বিনোদন

যে কষ্ট বুকে চেপে বিদায় নিলেন ওয়াসিম

ঢাকাই চলচ্চিত্রে একচেটিয়া রাজত্ব করেছেন ফোক ফ্যান্টাসি আর অ্যাকশন ঘরানার সিনেমার অপ্রতিদ্বন্দ্বী ড্যাশিং হিরো ওয়াসিম। ক্যারিয়ারে ১৫০টি সিনেমায় অভিনয় করেছেন। যার প্রায় সবগুলোই ব্যবসাসফল। কিন্তু এত সফলতার পরও একবুক কষ্ট নিয়ে পরপারে পারি জমিয়েছেন এই নন্দিত নায়ক। এমনটাই দাবি করেছেন তার একমাত্র ছেলে ফারদিন।

রাইজিংবিডির সঙ্গে আলাপকালে ফারদিন বলেন, ‘আমার বাবা এতগুলো ব্যবসাসফল সিনেমা উপহার দিয়েছেন। কিন্তু তাকে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার নাম থেকে বাদ দেওয়া হয়। ১৯৭৯ সালে এই ক্যাটাগরিতে কাউকেই পুরস্কার দেওয়া হয়নি। বাবা এই পুরস্কারটা পেলে মনে শান্তি পেতেন। এই কষ্টটা নিয়ে বাবা চলে গেছেন। দর্শকদের মনে বাবা আজীবন থাকবেন। মানুষের কাছ থেকে অনেক ভালোবাসা পেয়েছেন। বাবাকে মানুষ এতটা সম্মান করতেন যে, তা বলে বুঝাতে পারব না। বাবার জন্য সবাই দোয়া করবেন।’

অর্থ, যশ, খ্যাতি সবই পেয়েছেন ওয়াসিম। কিন্তু মৃত্যুর আগে ক্ষোভ প্রকাশ করেছিলেন। সেটি হলো-১৯৭৯ সালে জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার নাম বাদ দিয়ে অন্যান্য সবার নাম ঘোষণা করে পুরস্কার দেওয়া হয়। ওয়াসিমের কথায়- ‘ঈমান’ চলচ্চিত্রে অভিনয়ের জন্য তাকে শ্রেষ্ঠ অভিনেতার পুরস্কার দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু কু-চক্রী মহলের ষড়যন্ত্রে তাকে বাদ দেওয়া হয়।

চলচ্চিত্রের সোনালি দিনের চিত্রনায়ক ওয়াসিম শনিবার (১৭ এপ্রিল) দিবাগত রাত সাড়ে ১২টায় মারা যান। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে চলচ্চিত্রাঙ্গনে। বেশ কিছুদিন ধরে বাসায় শয্যাশয়ী ছিলেন ওয়াসিম। ব্রেন, নার্ভ ও হার্টের সমস্যায় ভুগছিলেন তিনি। রোববার (১৮ এপ্রিল) বাদ জোহর গুলশানের আজাদ মসজিদে জানাজা শেষে বনানী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হয়েছে।

দর্শকনন্দিত এই অভিনেতার নামেই ’৭০ আর ৮০’র দশকে সিনেমা হলে উপচে পড়ত দর্শক। ‘দি রেইন’, ‘ডাকু মনসুর’, ‘জিঘাংসা’, ‘কে আসল কে নকল’, ‘বাহাদুর’, ‘দোস্ত দুশমন’, ‘মানসী’, ‘দুই রাজকুমার’, ‘সওদাগর’, ‘নরম গরম’, ‘ঈমান’, ‘রাতের পর দিন’, ‘আসামি হাজির’, ‘মিস লোলিতা’, ‘রাজ দুলারী’, ‘চন্দন দ্বীপের রাজকন্যা’, ‘লুটেরা’, ‘লাল মেম সাহেব’, ‘বেদ্বীন’, ‘জীবন সাথী’, ‘রাজনন্দিনী’, ‘রাজমহল’, ‘বিনি সুতার মালা’, ‘বানজারান’, ‘মিস লোলিতা’সহ প্রায় দেড় শতাধিক সুপার হিট সিনেমার নায়ক এই কিংবদন্তি অভিনেতা।

ওয়াসিম চলচ্চিত্র প্রযোজনায়ও নাম লেখিয়েছিলেন। তার প্রযোজনা প্রতিষ্ঠানের নাম ছিল ডব্লিউ আর প্রোডাকশন। তার প্রযোজিত চলচ্চিত্রের মধ্যে রয়েছে ‘হিসাব চাই’, ‘মোহন বাঁশি’, ‘নয়া তুফান’, ‘সীমাবদ্ধ’ ইত্যাদি। যদিও প্রযোজক হিসেবে ওয়াসিম খুব সফল হতে পারেননি