বিনোদন

তৃণমূল ছেড়ে বিজেপিতে কেন জানালেন মিঠুন

এক সপ্তাহের জন্য সাংসদ হয়ে জনগণের পাশে দাঁড়িয়েছিলেন ‘ফাটাকেষ্ট’। সিনেমার পর্দায় চরিত্রটি রূপায়ন করেন কিংবদন্তি অভিনেতা মিঠুন চক্রবর্তী।

তবে এবার বাস্তবেই তিনি পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী হওয়ার দৌড়ে। সম্প্রতি বিজেপিতে যোগ দিয়েছেন তিনি। দীর্ঘদিন দূরে থাকার পর আবারো রাজনীতির মাঠে এই অভিনেতাকে দেখার পর শুরু হয়েছে জল্পনা। শুধু তাই নয়, এক সময় তৃণমূল কংগ্রেসের পতাকা হাতে কাজ করলেও এবার তিনি শত্রুশিবির বিজেপিতে (ভারতীয় জনতা পার্টি)।

শারীরিক অসুস্থতাসহ নানা কারণে দীর্ঘদিন মিডিয়া থেকে দূরে ছিলেন মিঠুন। বিজেপিতে যোগ দেওয়ার পর ভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যমে বিভিন্ন বিষয়ে কথা বলেছেন তিনি। কেন তিনি বিজেপিতে যোগ দিলেন, কেন তার দলবদল- সবই উঠে এসেছে এই সাক্ষাৎকারে।

অতীতে প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে রাজনীতির মাঠে থেকেছেন। ব্যক্তিগত উদ্যোগে মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছেন। বিজেপিতে যোগ দেওয়া প্রসঙ্গে মিঠুন চক্রবর্তী বলেন, ‘বিজেপি ভালো কিছু করতে চায়। তারা পশ্চিমবঙ্গের উন্নয়ন করতে চায়। কিন্তু মানুষ কতদিন বিরোধীতা করবে। বিরোধীতা ভালো কিন্তু সব সময় নয়। কখনো কখনো স্বরোধীতা করতে হয়। গণতন্ত্রে বিরোধীতা প্রয়োজন আছে কিন্তু সব সময় না। বিরোধীতা করলে পশ্চিমবঙ্গে কখনো উন্নয়ন হবে না। এখনই সুবর্ণ সুযোগ।’

তিনি আরো বলেন, “এখন কেন্দ্রে বিজেপি। এখানেও বিজেপি আসলে তারা চাইবে এই রাজ্যটাকে ধরে রাখতে। আর ধরে রাখতে হলে ভালো করতেই হবে। আমার মূল আগ্রহটা এখানেই। হ্যাঁ, এটাই সুযোগ। আর প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে আমার ১৫ মিনিট কথা হয়েছে। তিনি আমাকে মিঠুনদা বলে সম্বোধন করেছেন। তিনি বলেন, ‘আমরা সবার সরকার চাই। এক চোখে সরকার চালাবো না, দুই চোখে সরকার চালাবো। আর সাফল্যমণ্ডিত পশ্চিমবঙ্গ গড়ে উঠবে। এগিয়ে যান। সরকার গঠন করেন। আমার যতটুকু সামর্থ্য আছে করব।’ এর থেকে আর কি চাই।”

সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সমাবেশে উপস্থিত হয়ে দিলীপ ঘোষের হাত থেকে বিজেপির পতাকা গ্রহণ করেন মিঠুন। এরপর ফিল্মি কায়দায় বলেন, ‘আমি জলঢোরাও নই, বেলেপোড়াও নই, আমি একটা কোবরা। আমি জাত গোখরো। এক ছোবলেই ছবি।’

সাক্ষাৎকারে মিঠুন বলেন, ‘আমি শাব্দিকভাবে বিষয়টি বোঝাতে চাইনি। মূলত, রাজনীতির বিষয়ে আমি কোনো সমঝোতা করতে চাই না। ভালো কাজে কেউ বিরোধীতা করলে কোনো ছাড় দিব না।’ অনেকেই মন্তব্য করছেন, তবে কি প্রতিশোধের হুশিয়ারি দিয়ে দিলেন ‘মহাগুরু’? এর মাধ্যমে কি ক্ষোভ উগরে দিলেন তিনি? তবে মিঠুনের কথায়, ‘ক্ষোভ নয়, অভিমান বলা চলে। সবাই আশা করে পশ্চিমবঙ্গ পুরো ভারতের কাছে উদাহরণ হবে। আমরা যারা রাজ্যের বাইরে থাকি, যখন কেউ এ বিষয়ে কথা বলে আমাদের অনেক কষ্ট হয়। বাংলা ও বাঙালিদের বিষয়ে আমি খুব আবেগপ্রবণ। পুরো ভারতের মানুষ আমাকে সুপারস্টার বানিয়েছে। অন্যদের আমি বিরোধীতা করছি না। কিন্তু এখানকার নাড়ির টানটা তো এখনো কাটিনি।’

ব্যক্তিগত জীবনে অনেকেই তাকে ডাকতেন ‘ফাদার তেরেসা’। কারণ সমাজকল্যাণমূলক অনেক কাজই তিনি করেছেন। এমনকি শুধু আর্থিক সাহায্য করা পর্যন্তই থেমে থাকেননি। পরবর্তী সময়েও পাশে থাকেন। তবে নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করবেন কিনা তা এখনো নিশ্চিত নন। 

মিঠুন বলেন, ‘আমি প্রটোকলে বিশ্বাসী। এখনো কেন্দ্র থেকে আমাকে প্রার্থী হওয়ার কথা বলা হয়নি। প্রটোকলের বাইরে গিয়ে কোনো কথা বলব না বলিনি। এটি কোনো ইচ্ছাস্বাধীন দল নয়। এখানে কিছু বলতে গেলে উচ্চ পর্যায় থেকেই আসতে হবে।’