদ্ধান্ত হয়নি। রাইজিংবিডিকে এ তথ্য জানিয়েছেন অভিনয়শিল্পী সংঘের সাধারণ সম্পাদক আহসান হাবিব নাসিম।

গত চার বছর ধরে ক্যানসারের সঙ্গে লড়াই করছিলেন আলী যাকের। চিকিৎসার অংশ হিসেবে থেরাপি চলছিল। গত সপ্তাহে হঠাৎ অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। পরে জরুরি ভিত্তিতে তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। চিকিৎসকদের পরামর্শে তাকে সিসিইউতে নেওয়া হয়।

পরে কিছুটা সুস্থ হলে গত ২১ নভেম্বর বাসায় নেওয়া হয় তাকে। কিন্তু পরের দিন আবার হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়। গত ২৩ নভেম্বর কোভিড-১৯ পরীক্ষা করানো হলে ফল পজিটিভ আসে। শুক্রবার সকালে শেষ নিশ্বাস ত্যাগ করেন এই শিল্পী।

১৯৪৪ সালের ৬ নভেম্বর চট্টগ্রামের রতনপুর ইউনিয়নে জন্মগ্রহণ করেন আলী যাকের। ১৯৬০ সালে সেন্ট গ্রেগরি থেকে ম্যাট্রিক পাস করে নটরডেমে ভর্তি হন। সেখান থেকে ইন্টারমিডিয়েট পাস করেন তিনি। এরপর সমাজবিজ্ঞানে স্নাতক করেন। অনার্স পড়াকালেই ছাত্ররাজনীতিতে যোগ দিয়েছিলেন। ছাত্র ইউনিয়ন করতেন। অনার্স শেষ হওয়ার পর অর্থাৎ ১৯৬৭ সালে চলে যান করাচি। সেখানেই প্রথম অভিনয় করেন আলী যাকের। ১৯৬৯ সালে ঢাকায় ফিরেন তিনি।

১৯৭২ সালের আলী যাকের আরণ্যক নাট্যদলের হয়ে মামুনুর রশীদের নির্দেশনায় মুনীর চৌধুরীর ‘কবর’ নাটকে অভিনয় করেন। একই বছরের জুন মাসের দিকে আতাউর রহমান ও জিয়া হায়দারের আহ্বানে নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ে যোগ দেন। এই দলের হয়ে আতাউর রহমানের নির্দেশনায় ‘বুড়ো শালিকের ঘাড়ো রোঁ’ নাটকে প্রথম অভিনয় করেন। ১৯৭৩ সালে নাগরিক নাট্যসম্প্রদায়ে প্রথম নির্দেশনা দেন বাদল সরকারের ‘বাকি ইতিহাস’ নাটকটি। যা ছিল বাংলাদেশে প্রথম দর্শনীর বিনিময়ে নাট্য প্রদর্শনী।

দর্শকের ভালোবাসা যেমন কুড়িয়েছেন নন্দিত এই শিল্পী, তেমনি প্রাপ্তির ঝুলিতে জমা পড়েছে অসংখ্য পুরস্কার। এ তালিকায় রয়েছে, একুশে পদক, বাংলাদেশ শিল্পকলা একাডেমি পুরস্কার, বঙ্গবন্ধু পুরস্কার, মুনীর চৌধুরী পদক, নরেন বিশ্বাস পদক প্রভৃতি।