বিনোদন

বিদায় ফকির আলমগীর

কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ফুলেল শ্রদ্ধায় চিরবিদায় জানানো হলো একাত্তরের কণ্ঠযোদ্ধা, গণসংগীত শিল্পী ফকির আলমগীরকে।

শনিবার (২৪ জুলাই) দুপুর ১২টায় ফকির আলমগীরের মরদেহ আনা হয় কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে। সেখানে সর্বসাধারণের পক্ষ থেকে শ্রদ্ধা নিবেদন করা হয়। বৃষ্টিকে উপেক্ষা করে মন্ত্রী, এমপি, শিক্ষক, সাংবাদিক ও সাংস্কৃতিক কর্মীরা এসময় তাকে শেষবারের মতো শ্রদ্ধা জানাতে উপস্থিত হন। 

এসময় তথ্য ও সম্প্রচারমন্ত্রী হাছান মাহমুদ বলেন, ‘দেশ একজন অসাধারণ মানুষকে হারালো। ফকির আলমগীর ছিলেন একজন মুক্তিযোদ্ধা, ৬৯ এর গণঅভ্যুত্থানের সক্রিয় সৈনিক, স্বাধীন বাংলা বেতার কেন্দ্রের শব্দসৈনিক। তিনি ছিলেন গণমানুষের শিল্পী। তার মৃত্যু জাতির জন্য বিরাট ক্ষতি।’

ফকির আলমগীরের হাজারও গান সংরক্ষণ করার দাবি জানান তার স্ত্রী। তিনি বলেন, ‘জীবদ্দশায় ফকির আলমগীরের খুব আক্ষেপ ছিল, স্বাধীনতা পদক না পাওয়াতে। তিনি প্রধানমন্ত্রীর কাছে বিনীত অনুরোধ জানান, মরণোত্তর হলেও ফকির আলমগীরকে যেন স্বাধীনতা পদক দেওয়া হয়। এতে তার অতৃপ্ত আত্মা শান্তি পাবে।’

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আখতারুজ্জামান এই শিল্পীকে স্মরণ করতে গিয়ে বলেন, ‘ফকির আলমগীর ছিলেন বাংলাদেশের এক রত্ন। জাতি আজ সেই রত্নকে হারালো। মহান মুক্তিযুদ্ধ থেকে রাজপথের গণসংগীতসহ সব ক্ষেত্রে তিনি ছিলেন অগ্রসেনা। তার অবদানের কথা জাতি কৃতজ্ঞচিত্তে স্মরণ করবে।’

এসময় অভিনেতা ঝুনা চৌধুরী বলেন, ‘আমরা একজন সহযোদ্ধা, বড় ভাইকে হারালাম।’ তিনি মহান আল্লাহর কাছে তার আত্মার চিরশান্তি কামনা করেন। 

বাংলাদেশ পথনাটক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক গিয়াস আহমেদ বলেন, ‘ফকির আলমগীর ছিলেন আমাদের সহযোদ্ধা, বড় ভাই। সাংস্কৃতিক আন্দোলনে তিনি ছিলেন সবার আগে। এমন অসাধারণ মানুষ, অভিভাবক আমরা আর পাবো না। তার আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি।’ 

ফকির আলমগীরের ছেলে মাশুক আলমগীর রাজীব তার বাবার জন্য সবার কাছে দোয়া চান। জোহরের নামাজের পর খিলগাঁও তালতলাতে তার বাবাকে দাফন করা হবে। 

গতকাল ২৩ জুলাই রাত ১০টা ৫৬ মিনিটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ফকির আলমগীর রাজধানীর ইউনাইটেড হাসপাতালে লাইফ সাপোর্টে থাকাবস্থায় মারা যান। তার বয়স হয়েছিল ৭১ বছর। উল্লেখ্য, ফকির আলমগীর করোনায় আক্রান্ত হয়ে হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। পরে তার শারীরিক অবস্থার অবনতি ঘটলে তাকে প্রথমে আইসিইউতে এবং পরে লাইফ সাপোর্টে নেওয়া হয়।